কমলগঞ্জে বিজিবি সদস্যের ৫ লাখ টাকা খোয়া যাওয়ার ঘটনায় সিএনজি অটোরিক্সা চালক আটক, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

11

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুরে একটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা থেকে নগদ ৫ লাখ টাকাসহ একটি ব্যাগ হারিয়ে ফেলেন ওই অটোরিক্সার যাত্রী অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য নুরুল ইসলাম (৫০)। তার বাড়ি আদমপুর ইউনিয়নের কোণাগাঁও গ্রামে। টাকাসহ ব্যাগ খোয়ানোয় কমলগঞ্জ থানায় অভিযোগ করলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কমলগঞ্জ উপজেলা সদরের নছরতপুর গ্রাম থেকে অটোরিক্সা চালক সাহেল (১৮)-কে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত কমলগঞ্জ উপজেলা চৌমুহনায় সিএনজি চালকরা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়ে আটক চালককে ছেড়ে দেবার দাবি জানায়। দেড় ঘন্টা সড়ক অবরোধের পর কমলগঞ্জ পৌরসভা মেয়র জুয়েল আহমেদের হস্তক্ষেপে সিএনজি অটোরিক্সা চালক সমিতি সভাপতি আলমাছ মিয়া, আব্দুল মুকিত ও খলিলুর রহমানের জিম্মায় আটক সিএনজি অটোরিক্সা চালককে পুলিশ ছেড়ে দেয়। এর পর সিএনজি অটোরিক্সা চালকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে।
কমলগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য নুরুল ইসলাম আদমপুর থেকে মৌলভীবাজার জেলা সদরে গিয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে একটি ব্যাগে নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে কমলগঞ্জ উপজেলা চৌমুহনায় পৌছেন। সেখান থেকে সাহেল মিয়ার সিএনজি অটোতে করে অন্য আরো ৪ যাত্রীর সাথে আদমপুর যান। তিনি সিএনজি অটোরিক্সার সামনের আসনে (চালকের সাথে) বসলেও তার টাকার ব্যাগ রেখেছিলেন পিছনের যাত্রী আসনের পিছনের খালি স্থানে। তিনি সন্ধ্যায় আদমপুর নেমে যান। এরপর অটোরিক্সা চালক অন্যান্য যাত্রীদের নিয়ে কুরমা এলাকায় চলে যান। পরে নুরুল ইসলাম দাবি করেন অটোরিক্সায় তার টাকার ব্যাগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর নুরুল ইসলাম কমলগঞ্জ থানায় এ ঘটনায় সিএনজি অটো চালককে দায়ী করে একটি অভিযোগ দিলে কমলগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল নছরতপুর গ্রাম থেকে চালক সাহেলকে ধরে নিয়ে থানায় আটকিয়ে টাকার ব্যাগ ফেরতের জন্য চাপ সৃষ্টি করে।
পুলিশ জানায়, তার কথায় অসংলগ্নতার কারণে রাতে বিভিন্ন স্থানে টাকা উদ্ধারের অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে টাকা পাওযা যায়নি।
চালক সাহেলের মা রিনা বেগম বলেন, পুলিশ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তার ছেলেকে ধরে নেওয়ার সময় থেকে শুরু করে সারারাত পিটিয়েছে। ফলে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। সকালে তাকে পুলিশ কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করায়।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চেয়ে যাত্রী নুরুল ইসলামের সাথে যোগোযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতেই চালককে ধরে আনা হয়। তার অসংলগ্ন কথাবার্তায় তাকে নিয়ে রাতে বিভিন্ন স্থানে টাকা উদ্ধারের অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে টাকা পাওয়া যায়নি। সিএনজি চালককে কোন নির্যাতন করা হয়নি।
অটোরিক্সা চালকদের সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, আপাতত তাকে জিম্মায় ছাড়া হয়েছে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত হবে।