মো.শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর থেকে :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের একটি প্রকল্পের কাজ এখনো শুরুই হয়নি। এতে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছেন আগামী ২/১ দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।
জানাগেছে, জগন্নাথপুর উপজেলা পাইলগাঁও ইউনিয়নের অলইতলি গ্রাম এলাকায় প্রতি বছর বাঁধ নির্মাণ করা হলেও বর্ষায় কুশিয়ারা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে ভেঙে যায়। তাই এবার একটু সরিয়ে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কুশিয়ারা নদীর পাড় এলাকা থেকে জমির উপর দিয়ে গ্রামের ভেতরের রাস্তা পর্যন্ত নতুন বাঁধ নির্মাণ হলে অনেকটা নিরাপদ থাকবে। ২৩ লাখ ৪ হাজার টাকা ব্যয়ে নতুন এ প্রকল্পের কাজ পায় ৪১নং পিআইসি কমিটি। এ কমিটির সভাপতি হলেন হাজী সুন্দর উদ্দিন। সদস্য রয়েছেন পাইলগাঁও ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নজম উদ্দিন সহ কয়েকজন।
এদিকে-সরকার বেধে দিয়েছে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। সরকারি বেধে দেয়া সময় ঘনিয়ে আসলেও এ প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় স্থানীয় কৃষক সহ জনমনে আতঙ্ক দেখা দেয়। স্থানীয় একাধিক কৃষক-জনতা বিষয়টি জানালে ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এখনো কাজ শুরুই হয়নি। এতে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে নাম প্রকাশ না করে বলেন, উপজেলার অন্য অঞ্চলে বাঁধের কাজ শেষ পর্যায়ে থাকলেও আমাদের কাজ এখনো শুরুই হয়নি। এখানে বাঁধ না হলে অরক্ষিত থাকবে হাওর। এদিকে পানি ঢুকে এ হাওরের সাথে অন্য হাওরও তলিয়ে যাবে। এমনিতেই এটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। কুশিয়ারা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বাড়ি-ঘর ও রাস্তা-ঘাট বিলিন হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। তাই হাওরের ফসল রক্ষায় এখানে যতো দ্রুত সম্ভব বাঁধ নির্মাণ করতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান।
এ সময় ৪১নং পিআইসি কমিটির সদস্য পাইলগাঁও ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নজম উদ্দিন বলেন, আমরা এখানে বাঁধ নির্মাণের জন্য এস্কেভেটর মেশিন সহ সব ধরণের যন্ত্রপাতি ও শ্রমিক আনলেও কাজ শুরু করতে পারিনি। সকল জমির মালিকগণ অত্যান্ত আন্তরিকতার সাথে হাওরের ফসল রক্ষায় তাদের জমি দিলেও প্রবাসী সহ ৩ জন মালিক বাঁধা-আপত্তি করেন। যে কারণে এখন পর্যন্ত কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জানা আছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এখনো সময় আছে, বাধা-আপত্তি না থাকলেও দ্রুত কাজ শেষ করা যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারি প্রকৌশলী (এসও) মোহাম্মদ হাসান গাজী জানান, এখানে জমির মালিকানা সংক্রান্ত সমস্যায় কাজ শুরু করা যায়নি। তবে প্রবাসী সহ জমির মালিকদের সাথে আলোচনাক্রমে সমস্যার সমাধান হয়েছে। আগামী ২/১ দিনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে। এতে চিন্তিত বা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বাঁধ নির্মাণ হবে।