খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সারা জীবন মানুষের কাছে খুনি হিসেবে চিহ্নিত থাকবেন -প্রধানমন্ত্রী

35

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সহিংস রাজনীতির জন্য খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান সারাজীবন মানুষের কাছে খুনি হিসেবে m1_302997228চিহ্নিত থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) বগুড়া আলতাফুন্নেসা খেলার মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের যে পুত্রবধূ আছে তাকে বলবেন- উনি যেন আর কখনো মানুষ না পোড়ায়, মানুষ পুড়িয়ে যেন না মারে।
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও চলতি বছরের শুরুতে টানা তিন মাসের সহিংসতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন ঠেকানোর নামে ও চলতি বছরের শুরুতে সরকার উৎখাতে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যার মতো জঘন্য, ঘৃণ্য কাজ তিনি করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। একজন রাজনৈতিক নেতা তার সিদ্ধান্তে ভুল করলে তার খেসারত তার দল দেবে। সাধারণ মানুষকে কেন হত্যা করা হবে।
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের বাড়িতে আগুন দেয়া সহ বগুড়ার বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর হামলার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভাবে তারা সারা বাংলাদেশে আক্রমণ করেছে। ঠিক বগুড়ায় তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।
এ সময় নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি জোটের কর্মসূচির নানা ধ্বংসাত্মক দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। একজন নেতা যদি তার সিদ্ধান্তে ভুল করে, তবে সেই ভুলের খেসারত তার দলের লোকজনদের দিতে হয়। খালেদা জিয়া নির্বাচনে না এসে ভুল করেছেন, ৫১ জন মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে সারা জীবনের জন্য তিনি ও তার পুত্র এদেশের মানুষের কাছে একজন খুনি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছেন।
বিদেশে থাকা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে থাকতে দেশের মানুষ মেরেছে। এখন উনি বিদেশে গেছেন। বিদেশে গেছেন কেন?’ওনার ছেলে মুছলেকা দিয়েছিলো কেয়ারটেকার সরকারের কাছে, সে আর রাজনীতি করবে না। সে মুছলেকা দিয়ে এদেশ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে উনি বিদেশে বসে আছে। সেখানে বসে খালেদা জিয়া আর তার পুত্র পরিকল্পিতভাবে বিদেশি মানুষ হত্যা করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চান।
ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হতে দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ মানুষ শান্তিতে আছে। কিন্তু মানুষের সেই শান্তি কখনো সহ্য হয় না বিএনপি নেত্রীর।
জনসভার শুরুতে ৩৪টি উন্নয়ন কাজের উদ্ধোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
এসব উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরে বগুড়াবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের জন্য কিছু উপহার নিয়ে এসেছি।’
এ সময় তিনি বলেন, বগুড়ায় আমরা আসন কম পেলেও কখনো অবহেলা করিনি। সারা বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন যেন হয় আমরা সে পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করেছি। বগুড়ার উন্নয়ন পুরো বাংলাদেশের উন্নয়ন। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা আলাদাভাবে কিছু দেখি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শহরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। আমি একটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেজেট প্রকাশ করেছিলাম। দুর্ভাগ্য এই বিএনপি ক্ষমতায় এসে তা বাতিল করে দেয়। ইনশাআল্লাহ আমরা এই বগুড়ায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে দেব।
বগুড়া হয়ে রংপুর পর্যন্ত যাতে রেললাইন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।
জনগণের উন্নয়নে সরকারের আন্তরিকতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকার মানুষ মানুষকে কখনো বঞ্চিত করে না। নৌকার মানুষ মানুষকে দেয়, দিতে আসে। এই নৌকার ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। যখনই নৌকা ভোট পেয়ে সরকার গঠন করে তখনই সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যা কিছু পেয়েছেন সব আওয়ামী লীগের কারণে পেয়েছেন। আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে, দিয়েই যায়।
ছেলে-মেয়েদের মন দিয়ে লেখাপড়া করার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস থেকে দূরে থেকে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
স্থানীয় লোকজন বলছেন এবার আওয়ামী লীগের জনসভায় অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি মানুষ জড়ো হয়েছে।
জনসভায় আগত বহু মানুষ সভাস্থলে স্থান না পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি দেখতে পাননি। তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি অনেক মানুষ বহু দূর থেকে কষ্ট করে এসেছেন কিন্তু আমাকে দেখতে পাচ্ছেন না। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে পারি- হয়তো চোখের দেখা হচ্ছে না কিন্তু আমাদের মনের দেখা হয়েছে।