তাহিরপুরে গৃহবধূকে হত্যার চেষ্টা, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার

13

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
তাহিরপুরে এক গৃহবধূকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। পরে ঐ মহিলাকে বাড়ির সামনে নদীর পার থেকে মুখে কসটেপ ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় প্রতিবেশীদের উদ্ধার করা হয়। ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) সুমন আহমদ নামে এক প্রতিবেশীর ফোন দিলে। ঘটনাস্থলে রাতেই থানা পুলিশের উপস্থিতি হয়।
গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে, যৌতুকের দাবি না মেটানোর কারণে স্বামী, শ্বশুর ও তার দুই দেবর মিলে হত্যা চেষ্টার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আর এ ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাতে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের বাদলার পার গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আট মাস আগে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদুলের ছেলে আবু তাহের জান্নাতের (২৮) সঙ্গে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের বাদলার পার গ্রামের কারী নিজাম উদ্দিনের মেয়ে মাইফুল নেছার (২৫)।
বিয়ের পর স্বামী আবু তাহের জান্নাত তার স্ত্রী কে নিয়ে তার শশুর বাড়ির বাদলার পাড় পাশ^বর্তী গ্রাম ভোলাখালিতে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করে আসছিলো। এ সূত্রে আবু তাহের জান্নাতের দুই সহোদর জাকির হোসেন (২৫) ও বাবুল হোসেন (২২) ও তার পিতা তার বাড়িতে থেকে পোল্ট্রি মোরগের ব্যবসা শুরু করেন।
অভিযোগ উঠে বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী আবু তাহের জান্নাত যৌতুক দাবি করলে কয়েক ধাপে যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা পূরণ করেন হতদরিদ্র মেয়ের পরিবারের লোকজন। পরবর্তীতে তাকে আরও টাকা দেয়ার জন্য চাপ দেয় তার স্বামী। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার উপর তার স্বামী নির্যাতন শুরু করে।
এ ঘটনার সূত্র ধরে শুক্রবার মধ্য রাতে তার স্বামী আবু তাহের জান্নাত, তার দুই সহোদর ও বাবা মিলে মাইফুল নেছাকে মুখে কসটেপ লাগিয়ে হাত পা বেধে বাড়ির সামনে ভাঙ্গার খাল নদীতে নিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা বিষয় টের পেয়ে নদীর পারে এগিয়ে গেলে তারা মাইফুল নেছাকে ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন প্রতিবেশীরা। এবং রাতেই তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেলক্সে নিয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন।
গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনা জানতে পেয়ে প্রতিবেশী মো. সুমন আহমেদ রাতে ৯৯৯ কল করে বিষযটি পুলিশকে অবগত করেন। খবর পেয়ে তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্প এ এস আই মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম রাতেই ঘটনাস্থল উপস্থিত হন।
মাইফুল নেছার ছোট ভাই মো. এবায়দুল্লাহ (২০) বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার বোন কে তার স্বামী নির্র্যাতন করে আসছিলো। আজও তাকে তারা সবাই মিলে হত্যার উদ্দেশ্যে নদীতে ফেলে দিতে চেয়েছিল।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবু তাহের জান্নাতের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, ৯৯৯ ফোন পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা উপস্থিত হন। এ বিষয়ে মাইফুল নেছার পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।