স্পোর্টস ডেস্ক :
গত ম্যাচে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তুতার ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। ব্যাটিং-বোলিংয়ে দুঃস্বপ্নের দিনে বড় ব্যবধানে হেরে গেল বাংলাদেশ। রবিবার পচেফস্ট্রুমে সফরের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সাকিব আল হাসানরা হারলো ৮৩ রানে। কোনো জয় ছাড়াই দেশে ফিরতে হচ্ছে টাইগারদের। এই সফরে মোট দুইটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও দুইটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে সবক’টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। মানে তিনটি সিরিজেই হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগাররা।
দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ২২৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে ব্যাট করতে নেমে ১৮.৩ ওভারে ১৪১ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন সৌম্য সরকার। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে বিউরান হেন্ডরিকস ১টি, জেপি ডুমিনি ২টি, রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ১টি, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ১টি, অ্যারোন ফাঙ্গিসো ২টি ও আন্দিল ফেহলাকওয়েও ১টি করে করে উইকেট নেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ২২৪ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ডেভিড মিলার সেঞ্চুরি করেন। ৩৬ বল খেলে ১০১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন ডেভিড মিলার।
এই রেকর্ড গড়ার দিনে সাতটি চার ও নয়টি ছক্কা মারেন মিলার। ইনিংসের ১৯তম ওভারে ৩১ রান নেন তিনি। ওভারের প্রথম পাঁচ বলে ছক্কা হাঁকান মিলার। শেষ বলে নেন এক রান। এই ওভারে বোলার ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
ডেভিড মিলারের আগে ৪৫ বলে সেঞ্চুরি করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডের মালিক ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি। মিলার ছাড়াও আজ ৫১ বল খেলে ৮৫ রান করেন হাশিম আমলা। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব আল হাসান ২টি ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ২টি করে উইকেট নেন।
বড় লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় ৩৭ রানে পড়ে যায় চারটি উইকেট। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। চার বল খেলে ছয় রান করেন তিনি। আর চতুর্থ ওভারে জেপি ডুমিনির বলে বোল্ড হলেন সাকিব। চার বল খেলে তিনি করেন ২ রান।
পঞ্চম ওভারে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন মুশফিকুর রহিম। পাঁচ বল খেলে তিনি করেন ২ রান। ষষ্ঠ ওভারে জেপি ডুমিনির বলে বিউরান হেন্ডরিকসের হাতে ক্যাচ হলেন সাব্বির রহমান।
এরপর সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। নবম ওভারে অ্যারোন ফাঙ্গিসোর বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বিউরান হেন্ডরিকসের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য সরকার। ২৭ বল খেলে ছয়টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৪৪ রান করেন তিনি।
দলীয় ৯৩ রানে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের বলে রব্বি ফ্রাইলিঙ্কের হাতে ধরা পড়েন লিটন দাস। তিনি করেন ৯ রান। ১৩তম ওভারে অ্যারোন ফাঙ্গিসোর বলে স্ট্যাম্পিং হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি করেন ২৪ রান। ১৮তম ওভারে আন্দিল ফেহলাকওয়েওর বল তুলে মারতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতেই ক্যাচ হন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১০ বল খেলে ১৩ রান করেন তিনি। একই ওভারে রান আউট হন তাসকিন আহমেদ। ১৯তম ওভারে বিউরান হেন্ডরিকসের বলে হাশিম আমলার হাতে ধরা পড়েন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৮৩ রানে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস: ২২৪/৪ (২০ ওভার)
(হাশিম আমলা ৮৫, মাঙ্গালিসো মোসেহলে ৫, জেপি ডুমিনি ৪, এবি ডি ভিলিয়ার্স ২০, ডেভিড মিলার ১০১*, ফারহান বিহারডাইন ৬*; সাকিব আল হাসান ২/২২, তাসকিন আহমেদ ০/৪১, মেহেদী হাসান মিরাজ ০/৪৬, রুবেল হোসেন ০/৫১, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ২/৫৩, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০/১০)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৪১ (১৮.৩ ওভার)
(ইমরুল কায়েস ৬, সৌম্য সরকার ৪৪, সাকিব আল হাসান ২, মুশফিকুর রহিম ২, সাব্বির রহমান ৫, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২৪, লিটন দাস ৯, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ২৩, মেহেদী হাসান মিরাজ ১৩, তাসকিন আহমেদ ৪, রুবেল হোসেন ১*; বিউরান হেন্ডরিকস ১/২৮, জেপি ডুমিনি ২/২৩, রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ১/৯, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ১/২৭, অ্যারোন ফাঙ্গিসো ২/৩১, আন্দিল ফেহলাকয়েও ১/২১)।