অস্থির চালের বাজার

3

কাজির বাজার ডেস্ক

হঠাৎ করেই চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। বিভিন্ন খুচরা বাজারে মানভেদে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চালের হঠাৎ এ দরবৃদ্ধিতে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা মিল মালিকদের দায়ী করেছেন। অন্যদিকে মিল মালিকরা বলছেন, অবৈধ মজুদদারির কথা। তারা বলেছেন, অবৈধভাবে ধান, চালের মজুতের কারণে দাম বাড়ছে। আমন মৌসুমের শেষে এসে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা এর সুফল না পেলেও বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চাল ইরি-স্বর্ণা কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়ে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, মাঝারিমানের চাল পাইজাম-লতা কেজিতে তিন থেকে চার টাকা বেড়ে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা ও সরু চাল নাজিরশাইল-মিনিকেট কেজিতে পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়ে ৬৬ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে চালের দাম বাড়ার তথ্য তুলে ধরেছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে দেশের চালের অন্যতম বড় মোকাম দিনাজপুরে বস্তাপ্রতি (৭৫ কেজি) ধানের দাম বেড়েছে ২০০ টাকা থেকে আড়াই শ টাকা। আর ধানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চালের দাম।
ভরা আমন মৌসুমে ধানের দাম তেমন বেশি না থাকলেও এখন মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এর সুফল পাচ্ছেন না কৃষক। বাজারে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক খোরশেদ আলী জানান, আবাদের সময় দোকানে থাকা বকেয়া সারের দাম আর শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করতে কাটা-মাড়াই শেষেই ধান বিক্রি করতে হয়েছে। এখন কৃষকের কাছে ধান নেই। ধান আছে মজুতদারদের কাছে। তাই ধানের দাম এখন বাড়লে কৃষকের তেমন লাভ নেই, লাভ মজুতদারদের।
এদিকে ধানের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে বেড়েছে চালের দাম। চালের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অটো মেজর ও হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারি বলেন, অনেক ব্যবসায়ী নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে স্টক বিজনেসের নামে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য মজুত করছেন। মিল মালিকরাই এসব ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে আরও বেশি দামে ধান কিনছেন। চালের বাজার বেশি হওয়ার এটাই মূল কারণ। তাছাড়া মিল মালিকদের উৎপাদন খরচও বেড়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গত রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, মিলল মালিকরা প্রতিযোগিতা করে ধান কেনায় বাজারে চালের দাম বাড়ছে। তবে কেউ অবৈধভাবে প্রতিযোগিতা করে ধান কিনলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের গুদামে চালের যথেষ্ট মজুত আছে বলে জানান তিনি। একই দিন সচিবালয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, বাংলাদেশের বাজারে কোনো সিন্ডিকেট থাকতে পারবে না। কেউ কোনো কারসাজি করে বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মজুতদারদের শক্ত হাতে দমন করা হবে।