বিশ্ব নন্দিত আলেমে দ্বীন শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ)’র সংক্ষিপ্ত জীবনী

39

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী

(এক) নাম ও বংশ পরিচয় : নাম মুহাম্মাদ আব্দুল লতিফ চৌধুরী, উপাধী মুজাদ্দিদে যামান হাদিয়ে মিল্লাত, শামসুল উলামা, ছাহেব ক্বিবলাহ ফুলতলী ইত্যাদি। পিতা মাওলানা মুফতি মোঃ আব্দুল মজিদ চৌধুরী, মুজাদ্দেদী নকশবন্দী (রহঃ) তিনি ছিলেন তৎকালীন ভারতবর্ষের বাংলা- আসামের একজন মশহুর আলিম, মুফতী ও বুযুর্গ। আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ ছিলেন সিলেটের সম্রাট ও বিশ্ব বিখ্যাত ওলী হযরত শাহজালাল মুজাররদে ইয়ামনী (রহঃ) এর সঙ্গী ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম হযরত শাহ কামাল (রহঃ) এর অধঃস্তন হযরত শাহ আলা বখশ (রহঃ) এর বংশধর।
দুইজন্মস্থান ও কাল : আল্লামা ছাহেব ক্বিবলাহ ফুলতলী (রহঃ) ১৯১৩ ঈসায়ী মোতাবেক ১৩২১ বাংলা সনের ফাল্গুন মাসের এক বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানাধীন ফুলতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তিন প্রাথমিক ও উচ্চ শিক্ষা লাভ : হযরত ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ) প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বাদেদেওরাইল ফুলতলী মাদরাসায়, হযরত মাওলানা মোঃ ফাতির আলী সাহেবের তত্ত্বাবধানে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন, এ সময় তিনি ক্বারী সৈয়দ আলী সাহেবের নিকট ইলমে ক্বিরাত শিক্ষা করেন, পরবর্তীতে ছাহেব ক্বিবলাহর পিতা মাওলানা মুফতি আব্দুল মজীদ চৌধুরীর সুযোগ্য শাগরিদ ভারতের আসাম প্রদেশের হাইলকান্দি জেলার রাঙ্গাউটি মাদরাসার সুপার প্রখ্যাত আলিম মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ সাহেবের অনুরোধে ১৩৩৬ বাংলা সনে ফুলতলী ছাহেবকে ভর্তি করা হয় সেখানে, আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন, এ সময় ছাহেব ক্বিবলার পিতা মাওলানা মুফতি আব্দুল মজীদ চৌধুরী ইন্তেকাল করেন, পিতার ইন্তেকালের পর হযরত বদরপুরী (রহঃ) এর পরামর্শে ছাহেব ক্বিবলা (রহঃ) ১৯৩১ ইংরেজী সনে বদরপুর সিনিয়র মাদরাসায় ভর্তি হন এবং সেখানেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন, উচ্চ শিক্ষা লাভ করে ছাহেব ক্বিবলার উস্তাদ ও মুর্শিদ হযরত মাওলানা শাহ ইয়াকুব বদরপুরী (রহঃ) এর নির্দেশে তৎকালীন ভারতবর্ষের অন্যতম বিদ্যাপীট মাদরাসা-ই-আলিয়া রামপুরে ভর্তি হন, এরপর ইলমে হাদিসের শিক্ষা লাভের জন্য রামপুরের মাতলাউল উলুম টাইটেল মাদরাসায় ভর্তি হন, সেখান থেকে ১৩৫৫ হিজরী সনে বিখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত মাওলানা খলিলুল্লাহ রামপুরী (রহঃ) ও হযরত মাওলানা ওয়াজীহ উদ্দিন রামপুরী (রহঃ) সহ কতিপয় উস্তাদের কাছ থেকে হাদিসের চূড়ান্ত পরিক্ষায় প্রথমবিভাগে সনদ লাভ করেন, সেখানে তিনি অন্যান্য বিষয়েও গভীর জ্ঞানার্জন করেন।
চারইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভ : ছাহেব ক্বিবলাহ ফুলতলী (রহঃ) এর ইলমে ক্বিরাতের অন্যতম শিক্ষক হলেন শাহ ইয়াকুব বদরপুরী (রহঃ) এর পরামর্শক্রমে বিখ্যাত ক্বারী ও মক্কাতুল মুকাররামার হযরত ইরকছুছ আল মিশরী (রহঃ) এর ছাত্র হযরত মাওলানা হাফিজ আব্দুর রউফ করমপুরী শাবাজপুরী (রহঃ) এর কাছ থেকে ফুলতলীছাহেব ক্বিবলাহ ক্বিরাত শিক্ষা করে সনদ লাভ করেন, ১৩৫১ বাংলা সনে ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ প্রথমবার মক্কা শরীফে গিয়ে বিশ্ববিখ্যাত ক্বারীগণের উস্তাদ ও পরীক্ষক রৈসুল কুররা হযরত আহমদ হিজাজী মক্কী (রহঃ) এর কাছ থেকে দুই বারে সমস্ত কুরআন শরীফ শিক্ষা লাভ করে ইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভ করেন, ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ) এ সিলসিলাহ স্বয়ং রাসূল (সাঃ) পর্যন্ত পৌঁছেছে।
পাঁচ কর্মজীবন : ইলমে হাদীসের খিদমত : আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ) সর্বপ্রথম ১৯৪৬ ইং সনে ভারতের আসামের বদরপুর আলিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতায় যোগদানের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯৫০ সাল পর্যন্ত সেখানে তিরমিযী শরীফ, নাসাঈ শরীফ, বায়দ্বাবী শরীফ ও তাফসীরের বিভিন্ন বিষয়াদি শিক্ষা দান করেন, ১৯৫১ ইং সাল থেকে ১৯৫৪ ইং সাল পর্যন্ত ফুলতলী আলিয়া মাদরাসায় শিক্ষাদানে নিয়োজিত ছিলেন, ১৯৫৪ ইং সালেই তিনি সিলেটের গাছবাড়ী আলিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস হিসেবে যোগদান করেন, পরবর্তীতে তিনি সেখানকার ভাইস প্রিন্সিপাল ও পরে প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, সুদীর্ঘ ৬ বছর যাবৎ সেখানে হাদীস শরীফের শিক্ষা দান করেন, এরপর সুদীর্ঘকাল তিনি সৎপুর আলিয়া মাদরাসার কামিল জামাতের ছাত্রদের হাদীস শরীফ শিক্ষাদান করেন, এরপর তিনি সিলেটস্থ নিজ বাসায় কামিল জামাতের ছাত্রদেরকে সপ্তাহে কিছু সময় বাখারী সরীফের দরস দান করেন, আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ বৃদ্ধবয়সেও বসে থাকেননি, জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তিনি ছাত্রদেরকে বাদেদেওরাইল ফুলতলী আলিয়া মাদরাসায় নিয়মিত হাদীস শরীফের দরস দানকরেছিলেন, যা বর্তমান সমাজে এক উজ্জ্বলতম আলো হিসেবে কাজ করছে, ছাহেব ক্বিবলাহর অসংখ্য ছাত্র রয়েছেন যারা সুযোগ্য মুহাদ্দিস হিসেবে বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বে ইলমে হাদীসের শিক্ষা দান করে যাচ্ছেন।
ছয়ইলমে ক্বিরাতের খিদমত : ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ) মক্কা শরীফ হতে দেশে ফিরে প্রথমে হযরত আদম খাকি (রহঃ) এর মাজার সংলগ্ন মসজিদে ক্বিরাতের শিক্ষা দান শুরু করেন, পরবর্তিতে সিলেটের জকিগঞ্জের বারগাত্তায় সপ্তাহে একদিন ক্বিরাত শিক্ষা দান করেন, ১৯৪০ ইং সালে নিজ বাড়ীতে ইলমে ক্বিরাতের দরস চালু করেন। দ্রুত গতিতে ছাত্রসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায অন্যান্য স্থানে শাখা অনুমোদন ও একটি বোর্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, তখন ছাহেব ক্বিবলাহর পিতার নামানুসারে বোর্ডের নাম রাখা হয় দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট, ছাহেব ক্বিবলাহ তার ভূ-সম্পত্তির প্রায় ৩৩ একর জমি ট্রাষ্টের নামে ওয়াকফ করে দিয়েছেন, ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ স্বাধীনতার পরবর্তী দু বছর কারাগারে থেকে ও ক্বিরাত শিক্ষা দান করেন, জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ইলমে ক্বিরাতের খিদমত করে গেছেন।
সাত প্রতিষ্ঠানিক খিদমত : আল্লামা ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ) ইসলামের প্রচার প্রসার ও জাতিকে ইসলামী তাহযীব তামাদ্দুনের আলোকে গড়ে তোলার জন্য অসংখ্য মাদরাসা, মক্তব ও দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গঠন করেছেন, তার নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে দেশ- বিদেশে প্রায় দু’শতাধিক মাদরাসা পরিচালিত হচ্চে, তিনি নিজ বাড়িতে একটিএতিমখানা স্থাপন করেছিলেন, সেখানে অসংখ্য এতিমদেরকে লেখা পড়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে, এছাড়া ও দেশ-বিদেশে অসংখ্য মসজিদ মাদরাসা স্থাপন করেছেন, তার তত্ত্বাবধানে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্টে বেশ কিছু দ্বীনি প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে।
আটসাংগাঠনিক ও সামাজিক খিদমত : আল্লামা ছাহেব ক্বিবলাহ ফুলতলী (রহঃ) অসংখ্য সামাজিক সেবামূলক সংঠন গঠন করেছেন, এসব সংঠনের মধ্যে রয়েছে আনজুমানে মাদারিসে আরাবিয়া, আনজুমানে আল ইসলাহ বাংলাদেশ, আনজুমানে তালামীযে ইসলামীয়া, লতিফিয়া ক্বারী সোসাইটি, ইয়াকুবিয়া হিফজুল কুরআন বোর্ড, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউ কে, এর প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক, তার তত্ত্বাবধানে ফুলতলীতে অসহায়দের একটি লঙ্গরখানা স্থাপন করেছিলেন, অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য অনেক প্রকল্প চালু করেছিলেন, তিনি গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মান প্রকল্প চালু করে নিজেকে দয়ালু ও আদর্শবান হিসেবে পরিচয় দিয়ে গেছেন।
নয়ক্বিরাতের সনদ : আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ) তিন ছিলছিলায় ক্বিরাতের সনদ লাভ করিয়াছেন, প্রথমতঃ তাহার উস্তাদ ও মুর্শিদ কুতবুল আউলিয়া হযরত মাওলানা আবু ইউসুফ শাহ মুহাম্মদ ইয়াকুব বদরপুরী (রহঃ) (৩) হযরত শায়খ মাওলানা আব্দুল মজিদ (৪) হযরত শায়খ মাওলানা আব্দুল ওহাব সিলেটী, তিনি হইতে হযরত ইমাম আবু আমরিদ্দানী পর্যন্ত ক্বিরাতের ছিলছিলাহ মশহুর, দ্বিতীয়তঃ তাহার উস্তাদ হযরত হাফিজ মাওলানা আব্দুর রউফ করমপুরী (৩) হযরত শায়খ ইরকছুছ আল মিছরী (৪) হযরত শায়খুল কোররা আব্দুল্লাহ আলমক্কী (৫) হযরত ক্বারী ইব্রাহিম সা’দ মিছরী (৬) হযত হাসান বাদবার শাফেয়ী (৭) হযরত মুহাম্মাদ আল মতোওয়াল্লী (৮) হযরত সৈয়দ আহমদ তিহামী (৯) হযরত আহমদ সালমুনা (১০) হযরত সৈযদ ইব্রাহীমআলওবায়দী (১১) হযরত আব্দুর রহমান আল আজহুরী (১২) হযরত শায়খ আহমদ আল বাকারী (১৩) হযরত শায়খ মুহাম্মদ আল বাকারী (১৪) হযরত আব্দুর রহমান আল ইয়ামানী (১৫) হযরত শায়খ শাখখাজা (১৬) হযরত শায়খ আব্দুল হক ছানবাতী (১৭) হযরত শায়খুল ইসলাম জাকারিয়া আল আনছারী (১৮) হযরত শায়খ দেওয়ান আল আকারী (১৯) হযরত শায়খ মুহাম্মাদ আননাওয়েরী (২৮) হযরত ইমাম মুহাম্মাদ আল জাজরী (২১) হযরত শায়খ ইবনুল লাব্বান (২২) হযরত শায়খ আহমদ ছিহরা আসসাতবী (২৩) হযরত শায়খ আবুল হাসাস আলী ইবনে হুদাইল (২৪) হযত শায়খ আবু দাউদ সুলায়মান ইবনে নাজ্জাহ (২৫) হযরত ইমাম আবু আমরিদ্দানী (২৬) হযরত আবুল হাসান তাহির ইবনে জালিউন (২৭) হযরত সালেহ আল হাশিমি (২৮) হযরত আহমদ আল উশনানী (২৯) হযরত মুহাম্মদ উবায়েদ আল সাব্বাহ (৩০) হযরত ইমাম হাফছ (৩১) হযরত ইমাম আছিম ইবনে আবু নুনজুদ আল কুফী (৩২) হযরত আবু আব্দুল্লাহ ইবনে হাবিব আস সালামী এবং যোর ইবনে হাবিশ (৩৩) আমিরুল মোমিনীন হযরত উসমান (রাঃ) হযরত আলী (রাঃ) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হযরত উবাই ইবনে কাব (রাঃ) হযরত যায়েদ ইবনে ছাবিত (রাঃ) (৩৪) সাইয়্যেদুল মুরছালীন শাফিউল মুজনিবিন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) (৩৫) হযরত জিব্রাইল (আঃ) আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের লাওহে মাহফুজ হইতে।
দশ হাদীসের সনদ : আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ) দুই সিলসিলায় হাদীস শরীফের সনদ লাভ করিয়াছে, প্রথমতঃ ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ) হাদীস শরীফের সনদ লাভ করিয়াছেন (হিন্দুস্থান রামপুরের) বিশ্ব বিখ্যাত মুহাদ্দিস মাওলানা খলিলুল্লাহ রামপুরী (রহঃ) হইতে খলিলুল্লাহ রামপুরী (রহঃ) সনদ লাভ করিয়াছেন (শায়খুল হাদীস) মাওলানা মনুওর আলী রামপুরী (রহঃ) হইতে, দ্বিতীয়তঃ ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহঃ) হাদিস শরীফের সনদ লাভ করিয়াছেন। ভারত বর্ষের খ্যাতনামা মুহাদ্দিস মাওলানা অজিহ উদ্দিন রামপুরী (রহঃ) হইতে অজিহ উদ্দিন (রহঃ) সনদ লাভ করিয়াছেন আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী (রহঃ) হইতে হযরত মাওলানা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী (রহঃ) ও হযরত মাওলানা মনুওর আলী (রহঃ) এর সনদ মুহাদ্দিসগনের নিকট সুপ্রসিদ্ধ, তাহা বর্ণনা করার প্রয়োজন নাই।
এগারতরীকার সনদ : ১) ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ তরীকতের [ইলমে তাসাউফের] সনদ লাভ করিয়াছেন ২) মাওলানা শাহ মুহাম্মাদ ইয়াকুব (বুন্দাশিলী) বদরপুরী (রহঃ) হইতে ৩) মাওলানা হাফিজ আহমদ জৌনপুরী (রহঃ) হইতে ৪) হযরত মাওলানা কেরামত আলী জৌনপুরী (রহঃ) হইতে ৫) সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহঃ) হইতে ৬) শাহ আব্দুল আযিয মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) হইতে ৭) শাই ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) হইতে ৮) শাহ আব্দুর রহীম (রহঃ) হইতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পর্যন্ত চার তরীকার বিখ্যাত সনদ রহিয়াছে, বিস্তারিত বর্ণনা উক্ত ছিলছিলার শজরার মধ্যে রহিয়াছে, তাছাড়া শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) এর (আল ইনতেবাহফি ছালাছিল আওলিয়া ই আল্লাহ) ও অন্যান্য কিতাবে রয়েছে, ফুলতলী ছাহেব তারা পীর ও মুর্শিদ মাওলানা শাহ মুহাম্মাদ ইয়াকুব বদরপুরী (রহঃ) অনুমতিক্রমে হিন্দুস্তানস্থ রামপুরের প্রখ্যাত ওলী রামপুর আলিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন (রহঃ) এর কাছে চিশতিয়া নেজামিয়া তরীকার বায়াত গ্রহণ করেন, গোলাম মহিউদ্দিন (রহঃ) মাওলানা শাহ মুশতাক রামপুরীর (রহঃ) খলিফা ছিলেন তাহার ছিলছিলাহ খুবই প্রসিদ্ধ।
বারোশামসুল উলামা উপাধি লাভ : আল্লামা ছাহেব ক্বিবলাহ ফুলতলী (রহঃ) ১৯৯৯ ইং সনে বৃটেনসহ ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সফর করেছিলেন ইসলামের দাওয়াতের জন্য, আজীবন ইসলামের খিদমত করার বিরল ভুমিকা রাখায় ছাহেব ক্বিবলাহ ফুলতলীর কর্মময় জীবনের উপর গবেষণা চালিয়ে বৃটেনস্থ বাংলাদেশ ন্যাশনাল ষ্টুডেন্ট এওয়ার্ড [বি,এন,এস,এ] শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মনোনীত করে শামছুল উলামা উপাধিতে ভূষিত হন।
তেররচিত গ্রন্থবলী : আল্লামা ছাহেব ক্বিবলাহ ফুলতলী (রহঃ) জীবনের শত ব্যস্ততার মধ্যে ও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পুস্তক রচনা করেছেন, তার রচিত পুস্তকের মধ্যে রয়েছে ১) আত তানভির আলাত তাফসীর; পবিত্র কুরআনের তাফসীর বিষয়ে সমৃদ্ধ গ্রন্থ, ২) মুন্তাখাবুস সিওর; সিরাত বিষয়ে, ৩) আল খুতবাতুল ইয়াকুবিয়া; বারো বান্দেরখুতবা, ৪) আনোয়ারুস সালিকীন; তাসাউফ বিষয়ে লিখিত গ্রন্থ ৫) নালায়ে কলন্দর; হামদ, নাত ও মোনাজাত সমৃদ্ধ গ্রন্থ, বিষয়ে লিখিত গ্রন্থ, এছাড়া বিভিন্ন সময় তিনি ধর্মীয় ও যুগোপযোগী প্রেক্ষাপটে গ্রন্থাবলী ও অসংখ বই রচনা করেছেন।
লেখক :: সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।