‘আগে নাও বাইতাম, অখন সৌদি যাইতাম’

70

DSC_0880সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
‘আগে নাও দৌড়াইতাম,অখন সৌদি যাইতাম…’। বেশ খুশমেজাজেই বলছিলেন তাহির আলী। নগরীর সুরমা মার্কেটের সামনে রাস্তায় টেবিল বসিয়ে সৌদি নিবন্ধন ফরম বিক্রি ও পূরণ করা হচ্ছে। এখানে ফরম হাতে লাইনে দাঁিড়য়েছেন যুবক মাঝি তাহির। তিনি কানাইঘাটের গাছবাড়ি এলাকার। নৌকা চালিয়ে সংসার চলে না। তাই তিনি সরকারি ভাবে সৌদি যাওয়ার ভাগ্য পরীক্ষায় নেমেছেন।
তাহির আলীর মতো গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সৌদি যাওয়ার জন্য সিলেট শহরে ভিড় করছেন শত শত মানুষ। তাদের সেবায় সুরমা মার্কেটের সীলমোহরের অনেক ব্যবসায়ী, ফটোমেশিনের অনেক দোকানি মৌসুমি ব্যবসা শুরু করেছেন। তারা রাস্তার ওপর টেবিল বসিয়ে একটা ফটোকপি গ্রাম থেকে আসা এই সব সৌদি পাগলপাড়া মানুষজনের কাছে এক শ’ টাকায় বিক্রি করছেন। আর অশিক্ষিত মানুষকে লিখে দিয়ে নিচ্ছেন ৪০ টাকা। এদিকে, ব্যাংক ড্রাফট সংগ্রহ করার জন্য নগরীর জিন্দাবাজার সোনালী ব্যাংক ও সিসিক সোনালী ব্যাংক শাখার সামনে সৌদি যেতে আগ্রহী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। শৃঙ্খলার রক্ষা করতে পুলিশ মাঝে মাঝেই লাঠিচার্জ করছে। তবু সৌদি যাওয়ার জন্য মার খেয়েও আবার লাইনে ফিরছেন এসব মানুষ। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই নিবন্ধন ফরম সংগ্রহ ও ব্যাংক ড্রাফট কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই সৌদি গমনেচ্ছুকরা ভীড় জমান সোনালী ব্যাংকের শাখাগুলোতে। এই ভীড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যাংক কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে জিন্দাবাজারস্থ সোনালী ব্যাংক শাখায় সৌদি গমনে আগ্রহীদের লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
বালাগঞ্জ থানার দেওয়ান বাজারের বদরুল ইসলাম বলেন, আইএ তে পড়ছিলাম। দেশে অভাব চলছে। মা-বাপরে হেল্প করার লাগি সৌদিত যাইতাম চাইরাম। তাই পুলিশের লাঠির গুঁতা খাইয়াও মুই লাইনে আছি।’
সুরমা মার্কেটের স্মৃতি ফটো স্টুডিও ব্যবসায়ী টিপু। হরতালের কারণে ব্যবসাপতি নাই। তাই তিনি সৌদি গমন ইচ্ছুকদের সেবার জন্য টেবিল নিয়ে রাস্তার উপর বসেছেন। তিনি বলেন, লেইক্কা দিয়া সহ ১৪০ টাকা করি নিরাম।’
জনশক্তি রপ্তানি সিলেট অফিস সূত্র জানায়, মদিনা মার্কেটের অফিসে মানুষজন আবেদন ফরম জমা দিচ্ছেন। লাইনে দাঁড় করিয়ে তাদের আবেদন জমা নেওয়া হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, সিলেট থেকে অন্তত ৩ লাখ আবেদন জমা পড়বে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, সৌদি যাওয়ার জন্য বিভিন অঞ্চল থেকে সিলেট শহরে মানুষজন এসেছেন। যে যেখানে পারছে ভিড় করছে। মাঝে মধ্যে শৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্য হালকা লাঠিচার্জ করা হচ্ছে। তবে,তাদের আগ্রহকে আমরা সম্মান করি।’