নতুন বছরে নতুন জাগরণ

117

সালাম সালেহ উদদীন :
দেশের উন্নয়ন যেমন সাধারণ মানুষকে আশান্বিত, আপ্লুত করে, মানুষের কর্মস্পৃহা বাড়ায়Ñ তেমন ব্যথর্তাও গ্রাস করে। দেশে যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা না যায় তাহলে একটি দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে তা প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। আমরা চাইব, শেখ হাসিনার সরকার টানা তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে। মনোযোগী হবে গণতন্ত্র আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষায়। নিবার্চনী ইশতেহারে কমর্সংস্থানের যে প্রতিশ্র“তি দেয়া হয়েছে তাও পূরণ করবে। বাংলাদেশের জনগণের শান্তি নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নের রূপকার হিসেবে শেখ হাসিনা বিশ্বখ্যাত হোক এই প্রত্যাশা করা অসঙ্গত নয়। কারণ একমাত্র তিনিই বিশ্বের দীঘর্স্থায়ী নারী সরকারপ্রধান।
পুরনোকে বিদায় জানিয়ে আরও একটি নতুন বছর আমাদের দ্বারে কড়া নাড়ছে। নতুনের আবাহন, স্বপ্ন ও সম্ভাবনা নিয়ে প্রতি বছর পহেলা জানুয়ারি আমাদের মধ্যে আসে। যেমন আসে পহেলা বৈশাখ। এ দুটি বিশেষ দিনকেই আমরা বরণ করে নিই। একটির মধ্যে নিহিত রয়েছে আন্তর্জাতিকতা, অন্যটি আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে ধারণ করে বাঙালি হৃদয়ে আবর্তিত হয়। নতুন বছরে নতুন দিন আসে, আমরা উদ্দীপিত ও জাগ্রত হই। নতুন জীবনের জয়গান গেয়ে অন্তত ওই দিন উজ্জীবিত হই। উল্লাসেও ফেটে পড়ি। আনন্দ-উল্লাসের পাশাপাশি আমরা অঙ্গীকার করি, নতুন বছরে নতুনভাবে চলতে। নতুনভাবে জীবনযাপন করতে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গীকারের মধ্যে প্রধান হয়ে ওঠে। ব্যক্তিচরিত্র বদলেরও অঙ্গীকার করি আমরা। এসবই বিগত বছরের ভুলত্র“টি শুধরে নিয়ে নতুনভাবে, স্বচ্ছ ও সঠিকভাবে পথচলার অঙ্গীকার।
পুরনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে বরণ করে নেয়াই মানুষের সহজাত প্রবণতা। জাতীয় জীবনে অধিকাংশ কাজই খ্রিস্টীয় বর্ষপঞ্জি মনে করা হলেও খ্রিস্টীয় বর্ষ ঘটা করে পালন করা হয় না। তবে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে বছরটি কেমন গেল তার হিসাব-নিকাশ সবাই করে থাকেন। আমাদের জাতীয় জীবনে ২০১৮ ছিল একটি গুরুত্বর্পূণ বছর। নানা ক্ষেত্রে উত্থান-পতনের মধ্যদিয়ে পার হয়েছে বছরটি। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সবার চেষ্টা ছিল এগিয়ে যাওয়ার। নতুনের মধ্যেই নিহিত থাকে অমিত সম্ভাবনা। আর সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সুযোগ করে দেবে নতুন বছর।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ছিল বিদায়ী বছরের সবচেয়ে আলোচিত দিন। এই দিন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয় হয়েছে। আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৯ আসন। জাতীয় পার্টি (এরশাদ) ২০ আসন, বিএনপি ৫ আসন ও অন্যান্য ১৪। নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে এবার ভোট পড়েছে ৮০ শতাংশ। টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম কারচুপির অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুন:ভোটের দাবি জানিয়ে ঐক্যফ্রন্ট। এও বলেছে, ভোট নয় এটা গণতন্ত্রের সঙ্গে মশকরা। ভোট বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। রবিবার একাদশ সংসদ নিবার্চনের ভোটগ্রহণ শেষে রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল। তবে দুঃখজনক ঘটনা হলো নির্বাচনী সহিংসতায় ১৭ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা একাদশ সংসদ নির্বাচন বিষয়ে তাদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে সার্ক, ইসলামী সহযোগী সংস্থা ওআইসি, ভারত ও নেপালের পর্যবেক্ষকরা। রবিবার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে বিকালে রাজধানীতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে তারা তাদের পর্যবেক্ষণ সাংবাদিকদের জানান। আবার উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে এমন তথ্য জানিয়ে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ভোটারদের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। বিজয়ী হওয়ায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন, চীনের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, ভুটানের রাজা ও প্রধানমন্ত্রী, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শেখ হাসিনাকে টেলিফোনে অভিনন্দন জানান। আশা করা যাচ্ছে, অচিরেই বিশ্বের অন্যান্য নেতৃবৃন্দও শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাবেন।
এবারের নির্বাচন কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তির্পূণ হয়েছে, এ কথা বলেছে নির্বাচন কমিশনও। কমিশন বিপুল ভোটে জয়লাভ করায় আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আমাদেরও অভিনন্দন। এও ভেবে দেখতে হবে, আওয়ামী লীগ বিজয়ী না হলে কী হতো। ২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি কী হয়েছিল। ২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক শক্তি ক্ষমতায় এলে বিভীষিকা আর অন্ধকার নেমে আসে, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সারা বাংলায় নিপীড়িত নির্যাতিত হয়। ধর্ষিত হয় ফাহিমা-পূর্ণিমা। কত হিন্দু রমণীকে পৈশাচিকভাবে ধর্ষণ করেছে ওই বর্বর শক্তি। নিরীহ মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। আক্রমণ করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর ওপরও। এবার আওয়ামী লীগ বিজয়ী হওয়ার কারণে কেবল দলটিই রক্ষা পেল না, রক্ষা পেল বাংলাদেশও।
বিদায় বছরে নানা ধরনের আলোচিত ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোগে ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশের মধ্যদিয়ে ঐক্যফ্রন্টের যাত্রা শুরু গত বছরে রাজনীতির ক্ষেত্রে আলোচিত ঘটনা। এর পাশাপাশি যুক্তফ্রন্ট আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া। ২০১৮ সালের বেশির ভাগ সময় মানুষের নজর ছিল রাজনীতিকে ঘিরে। গত বছর খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে দুর্নীতির মামলায়। এক মামলায় দন্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার আট মাসের মাথায় আরেক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদন্ড, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং বাকি ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। ১৪ বছর আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে নৃশংস ওই গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। ২০১৮ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতার কারণে জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। তবে বিচার বহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেছে, যা মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
গত বছর দেখা দিয়েছিল ডেঙ্গুর প্রকোপ, এই প্রকোপে বেশ কয়েকজন মারা যায়। ২০১৭ সালেও কমেনি সড়ক দুর্ঘটনা। থামেনি মৃত্যুর মিছিল। যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, ২০১৭ সালে সড়কে মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৩৯৭ জনের। সরকারি হিসাবে এ সংখ্যা তিন হাজারেরও কম। পুলিশের হিসাবে, ১৯৯৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৫৩ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রাকৃতিক নয়, মানবসৃষ্ট কারণ। সে হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা পরোক্ষভাবে হত্যারই শিকার হন। কিন্তু হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জনাকাক্সিক্ষত উদ্যোগ নেই বাংলাদেশে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা না কমে জ্যামিতিক হারেই বেড়ে চলছে। এমন কোনো দিন নেই, যেদিন সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে না, যেদিন সড়ক দুর্ঘটনায় সাধারণ মানুষ আহত-নিহত হচ্ছে না। রাস্তায় নামলেই মৃত্যুদূত তাড়া করছে যাত্রী বা পথচারীকে। প্রতিদিনই সাধারণ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় রক্তাক্ত হচ্ছেন, ছিন্নভিন্ন লাশে পরিণত হচ্ছেন।
ব্যাংক খাতে কেলেঙ্কারি ও অনিয়মের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে যা দেশের আর্থিক খাতকে চরম হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। দেশের পুঁজি বাজার শত চেষ্টাতেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তবে শিক্ষা খাতে নকল রোধ করা সম্ভব হয়েছে। বিগত বছরে আমরা বেশ কয়েকজন গুণী মানুষকে হারিয়েছি। যাদের অভাব পূরণ হবার নয়। একাত্তরের জননী রমা চৌধুরী, লেখক, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আমজাদ হোসেন, শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু, চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর, লেখক মোস্তফা মীর প্রমুখ। আন্তর্জাতিক বিশ্বে যাদের হারিয়েছি তারা হলেন, স্টিফেন হকিং, কফি আনান, ভিএস নাইপল, উইনি মান্ডেলা, হিন্দি ছবির জনপ্রিয় নায়িকা শ্রীদেবীসহ অনেককেই। তবে কিছুতেই সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা যায়নি। সামাজিক অবক্ষয় দিনে দিনে চরম আকার ধারণ করছে। হেন কোনো অপরাধ নেই, যা সমাজে সংঘটিত হচ্ছে না। স্ত্রী স্বামীকে, স্বামী-স্ত্রীকে, মা-বাবা নিজ সন্তানকে, ভাই ভাইকে অবলীলায় হত্যা করছে। প্রেমের কারণে অর্থ সম্পত্তির লোভে সমাজে এসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। অন্যদিকে হতাশা নিঃসঙ্গতা বঞ্চনা অবিশ্বাস আর অপ্রাপ্তিতে সমাজে আত্মহননের ঘটনাও বেড়ে গেছে। বেড়ে গেছে মাদকাসক্তের সংখ্যা। মাদকের অর্থ জোগাড় করতে না পেরে ছেলে খুন করছে বাবা-মাকে, স্বামী খুন করছে স্ত্রীকে কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যকে। অন্যের সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য কিংবা কাউকে ফাঁসিয়ে দেয়ার নিমিত্তে নিজের সন্তানকে হত্যা পর্যন্ত করছে। পারিবারিক বন্ধন স্নেহ-ভালোবাসা মায়া-মমতা আত্মার টান সবই যেন আজ স্বার্থ আর লোভের কাছে তুচ্ছ। এর পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি নির্যাতন ও হত্যার শিকার হচ্ছে দেশের কোমলমতি শিশুরা। দিনের পর দিন এই নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা বেড়েই চলছে। মূল্যবোধের অবক্ষয়ে সমাজ আজ থরথর করে কাঁপছে। ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা উদ্বেগজনক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মাত্রা ২০১৭ সালেও ব্যাপকহারে ছিল।
আমরা গণতন্ত্র বিকাশ ও প্রতিষ্ঠার কথা বলি, কিন্তু গণতন্ত্রচর্চা করি না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি গণতন্ত্রচর্চা না থাকে, তবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে কী করে। প্রত্যাশা করি, নতুন বছর হোক গণতন্ত্রচর্চার বছর, অর্থনৈতিক উন্নয়নের বছর। ব্যক্তিচরিত্র বদল ও আত্মসমালোচনাও আত্মমূল্যায়নের বছর। নতুন বছরে নতুন করে সম্ভাবনা তৈরি হয়, আবার উবে যায়। আবার সম্ভাবনা তৈরি হয়, আবার উবে যায়। এই তৈরি হওয়া এবং উবে যাওয়ার মধ্যেই আমাদের দিনযাপন-বেঁচে থাকা। আমরা ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই। যে বাংলাদেশের জন্য বাঙালি এত সংগ্রাম, সাধনা ও আত্মত্যাগ করেছে, রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে, একাত্তরে ত্রিশ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে, লাখ লাখ মা-বোন ইজ্জত হারিয়েছে। এত ত্যাগ-তিতিক্ষা, এত রক্তের বিনিময়ে একটি স্বাধীন বাংলাদেশ পাওয়া।
দেশের উন্নয়ন যেমন সাধারণ মানুষকে আশান্বিত, আপ্লুত করে, মানুষের কর্মস্পৃহা বাড়ায়Ñ তেমন ব্যর্থতাও গ্রাস করে। দেশে যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা না যায় তাহলে একটি দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে তা প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। আমরা চাইব, শেখ হাসিনার সরকার টানা তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে। মনোযোগী হবে গণতন্ত্র আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষায়। নির্বাচনী ইশতেহারে কর্মসংস্থানের যে প্রতিশ্র“তি দেয়া হয়েছে তাও পূরণ করবে। বাংলাদেশের জনগণের শান্তি নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নের রূপকার হিসেবে শেখ হাসিনা বিশ্বখ্যাত হোক এই প্রত্যাশা করা অসঙ্গত নয়। কারণ একমাত্র তিনিই বিশ্বের দীঘর্স্থায়ী নারী সরকারপ্রধান।
তবে এটা সত্য, যারা রাষ্ট্র চালান এবং সহযোগিতা করেন, সেসব রাজনৈতিক দল কোনোভাবেই ব্যথর্তার দায় এড়াতে পারে না। কেননা সাধারণ মানুষের শান্তি ও কল্যাণের জন্য যে রাজনীতি করার কথা, সেখানে রাজনৈতিক মতবিরোধে সাধারণ মানুষই জিম্মি হয়ে পড়লে তার মতো পরিতাপের আর কিছুই হতে পারে না। তারপরেও বলব আগামী দিনগুলো সমৃদ্ধি বয়ে আনুক জাতির জীবনে। নতুন বছরে দেশের প্রতিটি মানুষের জীবন সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক নতুন সরকারের কর্মোদ্দীপনায়, দেশ ও জাতির সুনাম আন্তজাির্তক পরিম-লে আরও বিস্তার লাভ করুক এ প্রত্যাশা আমাদের। আমরা চাই নতুন সরকার জনগণের প্রত্যাশা, আবেগ ও অনুভূতিকে যথাযথ মূল্যায়ন করে দেশটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে। দেশ ও জাতির মঙ্গলে সবার ভিতরে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত দেশপ্রেম জাগ্রত হোক, খুলে যাক সম্ভাবনার নতুন দুয়ারÑ নতুন বছরে এ প্রত্যাশাই করছি।