এইচএসসি পরীক্ষা সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭১.৬২, জিপিএ-৫ এ মেয়েরা এগিয়ে

30

স্টাফ রিপোর্টার

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সিলেট বোর্ডে কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।
এবার সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ৬২ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় পাসের হার কমেছে ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এবার মোট ৮৩ হাজার ৭৬৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৩ হাজার ১২৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৫৯ হাজার ৫৩৬ জন। এর মধ্যে ছেলে ২৩ হাজার ৯১৬ এবং মেয়ে ৩৫ হাজার ৬২০।
এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬৯৯ জন। এর মধ্যে ছেলে ৬১৯ এবং মেয়ে ৮৮০ জন। গত বছরের তুলনায় জিপিএ-৫ কমেছে ৩ হাজার ১৭২ জন। গত বছরে রেকর্ড সংখ্যক ৪ হাজার ৮৭১টি জিপিএ-৫ পায় এই বোর্ড। রবিবার বিকেলে এ ফলাফল ঘোষণা করেন মাধ্যমিক উচ্চ মাধমিক সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, সিস্টেম এনালিস্ট সরকার আতিকুল রহমান, বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম, উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হাবববা বাছিত ও সহকারী পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক দ্বীপেশ রজন দাস।
গত বছরের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ কমেছে ৩ হাজার ১৭২টি। গেল বছর সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ৮৭১ জন।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর বোর্ডের অধীনে ৮৩ হাজার ১২৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১২ হাজার ৯৫৯ জন অংশ নিয়ে পাস করেন ১২ হাজার ৮২৬ জন। এরমধ্যে ছেলে ৫ হাজার ৫০১ জনের মধ্যে পাস করেছেন ৫ হাজার ৪৪৩ এবং মেয়ে ৭ হাজার ৪৫৬ জনের মধ্যে পাস করেছেন ৭ হাজার ৩৮৩ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৩৩৫ জনে। এর মধ্যে ছেলে ৭০৩ এবং মেয়ে ৬৩২ জন।
মানবিক বিভাগে ৫৮ হাজার ৭১৬ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৫৮ হাজার ৩০২ জন। এরমধ্যে ছেলে ২৩ হাজার ৪১১ জন অংশ নিয়ে পাস করেন ২৩ হাজার ২৬৮ জন এবং মেয়ে ৩৫ হাজার ৩০৫ অংশ নিয়ে পাস করেন ৩৫ হাজার ৩৪ জন। এই বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২৫৪ জনে। এরমধ্যে ছেলে ৭৬ এবং মেয়ে ১৮২ জন।
ব্যবসা শিক্ষায় ১২ হাজার পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছেন ১১ হাজার ৯৯৫ জন। এরমধ্যে ছেলে ৫ হাজার ৭০৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেন ৫ হাজার ৬৬১ জন এবং মেয়ে ৬ হাজার ৩৮৮ জনের মধ্যে পাস করেন ৬ হাজার ৩৩৪ জন। এই বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০৬ জন। এরমধ্যে ছেলে ৪০ এবং মেয়ে ৬৬ জন।
গত বছর এইচএসসিতে সিলেট বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৬৬ হাজার ৪৯১ জন। পাস করেছিল ৫৪ হাজার ১৪২ জন। পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এর আগের বছর ২০২১ সালে পাসের হার ছিল ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।
২০২৩ সিলেট শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ৩০৮টি কলেজের শিক্ষার্থী। সিলেটে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ১৬ হাজার ৭৩৩ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে। প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ৪টি।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, ২০২১ ও ২০২২ সালের সঙ্গে এবারের ফলাফলের পার্থক্য করা যাবে না। কারণ ওই সময় সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ছিল। এবার পূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে। যে কারণে আমরা ২০১৮ ও ২০১৯ সালের পরীক্ষার সঙ্গে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের তুলনা করছি। ২০১৮ সালে পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬২ দশমিক ১১ এবং ২০১৯ সালে পাসের হার ছিল ৬৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, এবারে ইংরেজিতে ফলাফল কিছুটা খারাপ হওয়ায় শতভাগ পাসে প্রভাব পড়েছে। এবার ইংরেজিতে পাসের হার ৮২ দশমিক ১৯ শতাংশ। তাই ইংরেজি দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজর দিতে তাগিদ দিলেন তিনি। এজন্য শিক্ষকদের ভালো প্রশিক্ষণ ও মফস্বল এলাকায় ভালো ইংরেজি ও গণিতের শিক্ষক দেওয়া এবং নজরদারির জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এবার সিলেটে শতভাগ পাস করেছেন সিলেটে দুইটি কলেজ, গত বছর ছিল ১১টি। শতভাগ ফেল কলেজ নেই। তাছাড়া বাণিজ্য বিভাগের এমন নড়বড়ে অবস্থা হয়েছে। যেন বাণিজ্য বিভাগ বন্ধ হওয়ার পথে। বছর পরীক্ষায় অথবা বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী ছিল ২০ জন।
প্রসঙ্গত চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের গত বছরের চেয়ে এবার পাসের হার কমেছে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। গত বছর পাসের গড় হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।