হাদিস জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র আব্দুল হাই মুহাদ্দিস এর জানাজা সম্পন্ন

4

আতিকুর রহমান, ছাতক

হাদিস জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র বৃহত্তর সিলেটের শতবর্ষী আলেমেদ্বীন, সৎপুর কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত মুহাদিস আল্লামা আব্দুল হাই (ছাতকী হুজুর) এর জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ছাতকের মুক্তিরগাঁও গ্রামের পশ্চিমের মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্টিত হয়।
জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানাজার নামাজে ইমামতি ও দোয়া করেন, খলিফায়ে রামপুরী আল্লামা মানছুরুর রহমান।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় তিনি নিজ বাড়ীতে ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি…. রাজিউন। তিনি প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও সিলেট বিভাগের হাজার হাজার আলিম উলামার শিরতাজ, সিলেটের সৎপুর দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত মুহাদ্দিস, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউপির মুক্তিরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান ও মৃত হানিফা বেগমের ছেলে ও শাহ সুফি মোজ্জামেল আলী (রহ.) মসজিদের সাবেক খতিব আল্লামা আব্দুল হাই (ছাতকী হুজুর)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল (৮৩) বছর। তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে, ৪ মেয়ে, নাতী-নাতনিসহ অসখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
জানা যায়, সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে পূর্ব পাকিস্তান মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৯৬৫ সনে অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। অত:পর দারুল হাদীস সৎপুর আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে ১৯৬৭ সনে আলিম, ১৯৬৯ সনে ফাজিল এবং ১৯৭২ ইংরেজি সনে কামিল হাদীস বিভাগে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন এবং মেধা তালিকায় স্থান দখল করেন তিনি। ১৯৭৩ সালে ২৩ মার্চ ইংরেজি সনে সৎপুর কামিল মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস পদে খেদমতে যোগদানের মাধ্যমে কর্ম জীবন শুরু করেন। ১৯৮১ সালে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত সৎপুর মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল ও মুহাদ্দিস পদে নিয়োজিত ছিলেন। পরবর্তীতে ছাতক জালালিয়া ও দ্বীনের টুক মাদ্রাসায় সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে পর ১ অক্টোবর সালে পুনরায় সৎপুর আলিয়া মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস পদে যোগদান করে ২০১১ সালে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হাদীসের খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। ২০১১সাল থেকে এক মে পযন্ত প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। বিভিন্ন সাময়িকীতে বাংলা ও আরবীতে অনেক প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। তা ছাড়াও কামিল জামাতের কয়টি হাদীস গ্রন্থের আরবি ও উর্দু ভাষায় শরাহ লিখেছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বুরাইয়া কামিল মাদরাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, গোবিন্দনগর ফাজিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী, হাউসা দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আজিজ আহমদ, শাহ সুফি মোজাম্মিল দাখিল মাদরাসার সুপার মুফতি আব্দুস সালাম, সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম তালুকদারসহ হাজার হাজার আলিম উলামা ও মুসল্লিগন উপস্থিত ছিলেন।
তাঁর মৃত্যুতে ছাতক উপজেলার নিবাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ও ছাতক প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন তালুকদার ও সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রনি, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম হিরন, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী রেজাউল করিম রেজা, অর্থ সম্পাদক আতিকুর রহমান, মোশাহিদ আলী, নুর উদ্দিন, নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রবীণ এই আলেমের মৃত্যু সংবাদে সিলেটে ছড়িয়ে পড়লে মাদরাসা অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। মরহুমের রুহুের মাগফিরাত ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।