স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমার খোজারখলায় ৮টি ঘরসহ জমি কিনেছিলেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার আমনিয়া গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল মতিন। তিনি প্রবাসে থাকায় তার ওই ঘরগুলোর মধ্যে ৬টিই দখল করে রেখেছেন তারই ভাই তিতু মিয়া ও তিতু মিয়ার পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে সেখানকার দুই শতক ভূমিও নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন। মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন প্রবাসী আব্দুল মতিনের নিযুক্ত আমমোক্তার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌর এলাকার আলালপুর গ্রামের লিটন আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি তিতু মিয়ার দখলবাজি ছাড়াও নানা অপকর্মের কথাও তুলে ধরেন; একই সাথে প্রবাসী মতিনের ভূমি ও বাসা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনাও করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিটন আহমদ বলেন, ‘১৯৮৯ সালে খোজারখলায় ১৪টি টিনসেডের ঘরসহ ৫৮ শতক ভূমি যৌথভাবে ক্রয় করেন প্রবাসী আব্দুল মতিন এবং আব্দুন নূর। ভাগবাটোয়ারা করে প্রবাসী মতিন ৮টি ঘরের মালিক হন। কিন্তু তিনি প্রবাসে থাকার সুযোগে তারই ভাই তিতু মিয়া, তিতু মিয়ার স্ত্রী তাহেরা আক্তার, তাদের ছেলে ফাহমিদুর রহমান, নাহিদুর রহমান ও জাহিদুর রহমান ওই বাসাগুলোর মধ্যে ৬টি বাসার দখল নিয়ে নেয়। একই সাথে তারা জালিয়াতির মাধ্যমে খরিদা সম্পতির দুই শতক ভূমিও নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে।’
তিনি বলেন, ‘ষাটোর্ধ্ব আব্দুল মতিন দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন। বর্তমানে তিতু মিয়া ও তার সন্তানদের হুমকিতে তিনি দেশে আসতে পারছেন না। অবৈধভাবে তারা আব্দুল মতিনের ঘরগুলো দখলে রেখে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে তিনি দেশে আসলে তারা তাকে খুন করে ফেলবে। যুক্তরাজ্যে অবস্থান করার কারণে তিনি যথাযথভাবে দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও নিতে পারছেন না। এ সুযোগে জালিয়াতচক্র তার কষ্টার্জিত জায়গা ও ঘরগুলো অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। বাসার ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করে তা আত্মসাত করছে।’
লিটন বলেন, প্রবাসী মতিন এর আগে তার বড় ভাই ডা. আব্দুল হককে আমমোক্তার নিযুক্ত করেছিলেন। তিনি ভাড়া তুলতে গেলে তিতু মিয়া ও তার স্ত্রী-সন্তানরা তাকে মারধর করে হুমকি-ধমকিও দেয়। পাশাপাশি তারা তার বাসার পানির সংযোগও কেটে দেয়। বর্তমানে তিতু মিয়া সেখানকার দুটি বাসা ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণও করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘আব্দুল মতিন প্রবাসে থেকেও এ ব্যাপারে আইনি সহযোগিতার জন্য গত ১১ অক্টোবর সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন। এছাড়াও তার জায়গায় ২টি ঘর ভেঙ্গে তিতু মিয়ার অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আর্জি জানিয়েছেন। একই সাথে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং মেট্রপলিট্রন পুলিশ কমিশনার বরাবরেও আবেদন করেছেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী গত ৮ অক্টোবর সিলেটের জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় জালিয়াতচক্র জোরপূর্বক ও অন্যায়ভাবে আব্দুল মতিনের খরিদা ভূমির উপর বহুতলা ভবন নির্মাণ কার্যক্রম চালিযে যাচ্ছে।’ প্রবাসী মতিনের ভূমি ও বাসা উদ্ধার এবং অবৈধভাবে চলা ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনাও করেছেন।