স্পোর্টস ডেস্ক :
আগেই সুপার ফোর নিশ্চিত হয়ে ছিল বাংলাদেশের। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি তাই টাইগারদের জন্য ছিল নিয়মরক্ষার ম্যাচ। আর এই ম্যাচে লজ্জাজনকভাবে হেরে গেল বাংলাদেশ। আফগানিস্তান ম্যাচটি জিতে নিল ১৩৬ রানে। এই জয়ের ফলে ‘বি’ গ্রুপে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো আফগানিস্তান। আর গ্রুপ রানার্স আপ হলো বাংলাদেশ।
এর আগে শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯১ রানে জয় পেয়েছিল আফগানিস্তান। সুপার ফোরের ম্যাচে আজ (শুক্রবার) দুবাইতে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। আর আবুধাবিতে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান। দুইটি ম্যাচই শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে পাঁচটায়।
এশিয়া কাপে বৃহস্পতিবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের দেয়া ২৫৬ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪২.১ ওভারে ১১৯ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন সাকিব আল হাসান। ২৭ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। আফগানিস্তানের বোলারদের মধ্যে রশীদ খান নয় ওভার বল করে ১৩ রান দিয়ে দুইটি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া মুজিব উর রহমান ২টি, মোহাম্মদ নবী ১টি, গুলবদিন নাইব ২টি, রহমত শাহ ১টি ও আফতাব আলম ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায় দলীয় ১৫ রানে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মুজিব উর রহমানের বলে আফতাব আলমের হাতে ক্যাচ হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ওয়ানডেতে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা এই ব্যাটসম্যান করেন সাত রান। পঞ্চম ওভারে আফতাব আলমের বলে এলবিডব্লিউ হন লিটন দাস। তিনি করেন ছয় রান।
ইনিংসের ১৩তম ওভারে গুলবদিন নাইবের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মুমিনুল হক। অবশ্য আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। আফগানিস্তান রিভিউ নিয়ে সফল হয়। ১৭ বলে নয় রান করেন মুমিনুল হক। ১৫তম ওভারে গুলবদিন নাইবের বলে বোল্ড হন মোহাম্মদ মিথুন।
২৪তম ওভারে রশীদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হন সাকিব আল হাসান। তি
নি করেন ৩২ রান। ৩০তম ওভারে রশীদ খানের বলে বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। রিয়াদ করেন ২৭ রান।
দলীয় ১০০ রানে রহমত শাহর বলে হাশমতউল্লাহ শহীদির হাতে ধরা পড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ১১০ রানে মোহাম্মদ নবীর বলে আফতাব আলমের হাতে ক্যাচ হন মাশরাফি বিন মুর্তজা। দলীয় ১১৯ রানে রান আউট হন আবু হায়দার রনি। দলীয় ১১৯ রানেই মুজিব উর রহমানের বলে এলবিডব্লিউ হন রুবেল হোসেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৫৫ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। বোলিং অবশ্য বাংলাদেশ শুরুটা দারুণ করেছিল। কিন্তু সেই ভালোটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা।
অষ্টম উইকেট জুটিতে ৯৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন দুই আফগান ব্যাটসম্যান গুলবদিন নাইব ও রশীদ খান। ৩৮ বলে ৪২ রান করে অপরাজিত থাকেন গুলবদিন নাইব। ৩২ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন রশীদ খান। ওয়ানডেতে এটি তার তৃতীয় অর্ধশত।
এর আগে হাফ সেঞ্চুরি করেন হাশমতউল্লাহ শহীদি। ৫৮ রান করে আউট হন তিনি। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সাকিব আল হাসান ১০ ওভার বল করে ৪২ রান দিয়ে চারটি উইকেট শিকার করেন। অভিষেক ম্যাচে ৯ ওভার বল করে ৫০ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার করেন আবু হায়দার রনি। এছাড়া একটি উইকেট শিকার করেন রুবেল হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ১৩৬ রানে জয়ী আফগানিস্তান।
আফগানিস্তান ইনিংস: ২৫৫/৭ (৫০ ওভার)
(মোহাম্মদ শাহজাদ ৩৭, ইহসানুল্লাহ ৮, রহমত শাহ ১০, হাশমতউল্লাহ শহীদি ৫৮, আসঘার আফগান ৮, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ১৮, মোহাম্মদ নবী ১০, গুলবদিন নাইব ৪২*, রশীদ খান ৫৭*; রুবেল হোসেন ১/৩২, আবু হায়দার রনি ২/৫০, মেহেদী হাসান মিরাজ ০/২১, মাশরাফি বিন মুর্তজা ০/৬৭, সাকিব আল হাসান ৪/৪২, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/১৮, মুমিনুল হক ০/১৫, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০/৫)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১১৯ (৪২.১ ওভার)
(লিটন দাস ৬, নাজমুল হোসেন শান্ত ৭, সাকিব আল হাসান ৩২, মুমিনুল হক ৯, মোহাম্মদ মিথুন ২, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২৭, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২৬*, মেহেদী হাসান মিরাজ ৪, মাশরাফি বিন মুর্তজা ০, আবু হায়দার রনি ১, রুবেল হোসেন ০; আফতাব আলম ১/১১, মুজিব উর রহমান ২/২২, গুলবদিন নাইব ২/৩০, মোহাম্মদ নবী ১/২৪, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ০/১২, রশীদ খান ২/১৩, রহমত শাহ ১/৭)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: রশীদ খান (আফগানিস্তান)।