ছাতকে ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা

26

ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকের সর্বত্র এখন বোরো ধান কাটার ধুম পড়েছে। কৃষকরা এখন ক্ষেত থেকে পাকা ধান সংগ্রহ করতে ধান কাটা আর মাড়াই-ঝাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে চলতি মৌসুমে পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে গিয়ে শ্রমিক সংকটের কারণে অধিকাংশ কৃষককেই সীমাহিন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গত বোরো মৌসুমে অকাল বন্যায় ধান তুলতে না পারা আর এ মৌসেুমে ধানের ভাল ফলন হলেও শ্রমিক সংকটের কারনে পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে বিলম্ব হওয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে এখানকার কৃষক-কৃষাণীদের।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানাযায়, উপজেলার ১৩ইউনিয়ন ও এক পৌরসভার মধ্যে ছৈলা-আফজলাবাদ, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও, উত্তর খুরমা, দক্ষিণ খুরমা, কালারুকাসহ অনান্য ইউনিয়নের বিভিন্ন ধানের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার কৃষক এবং শ্রমিকরা মিলে বেশ প্রফুল্লিতভাবে মাটে ধান কাটছেন। কেউ কেউ মাড়াই-ঝাড়াই ও হাওর থেকে নিরাপদ স্থানে ধান আনার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কারও কারও ধান আধপাকা থাকায় এখনো কাটা শুরু হয়নি। এখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরকেও মাড়াই-ঝাড়াইসহ বিভিন্নকাজে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে। গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও ইউপির তকিপুর গ্রামের সানোয়ার হোসাইন বলেন, এ মৌসুমে আমি ৫বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। ধানে পোকামাকড়ে তেমন আক্রমণ না করায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এখানে মাঝে মধ্যে ঝড়-বৃষ্টি হলেও শিলা বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। আরেক কৃষক তকিপুর গ্রামের এম এ মতিন জানান, চলতি মৌসুমে আমি ৪বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। ইতোমধ্যে ২ বিঘা জমির ধান কাটাতে শুরু করেছি। বাকি ২ বিঘাতে পাকতে শুরু করেছে। তিনি আরো বলেন, গত বছর ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়ে আগাম বন্যার কারণে ১ বিঘা জমির ধানও তুলতে পারিনি। এ কারণে এ মৌসুমে ধান কাটতে গিয়ে মনে দেরি সইছে না। গত ক’দিন ধরে ধান কাটার শ্রমিক খোঁজে না পেয়ে তিনি একাই ২ বিঘা জমির ধান কাটছেন বলে জানান। অতিরিক্ত মজুরী দিয়েও ধান কাটার শ্রমিক মিলছে না। যাদের পাওয়া যাচ্ছে তারা অধিক পরিমাণে মজুরী চাইছে। এতে করে এখানের অনেকেই সঠিক সময়ে ধান ঘরে তুলতে পারছেন না। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম বদরুল হক জানান, চলতি বোরোর মৌসুমে উপজেলায় ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় ১৪হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে। এবারে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা ধান কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পুরো উপজেলার কৃষকরা আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।