শাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে প্রশাসনের বাধা

10
সাধারণ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে শাবি প্রশাসনের বাধা।

শাবি থেকে সংবাদদাতা ;
দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩য় সমাবর্তন। এ সময় হল খোলা রাখার দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার ক্যাম্পাসে মানববন্ধন পরবর্তী সমাবেশের প্রস্তুতির সময় অনুমতি না নিয়ে মানববন্ধন করায় বাধা দিয়ে সমাবেশ পন্ড করে দিয়েছে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।
বুধবার দুপুর (২০ অক্টোবর) ১২ টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থী দাবি করে বেশ কিছু শিক্ষার্থী মানববন্ধনে দাঁড়ায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ক্যাম্পাসে আমি থাকবো, সাবেক ও বর্তমানের মেলবন্ধনে ছেদ ঘটানো যাবে না, সমাবর্তনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখতে হবে, আবাসিক হল খোলা রাখতে হবে, সমাবর্তনের সময় ক্যাম্পাস বন্ধ চাই না ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়।
এদিকে মানববন্ধনের অনুমতি না নেওয়ায় বাধা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। এসময় প্রায় ঘণ্টাখানেক প্রক্টরিয়াল বডি ও শিক্ষার্থীদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের উপর বেশ চড়াও মনোভাব ও উচ্চস্বরে কথা বলতে দেখা যায় প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদকে।
বাকবিতন্ডা চলাকালে অনুমতি না নিয়ে ভিডিও করার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীর মোবাইল জব্দ করে প্রক্টরিয়াল বডি। পরে প্রক্টর অফিসে শিক্ষার্থীদের নিয়ে গিয়ে আরো ঘণ্টাখানেক আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে প্রক্টর জহীর উদ্দিন আহমদের উপস্থিতিতে ভিডিও ডিলিট করে দেন ঐ শিক্ষার্থী। পরে তাকে মোবাইল ফেরত দেন প্রক্টরিয়াল বডি।
বাকবিতন্ডায় শিক্ষার্থীরা বলেন, সমাবতর্নের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বন্ধ একটি অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন কেন্দ্রিক হল একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয় না। নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এক সময় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ও হলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
কিন্তু আমাদের এখানে বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য কোন সুযোগ রাখা হয়নি। দীর্ঘদিনের জন্য হল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যা সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় বাধা হিসেবে কাজ করবে।
এসময় অনুমতির বিষয়ে প্রক্টরকে শিক্ষার্থীরা বলেন ‘আর যেকোন যৌক্তিক বিষয়ে কথা বলা কিংবা ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ করার শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করার সময় অনুমতি নিতে হয় না।’ তারা এও বলেন, সবাই সবসময় অনুমতি নিলে ৫২ কিংবা ৭১ কখনোই সৃষ্টি হত না।
শিক্ষার্থীদের কথার প্রেক্ষিতে প্রক্টর অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্যাম্পাসে যেকোন অবস্থানমূলক কর্মসূচির জন্য প্রশাসনের অনুমতি আবশ্যক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুন মানতে হবে। শিক্ষার্থীদের যেকোন যৌক্তিক দাবি প্রশাসনের কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রশাসনের সাথে দাবি নিয়ে আলোচনা না করে এখানে দাঁড়ানো কোন সমাধান হতে পারে না।
উল্লেখ্য, শাবিপ্রবিতে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ৩য় সমাবর্তন আগামী ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তনে নিরাপত্তা বিবেচনা করে শীতকালীন ছুটি পেছানোর সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ৫-১৬ জানুয়ারি হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। এ সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মাঝে সমালোচনার ঝড় তুলেছে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।