উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে কানাইঘাটে প্রার্থীদের তোড়জোড় শুরু

22

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশের মতো কানাইঘাটে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইতিমধ্যে আগামী ফেব্র“য়ারি মাসে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মার্চে নির্বাচনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় কানাইঘাটে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান এবং পুরুষ-মহিলা পদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একচেটিয়া আওয়ামীলীগের বিজয় হওয়ায় উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে কানাইঘাটে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের তালিকা যেন বেশ লম্বা হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে আওয়ামীলীগ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে পছন্দের নেতাকে দলীয় ভাবে মনোয়ন দেওয়ার জন্য তাদের কর্মী ও সমর্থকরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে বিএনপি, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় ভাবে অংশগ্রহণ করবে না বলে ঘোষণা দেওয়ায় স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে কানাইঘাটে স্বতন্ত্র ভাবে বিএনপি নেতারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন। সচেতন মহল মনে করেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো দলীয় ভাবে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে আঞ্চলিকতা জয় পরাজয়ে বড় ধরনের ফেক্টর হবে। কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে যাদের নাম জোরে শোরে উচ্চারিত হচ্ছে তারা হচ্ছেন সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাতবাক ইউপির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোস্তাক আহমদ পলাশ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান মরহুম আলহাজ্ব আব্দুর রকিবের সুযোগ্য পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসি আওয়ামীলীগ নেতা সামসুজ্জামান বাহার, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা এড. আব্দুল খালিক, উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম রানা, যুক্তরাজ্য প্রবাসি আওয়ামীলীগ নেতা শামীম আহমদ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ধর্মীয় বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের চৌধুরী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তারেক হাসান চৌধুরী। তবে শেষ পর্যন্ত সিলেট ৫ আসনে আওয়ামীলীগের মনোয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব আব্দুল মুমিন চৌধুরী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে পারেন বলে নানা সূত্রে আলোচিত হচ্ছে। দলীয় ভাবে বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করলেও স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করতে পারেন টানা ৩ বারের নির্বাচিত জনপ্রিয় বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আশিক উদ্দিন চৌধুরী। এছাড়া বিএনপি থেকে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে কানাইঘাট সদর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক মামুন রশিদ মামুন, কানাইঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি কাওন্সিলর হাজী শরীফুল হক, জামায়াতে ইসলাম থেকে স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের মধ্যে যাদের নাম উচ্চারিত হচ্ছে তারা হলেন সিলেট জেলা জামায়াতে ইসলামীর উত্তরের আমীর হাফিজ আনোয়ার হোসেন খান, বিগত উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিশিষ্ট সমাজ সেবক অধ্যাপক আব্দুর রহিম, জামায়াত নেতা মাওলানা ফয়জুল্লাহ বাহার ও জাতীয়পার্টি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান প্রার্থী সাহাব উদ্দিনের নাম আলোচিত হচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনী মাঠে যারা ইতিমধ্যে তৎপরতা চালাচ্ছেন তাদের মধ্যে কানাইঘাট বড়চতুল ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হোসেন চতুলী, উদীয়মান সংগঠক সাংবাদিক এহসানুল হক জসিম। ভাইস চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন কানাইঘাট বাজার বনিক সমিতির সাবেক সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম খোকন, বিএনপি নেতা সাজ্জাদুর রহমান, আজিজুল আম্বিয়া, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা বদরুজ্জামান ইকবাল, জাপা নেতা সমাজকর্মী কিউএম র্ফরুখ আহমদ ফারুক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মাওলানা হেলাল আহমদ, উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারন সম্পাদক জুনেদ হাসান জীবান, স্বতন্ত্র ভাবে ডাক্তার ইসমাইল আলী চৌধুরী, সাংবাদিক শাহিন আহমদ। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম বেগম, নারী নেত্রী সাবেক ইউপি সদস্যা রুবি রানী চন্দ্র, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাতী রানী দাস, খাদিজা বেগম ও জাহানারা বেগম। চেয়ারম্যান প্রার্থী অনেকের সাথে কথা হলে তারা বলেন উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হচ্ছে একটি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন। তারপর এ নির্বাচন দলীয় ভাবে হচ্ছে, দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাব। তারপরও এলাকার মানুষ যদি আমাদের নির্বাচনে চান তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। ক্ষমতাসীন দলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী জানিয়েছেন বিগত উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অনেকে দলের বাহিরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়ে ছিলেন। নির্বাচনের পরে বিজয়ী ও পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলের স্বপদে পূর্ণ বহাল করা হয়। এবারের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ঐতিহাসিক বিজয় হওয়ায় উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন না করলে মূলত আওয়ামীলীগের মনোয়ন পাওয়া প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে উপজেলা নির্বাচনের মূল লড়াই হবে বলে তারা মনে করেন।