বেকার ভাতা একটি মহৎ উদ্যোগ

61

সর্বসাধারণের জীবনমান উন্নয়ন কল্পে সরকার গৃহীত অনেক কর্মপরিকল্পনা দৃশ্যমান হচ্ছে। ভাতা দেয়ার ব্যাপারেও সরকারের সদিচ্ছা ইতোমধ্যেই জনসমক্ষে প্রতীয়মান। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা প্রদান করে অনেক যুদ্ধাহত ও বেকার মুক্তিযোদ্ধার জীবন যেমন সুরক্ষিত হয়েছে, তেমনি স্বামীহারা অনেক নারী তাদের দুঃসময়ে সরকারী ভাতায় কিছুটা নিশ্চিত জীবন কাটাতে পারছে। একটা বয়সের পর সন্তানের বোঝা হওয়া ছাড়া বয়স্কদের কোন গতি থাকে না। সেখানেও সরকার তার কর্মযোগকে সম্প্রসারিত করে বিধবাদের প্রতি সহৃদয় বিবেচনায় এই অসহায় শ্রেণীকে নতুন জীবন দিতে ভাতার ব্যবস্থা করে। নতুন করে আরও এক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে দেশের বেকারদের ন্যূনতম স্বাচ্ছন্দ্য দিতে ‘বেকার ভাতা’ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ‘সামাজিক নিরাপত্তা (ব্যবস্থাপনা) আইন ২০১৯’ শীর্ষক নতুন এক আইনী বিধি চালু করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যা বেকার ভাতা নামক একটি প্রয়োজনীয় সূচকে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
এই খসড়াটি আইনী অনুমোদন পেলে দরিদ্র নাগরিকদের জীবনমান সামাজিক নিরাপত্তার বলয়ে চলে আসবে। বিভিন্ন সূচকে প্রদান করা এই ভাতা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতিদিনের যাপিত জীবনকে অনেকটা সহনীয় এবং নিরাপদ ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করবে। সামাজিক ভাতা, খাদ্য নিরাপত্তা ও দুর্যোগ সহায়তা, সামাজিক বীমা, শ্রম ও জীবিকায়ন, মানব উন্নয়ন, সামাজিক ক্ষমতায়ন ও প্রশিক্ষণ এভাবে পাঁচটি ক্লাস্টারে চিহ্নিত করা হয়েছে নতুন তৈরি করা এই ‘বেতন ভাতা’র খসড়া আইনে। আইনটির সুফল যাতে যথার্থ মানুষের দ্বারে পৌঁছায় তার জন্যও সরকারী ব্যবস্থাপনায় কমিটি গঠন করা হবে। শুধু তাই নয়, সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সুবিধাপ্রাপ্তির যোগ্যতা- অযোগ্যতার শর্তগুলো স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা থাকবে। সুতরাং নির্ধারিত যোগ্যতার শর্ত পূরণ হলেই উদ্দীষ্ট ব্যক্তি সামাজিক নিরাপত্তা প্রাপ্তির আবেদন করার সুযোগ পাবে। তার পরেও যাচাই-বাছাই হবে নির্ধারিত স্থানের জন্য গঠিত কমিটির মাধ্যমে। এমন একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়ার শুরু এবং বাস্তবায়ন সত্যিই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ভাতার জন্য নির্ধারিত প্রার্থীদের যোগ্য বিবেচনায় তাদের অবহিত করাও একান্ত জরুরী। বেকার ভাতা দেয়ার ব্যাপারটি ‘সামাজিক বীমা ক্লাস্টারে’র আওতায়, যার নেতৃত্বে আছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। শ্রমজীবী মানুষের জন্য বার্ধক্য, পেনশন, বেকারত্ব ভাতা, দুর্ঘটনা, পঙ্গুত্ব, মাতৃত্বঝুঁকির বিষয়গুলোর ব্যাপারে বিশেষ নজরদারিতে থাকবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। উদ্যোগটি অত্যন্ত মহৎ এবং জনকল্যাণমূলক। সময়োপযোগী এমন পদক্ষেপ দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য একটি ইতিবাচক জীবন-যাপনে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলা যায়।