শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন ॥ সিলেটের ১৯ আসনের ১৬টিতেই আওয়ামীলীগের জয়জয়কার, ২টিতে ঐক্যফ্রন্ট ও একটিতে জাতীয় পার্টি বিজয়ী

90
সিলেটের ১৯টি আসনে নির্বাচিতরা।

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
সিলেট বিভাগে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে সিলেটের ১৯টি আসনের মধ্যে ১৬টিতেই আওয়ামীলীগ, ২টিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও একটিতে আওয়ামীলীগের শরিক জাতীয় পার্টি বিজয়ী হয়েছে।
গতকাল রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারা দেশের মতো সিলেটেও এ ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
সিলেট জেলার ৬টি আসনে মোট ভোটার ছিল ২২ লাখ ৫২ হাজার ২৯৪ জন। এরমধ্যে ১১ লাখ ৫১ হাজার ৬৪৪ জন পুরুষ এবং ১১ লাখ ৬৫০ জন নারী ভোটার। আর ১০ম সংসদ নির্বাচনে ৬টি আসনের ভোটার ছিল ১৯ লাখ ৬৬ হাজার ৫১৩ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ছিল ৯ লাখ ৯৪ হাজার ৫৯০ জন এবং নারী ভোটার ছিলো ৯ লাখ ৭১ হাজার ৯২৩ জন। ১০ম সংসদ নির্বাচনের চাইতে এবার পুরুষ ভোটার বেড়েছে এক লাখ ৮ হাজার ৭১ জন এবং নারী ভোটার বেড়েছে এক লাখ ৩০ হাজার ২৫৫ জন।
৬ আসনে বিজয়ী প্রার্থীরা হচ্ছেন :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ (মহানগর ও সদর) আসনের সকল কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুক্তাদিরের চেয়ে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৩ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে অর্থমন্ত্রীর অনুজ ড. এ কে আব্দুল মোমেন বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসনে ২১৫ টি কেন্দ্রের সবগুলো কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে নৌকা মার্কা নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মোট ভোট পেয়েছেন ৩ লাখ ১ হাজার ২টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ধানের শীষ প্রতিকে নিয়ে মোট পেয়েছেন ১ লাখ ২১ হাজার ১১৯টি ভোট। যা মোমেনের প্রাপ্ত ভোটের অর্ধেকের চেয়েও কম। সিলেট-১ আসনে মনে করা হয়েছিলো খন্দকার মুক্তাদির এবং ড. মোমেনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে ভোটের মাঠে বাজিমাৎ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের ভাই ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শেষপর্যন্ত ধানের শীষের প্রার্থী খন্দকার মুক্তাদিরকে হারিয়ে মোমেনই বিজয়ী হলেন। এ আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৪৪ হাজার ২১৯ জন ছিলেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৮৬ হাজার ২ শত ৬৯ জন পুরুষ এবং ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫ শত ৭৫ জন নারী ভোটার ছিলেন।
এদিকে, বাসার সামনেই তাঁর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনেই বিজয় উল্লাস করেছে দলের নেতাকর্মীরা। গতকাল রবিবার রাতে চূড়ান্ত ফলাফলের পর মোমেনের ধোপাদীঘিরপারস্থ হাফিজ কমপ্লেক্সে বাসায় তার এ বিজয়ের উল্লাস করে তারা। দলে দলে নেতাকর্মীরা মোমেনের বাসা ও নির্বাচনী কার্যালয়ে জড়ো হন। জড়ো হয়ে তারা শ্লোগান দিয়ে মিছিল করেন। এরপর রাতে নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ড. মোমেন। এ সময় তিনি উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন এবং সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনের সবকটি কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে ৩৮,৯৬৪ ভোটের ব্যবধানে বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মুকাব্বির খান। এ আসনে ১২৭টি কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে মুকাব্বির খান পেয়েছেন ৬৯,৪১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র ডাব প্রতীকের মুহিবুর রহমান পেয়েছেন ৩০,৪৪৯ ভোট। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী সিংহ প্রতীকের এনামুল হক সর্দার ২০,৭৪৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন। এই আসনের বর্তমান সাংসদ মহাজোটের লাঙল প্রতীকের এ এম ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া ১৮,০৩৮ ভোট পেয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছেন। এ আসনের মোট ভোটার ২ লাখ ৮৬ হাজার ৪০৩ জন ছিলো।
সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) আসনে দলীয় কোন্দলে চাপে থাকলেও নির্বাচনের ফলাফলে বড় ব্যবধানেই জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে এই আসনের ১৪৮টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে কয়েস পেয়েছেন ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫০৭ ভোট। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৮৬৫ ভোট। ফলে প্রায় ৯৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করেছেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস চৌধুরী। এ আসনে মোট ভোটার ছিলো ৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৯৬ জন।
সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট-কোম্পানীগঞ্জ) আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইমরান আহমদ। এ আসনের সবগুলো কেন্দ্রের প্রাপ্ত ভোটের ফলাফলে ১ লাখ ৩১ হাজার ২৬৪টি ভোট বেশী পেয়ে জয়লাভ করেছেন তিনি। এ আসনের প্রাপ্ত ফলাফলে ইমরান আহমদ নৌকা প্রতীকের প্রাপ্ত ভোট ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৭৭টি ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী দিলদার হোসেন সেলিম ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৭৩টি ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ছিলো ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪১২ জন।
সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজ আহমদ মজুমদার। এ আসনের মোট ১৫৮ কেন্দ্রের প্রাপ্ত ভোটের ফলাফলে ৬৮ হাজার ২৩১ ভোটে জয়লাভ করেছেন তিনি। প্রাপ্ত ফলাফলে নৌকার প্রার্থী হাফিজ আহমদ মজুমদার পেয়েছেন ২ লাখ ৭ হাজার ১৯১টি ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী উবায়দুল্লাহ ফারুক ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৯৬০টি ভোট।
এ আসনে মোট ভোটার ছিলো ৩ লাখ ২৪ হাজার ২৫০ জন।
সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনের ১৮৯টি কেন্দ্র মিলিয়ে প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে জয় নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রাপ্ত ফলাফলে নুরুল ইসলাম নাহিদ পেয়েছেন ২ লাখ ৬ হাজার ৩১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের ফয়সল আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ৩শ’ ৮৯ ভোট। যদিও গোলাপগঞ্জ উপজেলার এ আসনে আরও ২ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা এখনো বাকী। ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৯৭ জন।
এদিকে, আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদে জানা গেছে :
মৌলভীবাজার-১ : শাহাব উদ্দিনের হ্যাটট্রিক জয়-মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. শাহাব উদ্দিন ৭৭ হাজার ৮শ ৬৩ ভোটের ব্যবধানে হ্যাটট্রিক জয় লাভ করেছেন। গতকাল রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আওয়ামী লীগ প্রাথী মো. শাহাব উদ্দিন নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রাথী নাসির উদ্দিন মিঠু ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮১৪ ভোট। এর আগে তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের সাংসদ নির্বাচিত হন।
মৌলভীবাজার-২: সিলেট বিভাগ তথা সারাদেশজুড়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জয়জয়কারের মধ্যেও জয়লাভ করেছেন মৌলভীবাজার-২ আসনের ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুলতান মুহাম্মদ মনসুর আহমদ। ২ হাজার ৫৭২ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন তিনি।
এই আসনের মোট ৯৩ কেন্দ্রের মধ্যে সুলতান মনসুর ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৭৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকে বিকল্পধারার প্রার্থী এমএম শাহীন পেয়েছেন ৭৭ হাজার ১৭০ ভোট।
মৌলভীবাজার-৩ : মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসনে ৭৯ হাজার ৯শ ৮৭ ভোটের ব্যবধানে প্রথমবারের মতো জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নেসার আহমদ।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। স্থানীয় সূত্রে ১৬৮টি কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী নেসার আহমদ পেয়েছেন ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫শ ৭৯ ভোট। অপরদিকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী নাসের রহমান পেয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৫শ ৯২ ভোট।
মৌলভীবাজার-৪: টানা ৬ষ্ঠ বারের মতো আবারো নির্বাচিত হয়েছেন মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জ) সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. আব্দুস শহীদ। তার মোট প্রাপ্ত ভোট ২ লক্ষ ১১হাজার ৬১৩টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী মুজিবুর রহমান ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯৩ হাজার ২৯৫টি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস শহীদ মোট ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৩১৮ ভোটের ব্যবধানে বেসরকারী ভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৮০টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে ড. আব্দুস শহীদ মোট ভোট পেয়েছেন ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৩৫০ টি, ধানের শীষ প্রতীকে মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী ৪৯ হাজার ৫০৯ ভোট, হাতপাখা প্রতীকে মো. সালাউদ্দিন ৭শ’ ১৭ ভোট এবং উদীয়মান সূর্য প্রতীকে শান্তিপদ ঘোষ ৮৬ ভোট।
কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কমলগঞ্জ উপজেলার ৭২টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে মো. আব্দুস শহীদ মোট ভোট পেয়েছেন ৯৭ হাজার ২৬৩ টি, ধানের শীষ প্রতীকে মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী ৪৩ হাজার ৭৮৬ ভোট, হাতপাখা প্রতীকে মো. সালাউদ্দিন ৬শ’০৮ ভোট এবং উদীয়মান সূর্য প্রতীকে শান্তিপদ ঘোষ ৬১ ভোট।
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) : আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ড. রেজা কিবরিয়াকে দেড় লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী শাহ্ নেওয়াজ গাজী (মিলাদ গাজী)।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ নেওয়াজ গাজী (মিলাদ গাজী) পেয়েছেন ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৩শ ৮৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় ঐক্যফন্টের প্রার্থী সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া পেয়েছেন ৮৫ হাজার ১শ ৯৭ ভোট। আসনটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯শ’ ৩৯ জন। মোট কেন্দ্র ছিলো ১৭৬টি।
হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) : আসনে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৯শ’ ৮৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় ঐক্যফন্টের প্রার্থী খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ পেয়েছেন ৬০ হাজার ৫২ ভোট। আসনটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬ হাজার ৯শ ৭৮ জন। মোট কেন্দ্র ছিলো ১৪৯টি।
হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) : আসনে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮শ’ ৭৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি এডভোকেট আবু জাহির। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় ঐক্যফন্টের প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছ পেয়েছেন ৬৮ হাজার ৭৮ ভোট। আসনটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৬ হাজার ৩শ’ ৬৩ জন। মোট কেন্দ্র ছিলো ১৩১টি। এবার ৩য় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হলেন তিনি। রাত ১০টার দিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদ আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।
হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) : আসনে ৩ লাখ ৬ হাজার ৯শ ৫৩ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট মাহবুব আলী। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় ঐক্যফন্টের প্রার্থী খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদির পেয়েছেন ৪৫ হাজার ১শ’ ৫১ ভোট।
এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লক্ষ ২৭ হাজার ২শ ৮৪ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ছিলো ১৭৭টি। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। রবিবার রাত ১০টার দিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদ আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণার করার কথা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ-১: আসনে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন রতন নৌকা প্রতীকে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৯’শ ২৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন এবং ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী নজির হোসেন পেয়েছেন ৭২হাজার ৫শ ৩৭ ভোট।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) : আসনে ১ লক্ষ ২৪ হাজার ১৭ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্তা। তাঁর নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী নাছির উদ্দিন ধানের শীষ নিয়ে পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৫ শত ৮৭ ভোট।
এছাড়াও এই আসনে মাহমুদ হাসান চৌধুরী (বাংলাদেশ মুসলিম লীগ) হারিকেন প্রতীকে ৮৭ ভোট, আব্দুল হাই (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ) হাতপাখা প্রতীকে ৩৫৫ ভোট, গোলজার আহমেদ (গণতন্ত্রী পার্টি) কবুতর প্রতীকে ২০৮ ভোট, নিরঞ্জন দাস (কমিউনিস্ট পার্টি) কাস্তে প্রতীকে ৩৩৩ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে মোট ভোটার ২ লক্ষ ৫০ হাজার ৭ শত ২১ ভোট। কেন্দ্রের সংখ্যা ১১০ টি।
সুনামগঞ্জ-৩ : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৩ আসনে বিজয়ের হ্যাট্রিক করলেন মহাজোট প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। গতকাল রবিবার অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুরে নৌকা পেয়েছে ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৬ শত ৫১ ভোট। ধানের শীষ পেয়েছে ৫১ হাজার ৪৭ ভোট।
এম এ মান্নান ১ লক্ষ ২০ হাজার ৬০০ শত ৪ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারি ভাবে বিজয়ী হয়েছেন। এম এ মান্নানের বিজয়ে আনন্দে ভাসছে পুরো সুনামগঞ্জ-৩ আসনের আপামর জনতা আর বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসছে বিজয় মিছিল।
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) : আসনে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ২শত ৮৯ ভোট পেয়ে লাঙ্গল প্রতীকে বেসরকারি ভাবে বিজয়ী হয়েছেন মহাজোট প্রার্থী এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। তাঁর নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী এডভোকেট ফজলল হক আসপিয়া ধানের শীষ নিয়ে পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৭ শত ৪৯ ভোট।
এছাড়াও তানভীর আহমেদ তাসলিম (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ) হাতপাখা প্রতীকে ১৫২৯ ভোট, মোহাম্মদ দিলোয়ার (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি) আম প্রতীকে ৪৫৬ ভোট, মো. কামরুজ্জামান (স্বতন্ত্র) সিংহ প্রতীকে ৩৬৫ ভোট, মো.আজিজুল হক (বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস) রিকশা প্রতীকে ১৪১৬ ভোট ও আল হেলাল মো. ইকবাল মাহমুদ (বাংলাদেশ মুসলীম লীগ) হারিকেন প্রতীকে ১১৫ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে মোট ভোটার ২ লক্ষ ৮৯ হাজার ৩০ ভোট। কেন্দ্রের সংখ্যা ১০৭ টি।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) : আসনে বিশাল ব্যবধানে জয় লাভ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুহিবুর রহমান মানিক। ১ লাখ ৩০ হাজার ৬৩৪ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন তিনি। নৌকা প্রতীকে মানিক পেয়েছেন ২লক্ষ ২০হাজার ৪২৮টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র প্রার্থী মিজানুর রহমান চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে ৮৯হাজার ৬শত ৩৪ টি ভোট পেয়েছেন।