বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে অজগর দম্পতি ৩২টি ডিম দিয়েছে

16
শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী ফাউন্ডেশনে অজগর সাপের দেয়া ডিম।

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ বন্য প্রাণী ফাউন্ডেশনে স্থায়ী অজগর দম্পতি খাঁচায় ৩২টি ডিম দিয়েছে।
শনিবার রাতে খাঁচার ভেতরে স্ত্রী অজগরটি ডিম পেড়েছে। এর আগে অজগরটি আরও তিনবার ডিম পেড়েছিল। ডিমে তা দিয়ে বাচ্চাও ফুটিয়েছিল।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার দিনারপুর পাহাড়ের একটি লেবুর বাগান থেকে উদ্ধার করা এই অজগর জুটি ১৯৯৯ সাল থেকে বন্য প্রাণী সেবাশ্রমের প্রতিষ্ঠতা সিতেশ রঞ্জন দেবের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
রবিবার বিকেলে সদর ইউনিয়নের রূপসপুর গ্রামে বন্য প্রাণী সেবাশ্রমে অজগরের খাঁচায় গিয়ে দেখা গেছে, স্ত্রী অজগরটি শরীর দিয়ে বৃত্তাকারে কুল পাকিয়ে ডিমগুলো ঢেকে রেখেছে। ডিমের ওপরে মাথা রেখে ডিমে তা দিচ্ছে। শরীরের ফাঁক দিয়ে একটি ডিমের প্রায় পুরোটাই দেখা যাচ্ছে। অজগরটি মাঝেমধ্যে একটু নড়াচড়া করলে আরও দুটি ডিমের খানিকটা দেখা যাচ্ছে। ডিমগুলোর রং সাদা। রাজহাঁসের ডিমের মতো এর আকৃতি। খাঁচার ভেতরে সঙ্গি পুরুষ অজগরটি পাশে থেকে সতর্ক পাহারা দিচ্ছে।
সেবা ফাউন্ডেশনের পরিটচালক সজল দেব ও সঞ্জিত দেব জানান, শনিবার রাত থেকে অজগরটি ডিম দেওয়া শুরু করে। খুব কাছ থেকে তারা দেখেছেন। ডিম পাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অজগরটি নিজেকে বৃত্তাকারে গুটিয়ে নিচ্ছিল। পুরুষ অজগরটি এ সময় বেশ চঞ্চল হয়ে উঠেছিল। সে খাঁচার ভেতরে চারদিকে চক্কর দিচ্ছিল। এক সময় স্ত্রী অজগরটি তার শরীর দিয়ে সবগুলো ডিম ঢেকে নেয়।’
সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব জানান, সেবাশ্রমে ওই অজগরটি প্রথম ২০০২ সালের মে মাসে ৩২টি ডিম পেড়েছিল। ডিম পাড়ার ৬০ দিন পর ২৮টি বাচ্চা ফুটেছিল। এরপর ২০০৪ সালের ১৩ মে ৩৮টি ডিম দেয়। সেবার ৬০ দিন পর বাচ্চা ফুটেছিল ৩২টি। অজগরের বংশবৃদ্ধির জন্য এই অজগর জুটিকে প্রায় দুইযুগ ধরে লালন করছেন।
আগের তিনবারে এ জুটির ৬০টি বাচ্চা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়েছে। এবার ডিমের সংখ্যা ৩২টি। বনে-জঙ্গলে থাকলে অজগর সাধারণত মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে ৫০-১০০টি ডিম দেয়।’