বাংলাদেশ- ভারত ২য় কোয়ার্টার ফাইনাল ॥ নয়া ইতিহাস সৃষ্টির ম্যাচ টাইগারদের

46

wo_58465_0স্পোর্টস ডেস্ক :
একটু পিছনে ফিরে যাই। ১৯৯৭ সালে কেনিয়াকে হারিয়ে আইসিসি ট্রফি জিতে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। ঐ জয়টা ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের জন্য মাইলফলক। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রথম বিশ্বকাপেই তখনকার শক্তিধর পাকিস্তানকে হারানো, ওয়ানডে স্ট্যাটাস, পরে অভিজাত টেস্ট পরিবারে ঢুকে পড়া। এ যেন স্বপ্নের মতো।
আজ ( বৃহস্পতিবার) মেলবোর্নে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটার গুরুত্ব যেন আরও বেশী। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচই নয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচও বটে। ভারতকে হতাশ করে এ ম্যাচে জিতলে নয়া অধ্যায়, নয়া ইতিহাস রচিত হবে। বাংলাদেশ প্রবেশ করবে বিশ্ব ক্রিকেটের  নতুন মঞ্চে।
ম্যাচটার জন্য উন্মুখ গোটা দেশ। জয় দেখার জন্য তারা পাগল পারা। মাশরাফি থেকে শুরু করে দলের প্রতিটা সদস্যও প্রস্তুত। তারা আরেকটা সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত। কিন্তু পরাক্রমশালী ভারতকে হারানো যে হিমালয় জয় করার চেয়েও কঠিন, কষ্টসাধ্য।
মার্টিন ক্রো থেকে স্যার রিচার্ড হ্যাডলি। সৌরভ গাগুলী থেকে ভিভিয়ান রিচার্ড। তারা বাংলাদেশের তেমন কোনো সম্ভাবনা না দেখলেও ম্যাচটাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে মাঠে নামছে ধোনির দল। ভারতীয় দলের ডিরেক্টর রবী শাস্ত্রী বলেছেন, ‘প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবার চেয়ে বোকামি কিছু হতে পারে না’।
মারকুটে ব্যাটসম্যান সুরেশ রায়নাও জানিয়েছেন, তারা ম্যাচটাকে কিছুতেই হাল্কাভাবে নিচ্ছে না। হারলেই বাদ, যে কারণে ভারতের উপর একটা চাপও থাকবে- এমনটা মনে করছেন অনেকে। সুরেশ রায়নার অভিমতও সেটা। বলেছেন, ‘ আসলে নক আউট পর্বের প্রতিটা ম্যাচই চাপের।’
চাপ জিনিসটা ভারত রপ্ত করতে শিখে গেছে বলেই সাম্প্রতিক সময়ে তাদের অনেক সাফল্য। আস্তে আস্তে বাংলাদেশও চাপে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। ইংল্যান্ডকে হারানো, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সমানতালে লড়াই, সেটাই তো প্রমাণ করে।
ওপেনিংয়ে ছাড়া প্রতিটা জায়গাই ভালো করছে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের অফ ফর্ম বেশ মূল্য দিতে হচ্ছে। ভারতের বিপক্ষে দারুণ রেকর্ড ওপেনার তামিমের। অধিনায়ক মাশরাফির আশা, এ ম্যাচেও জ্বলে উঠবেন তামিম। বলেছেন,‘ আসলে এখানকার কন্ডিশনে এবং নতুন বলে ফাস্ট বোলিং খেলা খুবই কঠিন কাজ। সেই কঠিন কাজটাই করতে হচ্ছে ওদের। তবে আশা করি ভারতের বিপক্ষে ভালো সূচনা আসবে।’
শুরুটা ভালো না হলে বিপদ। প্রথমে ব্যাট করলে অন্তত ৩০০ রান না করলে ভারতকে চাপা ফেলা সম্ভব নয়। ব্যাটসম্যানদের যেমন ভালো করতে হবে। জ্বলে উঠতে হবে বোলারদেরও।
এই মেলবোর্নেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাজে ফিল্ডিং এবং ক্যাচ মিসের মহড়া দিয়েছিল বাংলাদেশ। ফিল্ড প্লেসিং নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছিল মাশরাফিকে। ভারত ম্যাচে নিশ্চয়ই এসবের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
মেলবোর্নের উইকেট সাধারণত ব্যাটি সহায়ক। মানে ড্রাই ও ঘাসহীন। এই উইকেটে ব্যাটসম্যানদের অনেক কিছু করার আছে। কিন্তু আবহওয়া উইকেটের চরিত্র পাল্টেও দিতে পারে। আবহওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ম্যাচের দিন বিকালে এবং সন্ধ্যায় বৃষ্ঠি হওয়ার কথা। তবে লাগাতার বৃষ্টি হওয়ার  নাকি সম্ভাবনা নেই। এ কারণে কম ওভারের ম্যাচ হলেও হবে।আর কোনক্রমে বৃহস্পতিবার যদি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয় তাহলে পরের দিন তা হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
২৮ ম্যাচে মাত্র ৩ জয়। ভারতের বিপক্ষে দুর্বল রেকর্ড। তারপরেও প্রেরণা আছে টাইগারদের সামনে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে জিতে ভারতকে বিদায় করে দিয়েছিল বাংলাদেশ।
আর ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে বরাবরই ভালো খেলেন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা। বল হাতে জ্বলে উঠেন মাশরাফি বিন মোর্তুজা। মেলবোর্নেও জ্বলে ওঠার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত, প্রত্যয়ের সঙ্গে জানিয়েছেন তারা।