প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিল শনিবার, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল করা, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো, গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পাওয়া, পশ্চিমবঙ্গের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি অর্জন এবং সরকারের বিভিন্ন অর্জনে অবদান রাখায় তাঁকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাঁর দল আওয়ামী লীগ এ আয়োজন করেছিল।
প্রদত্ত সংবর্ধনা-সম্মাননা বাংলাদেশের মানুষকে উৎসর্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের কলি উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘এ মণিহার আমায় নাহি সাজে…।’ জনগণ কতটুকু পেল সেটাই তাঁর কাছে সর্বাধিক বিবেচ্য বিষয়। এর বাইরে তাঁর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে আওয়ামী লীগকে গোছানো এবং কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সামনে অগ্রসর হওয়ার ইতিহাস তুলে ধরেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে তাঁর অভিযাত্রার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করাই আমার লক্ষ্য।…এই সংবর্ধনা আমি উৎসর্গ করছি বাংলার জনগণকে, বাংলার মানুষকে।’
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে দেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছে। আর সে কারণেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আসতে পেরেছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা এবং গ্রামে শহরের মতো নাগরিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করার কথা বলেন। এ সবই পূরণ হবে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের আশার কথাও ব্যক্ত করেন তিনি।
দেশের জন্য, দশের জন্য উন্নয়ন-চিন্তা করাই রাজনীতিকের কর্তব্য এবং ক্ষমতাসীন হলে সেসব পূরণ করা রাজনীতিকের দায়িত্ব। জনগণের সমর্থন-সহযোগিতা নিয়েই কাজ করতে হয়, তাই অর্জনের জন্য প্রশংসা-সংবর্ধনা রাজনীতিক পেলেও মূল প্রাপক জনগণ। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে সেই মহানুভবতাই প্রকাশ পেয়েছে।
আমরা আশা করি, বাংলাদেশের এই অগ্রগতি একটি স্থায়ী ও সুদৃঢ় ভিত্তি পাবে। এ জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আইনের শাসন ও গণতন্ত্র চর্চার উন্নয়ন, স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠা, দক্ষ ও যোগ্য নাগরিক গড়ে তোলার উপযোগী মানসম্মত শিক্ষাসহ সামাজিক উন্নয়নের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।