ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ

4

স্টাফ রিপোর্টার  :
ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার আসামি পক্ষের সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ধার্য্য তারিখে সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লবের আদালতে সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার ৮ ফেব্রুয়ারি ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার আসামি পক্ষের সাফাই সাক্ষীর তারিখ তারিখ ছিল। সেদিন শুনানি না করে গতকাল মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানির আদেশ দেন বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব।
এরমধ্যে দিয়ে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের মানিত ২৯ জনের সাক্ষী ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আসামিপক্ষ সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন করার জন্যে পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. নজরুল ইসলাম, ইব্রাহীম মিয়া, দেলোয়ার হোসেনের হাজিরা প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানায়, গতকাল বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব ৩ জনের সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত হয়। আগামী ১ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্যে দিনক্ষণ ধার্য করবেন।
গতকাল আদালতে বাদীপক্ষে ছিলেন এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম ও এডভোকেট মোহাম্মদ মনির উদ্দিন। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনায় অংশ নেন এডভোকেট আব্দুল আহাদ ও এডভোকেট ইমরান আহমদ।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১২ মে নগরীর সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকায় নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত বিজয় দাশ (৩২)। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামের বিজ্ঞান বিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। হত্যাকান্ডের পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় অজ্ঞাতনামা ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, মামলাটি পুলিশ থেকে অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তরিত হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন। এতে সন্দেহভাজন আটক ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হচ্ছেন, কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪), কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) ও নগরীর রিকাবীবাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০)।
আসামিদের মধ্যে ফারাবী ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে মান্নান রাহী আদালতে অনন্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর মান্নান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আসামিদের মধ্যে আবুল হোসেন, ফয়সাল আহমদ ও মামুনুর রশীদ পলাতক।