নগরীর রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে হিজড়াদের উপদ্রব বৃদ্ধি, মানুষজন অতিষ্ঠ

5

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর রাস্তাঘাট, বাসা বাড়ি, মানুষজনকে নাজেহালসহ দোকানপাটে হিজড়াদের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। ইদানীং তাদের আচরণ বদলে গেছে।
হিজড়াদের কেউ কেউ অভিযোগ করছে, নগরীসহ সিলেটে অনেক নকল হিজড়া আছে, যাদের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিনা পরিশ্রমে অর্থ উপার্জন করা। ট্রাফিক সংকেতে যানবাহন থামার পর হিজড়ারা সামনে এসে দাঁড়ালে যাত্রীদের কিছু করার থাকে না। তাদের সঙ্গে তর্ক করলে যাত্রীদের আরও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়।
গতকাল বুধবার দেখা যায়, হিজড়াদের একটি দল নগরীর মেন্দিবাগ ও নাইওরপুল মোড়ের চতুর্দিকে সিগন্যাল পড়লেই দৌড়ে এসে যানবাহনে থাকা যাত্রীদের কাছে টাকা দাবি করছে, না দিলে যাত্রীদের অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দিচ্ছে।
হিজড়ারা বলে, গ্রামাঞ্চলে কিংবা জেলা শহরগুলোয় হিজড়াদের একঘরে হয়ে থাকতে হয়। সে কারণে তারা মহানগরগুলোয় চলে আসে। এদিক থেকে ঢাকা তাদের সবচেয়ে পছন্দ। সদ্য জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর খবর পেলেই বাসা-বাড়িতে চলে আসছে হিজড়ারা। তাদের দাবির পরিমাণ অর্থ না দিলে বিশৃঙ্খলা শুরু করে। হুমায়ুন রশিদ চত্বর, মেন্দিবাগ পয়েন্ট, নাইওরপুল পয়েন্ট, দক্ষিণ সুরমার তেতলি এলাকার সুনামগঞ্জমুখি বাইপাস, তেলিবাজার, সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কের পারাইরচক বাইপাসসহ প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে এমন ঘটনার খবর জানা যায়।
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বা হিজড়াদের উৎপাত চাঁদাবাজি চরম আকার ধারণ করেছে। তাদের অল্লীল আচরণ ও প্রকাশ্যে চাঁদাবাজিতে বেজায় অতিষ্ঠ সিলেটবাসী। নগরীসহ শহরতলির বিভিন্ন রাস্তা ও মোড়ে পুলিশের সামনে তারা বিয়ের গাড়িবহর আটকে এমন দৌরাত্ম্য চালালেও কোনো ভূমিকা নিচ্ছে না পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে হিজড়ারা ৪-৫ জন করে দাঁড়িয়ে থাকে। কোনো বিয়ের গাড়িবহর আসলেই সামনে দাঁড়িয়ে যায় তারা। হাজার-পাঁচ শ’ নয়, ৪-৫ হাজার টাকার কম তারা রাস্তা ছাড়ে না গাড়িবহরের। এভাবে বিভিন্ন রাস্তা এবং মোড় ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে দোকানে দোকানে চাঁদাবাজি করে বেড়ায় হিজড়ার দল। তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দিলে চড়াও হয় ব্যবসায়ীদের উপর। এতে চক্ষুলজ্জার কারণে সাধ্যের বাইরে হলেও হিজড়াদের চাহিদামতো চাঁদা দিয়ে বিদায় করেন ব্যবসায়ীরা। অনেক সময় হিজড়াদের হাতে অনেকেরই লাঞ্ছিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে হিজরা কল্যাণ সংস্থার সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি হিজরা সুন্দরী জানান, টাকা না তুলে তারা নিরুপায়। তাদের আয়-রোজগারের কোনো সুযোগ নেই। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছে। ইদানীং কিছু নকল হিজড়ার কথাও বলছে অনেকে, যারা মূলত পুরুষ কিন্তু হিজড়া সেজে টাকা আদায় করছে।
এ ব্যাপারে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, পুলিশের সামনের তাদের উৎপাতের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। হিজরাদের উৎপাত যদি এখন বেড়ে যায় তবে তাদের নিয়ে বৈঠকের ব্যবস্থা করা হবে বলে পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান।