নাজমুল ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডে, হত্যাকান্ডের দিন ঘটনাস্থলের আশেপাশেই ছিল তার অবস্থান

50

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর মিরাবাজার খারপাড়ায় ভাড়াটে বাসায় মা ও ছেলে খুনের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আবাসন ব্যবসায়ী মো: নাজমুল ইসলামকে (৩২) রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে নাজমুলকে সিলেট চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে হাজির করে তার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার এসআই রোকেয়া খানম। এ সময় আদালতের বিচারক রিমান্ড শুনানি শেষে তার ৭ দিনের মঞ্জুর করেন। গ্রেফতারকৃত নাজমুল সদর উপজেলার টুলটিকর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মুক্তিরচকের গ্রামের আব্দুল করিমের পুত্র।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে মেজরটিলা এলাকা থেকে নাজমূল ইসলামকে গ্রেফতার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার এসআই রোকেয়া খানমসহ পুলিশের একটি দল। তিনি বলেন, এ জোড়া খুনের ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার, অস্ত্রের যোগাদাতাসহ তার সহযোগী অপরাপর আসামীদের শনাক্ত পূর্বক গ্রেফতারের জন্য ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে উক্ত আদালতে ধৃত নাজমূল ইসলামের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল বুধবার থেকেই তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করছেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
এদিকে, মা ও ছেলে হত্যাকাণ্ডের দিন ঘটনাস্থলের আশেপাশেই ছিলেন গ্রেফতারকৃত নাজমুল। গতকাল বুধবার নাজমুলকে গ্রেফতার পর কোতোয়ালী থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এমনটাই জানিয়েছেন থানার সহকারী কমিশনার গোলাম কাওসার দস্তগীর। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হতে পেরেছি যে, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে নাজমুলের সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং সেদিন তার অবস্থান ঘটনাস্থলের আশেপাশেই ছিল। হত্যাকাণ্ডটি কবে সংঘটিত হয়েছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম কাওসার দস্তগীর বলেন, পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে সময়টা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, নিহত রোকেয়ার সাথে নাজমুলের পরিচয় অনেক দিনের। তারা দু’জন মিলে একটি বিউটি পার্লার করার কথা ছিল এজন্য রোকেয়ার কাছ থেকে সে টাকাও নিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রোকেয়া খানমুসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত রবিবার সকালে নগরীর মিরাবাজার খারপাড়া মিতালী ১৫/জে নম্বর বাসা থেকে পার্লার ব্যবসায়ী রোকেয়া বেগম (৪০) ও তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকনের (১৭) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘাতকরা রোকেয়ার শিশুকন্যা ৫ বছরের রাইসাকেও খুন করতে চেয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। রাইসার গলায় চেপে ধরা হলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে তাকে মৃত ভেবে চলে যায় ঘাতকরা। রাইসার গলা থেকে ঘাতকের আংগুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই জোড়া খুনের ঘটনায় রোকেয়ার ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। নিহত রোকেয়া বেগম জগন্নাথপুর থানার কলকলিয়া গ্রামের হেলাল মিয়ার স্ত্রী।