মান সম্মত অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত হোক

45

বনানীর বহুতল ভবনের অগ্নিকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই আগুনে পুড়ল গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটের কাঁচাবাজার। সৌভাগ্য যে এখানে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। অল্প সময়েই আগুন নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামান্য কিছু অর্থ খরচ করলেই বহুতল ভবনে আগুনের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। বনানীর ভবনটির প্রতিটি তলায় ছিল বাণিজ্যিক অফিস। সেগুলোতে কাজ করে কয়েক হাজার মানুষ। ঢাকার বহুতল ভবনগুলোতে যদি জরুরি নির্গমন পথ থাকে তাহলে অগ্নিকাণ্ডের শুরুতেই ভবনে অবস্থানরত মানুষ সহজেই বেরিয়ে আসতে পারে। ঢাকা মহানগরীর বেশির ভাগ বহুতল ভবনেই জরুরি নির্গমন পথ আছে কি না সে বিষয়টি এখনই খতিয়ে দেখা দরকার।
১৯৯৬ সালে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০০৮ সালে আবার তা সংশোধন করা হয়েছে। এই আইনে বহুতল ভবনে অগ্নিনিরাপত্তায় কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে বলা আছে। কোনো ভবনের নকশা অনুমোদনের সময়ই সেসব দেখতে হবে। সব ভবন সঠিকভাবে নির্মিত হচ্ছে কি না, সব শর্ত মানা হচ্ছে কি না সেসব দেখার জন্যও সরকারের বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। তারা কি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে? বনানীর অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা ২৬ হয়েছে। অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। এই হতাহতের দায় কার? স্থানীয় প্রশাসন বা সরকারের নির্দিষ্ট সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে কি? ঢাকার বেশির ভাগ ভবনে অগ্নিনির্বাপণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকার পরও কেন ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না এমন আরো অনেক প্রশ্নই আজ উঠে আসছে। এ অবস্থা যদি চলতেই থাকে তাহলে আবারও হয়তো অগ্নিকাণ্ডে অনেক মানুষের মৃত্যু হবে। এটাই কি আমাদের নিয়তি? না হলে নিমতলী, তাজরীন ফ্যাশনস, চকবাজারসহ অতীতের বড় অগ্নিকাণ্ডগুলোর পর দেওয়া আশ্বাস-প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এত উদাসীনতা কেন?
আমরা চাই, সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে উদ্যোগ নেওয়া হোক। প্রতিটি বহুতল ভবনে মানসম্মত অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। মানুষকে সচেতন করার জন্য নিয়মিত মহড়ার ব্যবস্থা করা হোক। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সংস্থাগুলোর কাছে আমরা দায়িত্বশীলতা আশা করি।