জমে উঠেছে নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন, ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা

15

তোফাজ্জল হোসেন নবীগঞ্জ থেকে :
জমে উঠেছে নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। প্রচার- প্রচারণায় মুখর জনপদ। সর্বত্রই আলোচনা কে হচ্ছেন পৌর মেয়র? সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে মেয়র প্রার্থী নিয়ে। কার গলায় উঠবে বিজয়ের মালা? এখন অপেক্ষার পালা। জনতার রায়ে আসবে সমাধান। অপেক্ষা মৃত্যুর চেয়ে ভয়ঙ্কর। মেয়র প্রার্থীর ফলাফল নিয়ে উৎসুক ভোটাররা। আগামী ১৬ জানুয়ারি নবীগঞ্জ পৌর নির্বাচন ঘিরে সর গরম হয়ে উঠেছে পৌরসভার জনপদ। চারিদিকে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। বিশেষ করে দলীয় প্রতীক নির্বাচনকে নিয়ে চায়ের কাপে উঠে গেছে ভোটের ঝড়। পৌর এলাকার সর্বত্র একটাই আলোচনা কে হচ্ছেন নবীগঞ্জের পৌর পিতা। এবার নবীগঞ্জে মেয়র পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিএনপির মনোনিত প্রার্থী পৌরসভার বর্তমান মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী (ধানের শীষ) আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী তরুণ সমাজসেবক উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম রসূল চৌধুরী রাহেল (নৌকা ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শ্রমিক নেতা মাহবুবুল আলম সুমন (জগ) নিয়ে মাঠে নেমেছেন। আসলে ভোটের লড়াই শুরু হয়েছে নবীগঞ্জ পৌরসভার তফসিল ঘোষণার অনেক আগে থেকেই। পৌর এলাকার চায়ের দোকানে নতুন চায়ের-টেবিল বা কাপ-পিরিচ এসেছে। কিছুটা ভাঙ্গাচোরা যে দোকানগুলো, সেগুলোও সরানো হয়েছে, নতুন বয়-বেয়ারা নিয়োগ হয়েছে। আড্ডা চলছে, চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বাগবিতন্ডা যে চলছেনা তাও নয়। মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই বাছাই শেষে, অত:পর এবার প্রতীক বরাদ্দের পর তা আরো ব্যাপক মাত্রা পেয়েছে। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত নবীগঞ্জ পৌরসভা। পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৬শ ৯৯ জন। এবার মেয়র পদে লড়ছেন ৩ জন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর পদে ৯ জন, সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সির পদে ৪১ জন প্রার্থী। তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে গত কয়েকদিন ধরে পুরো দমে জমে উঠেছে পৌর নির্বাচনের আমেজ। ভোটারদের কাছে বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বলে মন জয় করার চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনী মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দের পরপরই প্রচারনায় নেমে পড়েছেন এবং পৌর এলাকার উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে তীব্র শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ, উঠান বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের দিচ্ছেন ডজন ডজন প্রতিশ্রুতি। এদিকে, বিএনপির প্রার্থী বর্তমান মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী বলেন, আমি বিগত ৫ বছরের নগরের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি এবং অসংখ্য কাজ প্রস্তাবিত আছে রয়েছে অসমাপ্ত উন্নয়ন ও পৌর নগরকে আধুনিক নগরে সাজানোর অঙ্গীকার নিয়ে আরো আগে থেকেই মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি বলেন- উন্নয়নই পৌরসভার পরির্বতন ঘটাবে, নবীগঞ্জের মানুষ উন্নয়ন কাজে বিশ্বাসী। তিনি বলেন- দেশের করোনাকালীন সময়ে আমি এলাকার লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোজ খবর নিয়েছি পাশে থাকার চেষ্টা করেছি নবীগঞ্জে পৌরসভার মানুষ এলাকার উন্নয়ন চায় আর সেই উন্নয়নের সাথে সত ও নিষ্ঠাবান যোগ্য পৌর মেয়র চান। তাই তিনিও জয়ের ব্যাপারে তিনি শত ভাগ আশাবাদী। ছাবির আহমদ চৌধুরী পৌরসভার বিভিন্ন একালার সমস্যার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার মেয়াদকালে অসমাপ্ত উন্নয়ন সমাপ্ত করার লক্ষ্যে তাকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে পুনরায় দ্বিতীয় বারের নির্বাচিত করলে এসব সমস্যার সমাধানও উন্নয়ন করবেন মর্মে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন। ছাবির আহমেদ চৌধুরী নবীগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি পৌরসভার সাবেক ৩ বারের প্যানেল মেয়র ছিলেন। আবারও পৌর নির্বাচনে তাকে বিএনপি থেকে মনোনিত করা হয়েছে।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তরুণ সমাজসেবক ক্রীড়া সংগঠক গোলাম রসূল রাহেল চৌধুরী নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। রাহেল চৌধুরী দুর্যোগ কালীন সময়ে নিজস্ব তহবিল থেকে সাহায্য ত্রাণ বিতরণ, শীতকালীন সময়ে অসহায় লোকদের মাঝে কম্বল বিতরণ অসহায় দরিদ্র লোকদের নিজস্ব অর্থ দিয়ে চিকিৎসা সেবা, বিবাহ দেওয়া ঘর নির্মাণ করার মত নজির দেখিয়ে এলাকায় তরুণ সমাজসেবক খেতাব অর্জন করেছেন। তাছাড়া তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মাণসহ সামাজকি সাংস্কৃতিক কাজে অর্থ প্রদান করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপির জামাতা তিনি। নবীগঞ্জ পৌরসভাকে একটি আধুনিক পৌরসভা গঠন করার লক্ষ্যে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছেন। গোলাম রসূল চৌধুরী রাহেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর মনোনিত মেয়র প্রার্থী। তিনি বলেন- স্বাধীনতার পরে শক্তি নৌকা মার্কা, জাতির জনক শেখ মুজিবুরের নৌকা মার্কা। আর এই নৌকা মার্কা নিয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি পৌর নির্বাচনে ভোট যুদ্ধে নৌকার বিজয় সু-নিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ। জয়ের ব্যাপারে তিনি শত ভাগ আশাবাদী। অপর দিকে, স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে মাঠে শক্ত অবস্থান নিয়ে রয়েছেন মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম সুমন। সুশীল সমাজে স্পষ্টবাসী নিষ্ঠাবান এবং নির্যাতিত লোকের অভিভাবক হিসাবে তার অনেক খ্যাতি রয়েছে। মাহবুবুল আলম সুমন বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। ইনশাআল্লাহ আমি পরিবর্তন আনবো। নবীগঞ্জ পৌরসভার নবীন প্রবীণ ভেটারের ধারণা এবারের নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই হবে।