রশিদপুর-বিশ্বনাথ-লামাকাজি সড়কে ইট সলিং এর নামে সাগর চুরি

5

আব্দুস সালাম, বিশ্বনাথ থেকে
সিলেট ঢাকা মহা সড়কের রশিদপুর নামক স্থান থেকে সংযোগকারি সড়ক ও জনপদ বিভাগের বিশ^নাথ-লামাকাজি সড়টির মেরামত ও সংস্কারের নামে একাধিকবার টাকা হরিলুট করা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচল নয়, পায়ে হেঁটে যাওয়া ছিল মুশকিল। জরুরী ভিত্তিতে ইট সলিং করে কোন রকম যান চলাচলের সুবিধার্থে ২১ লাখ ২৮ হাজার ৩৯৬ টাকা বরাদ্ধ করে টেন্ডারের মাধ্যমে ইট সলিংয়ের কাজটি দায়িত্ব দেয়া হয় আবিদ মনসুর কনস্ট্রাকশন নামীয় ঠিকাদারী একটি প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু ঠিকাদারি পতিষ্ঠান মাত্র দুই তিন হাজার ইট ও ইটের টুকরা রাস্তায় ফেলে দিতে সরজমিনে দেখা যায়। রশিদপুর-বিশ্বনাথ-রামপাশা-লামাকাজি সড়কের ১১ থেকে ১২ কিলোমিটার এবং ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে গর্ত গুলোর কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট এই স্থানের গর্তগুলোর ইট দিয়ে ভরাট না করে নামমাত্র কাজ করে ঠিকাদার বিল তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন কলছেন, এটা চুরি নয়, সাগর চুরি, স্থানীয় সাংসদ কলেছেন রাস্তার উন্নয়নের নামে ডাকাতি করা হয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এ সড়কের নির্ধারিত চারটি এলাকায় অনুমানিক দেড় লাখ ১নম্বর ইট দিয়ে রাস্তার গর্তগুলো ভরাট করে ইট সলিং করার কথা রয়েছে। যারমধ্যে ফ্ল্যাট সলিং এবং অপরটি এইচবিবি সলিং দ্বারা কাজটি সম্পন্ন করার কথা। কিন্তু কার্যাদেশের ৯দিনের মাথায় নামমাত্র কাজ করে কাজের পর সমাপ্তকরণ সনদও প্রদান করেন সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান। বর্তমানে রাস্তার সংস্কার কাজের কোন চিহ্নই দেখা যাচ্ছেনা।
সংশিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেট সড়ক বিভাগের বিভিন্ন সড়কের সংস্কার কাজের নামে সরকারি টাকা আত্মসাৎ ও লুটপাট চলছে। সম্প্রতি সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের সংস্কার কাজ না করিয়ে ৬ কোটি ১২ লাখ টাকা লুটপাটের ভয়াবহ চিত্রও সংবাদ মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। এমন অনয়ম দুর্নীতি ও সরকারি টাকা আতœসাতের ঘটনা ঘটেছে বিশ্বনাথ-রামপাশা-লামাকাজী রাস্তার সংস্কার কাজে। স্থানীয় লোকজন জানান, কিছুদিন পূর্বে কয়েকজন লোক রাস্তার গর্তে কিছু ইট ফেলতে দেখেছেন। এই ইট ফেলার পর কোন বালু বা ইটকে মাটি দিয়ে ফিট না করার কারণে খানাখন্দে ভরপুর উক্ত সড়কে জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
সড়ক ও জনপথ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগেযোগ করা হলে তিনি তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আবেদ মনসুরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ সড়কের তদারকির দায়িত্বে থাকা সড়ক ও জনপদ উপ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল কবির সাংবাদিকদের বলেন, সড়কটি নির্ধারিত চারটি এলাকায় পুরো কাজ করা হয়েছে। কোন টাকা আতœসাৎ করা হয়নি।
সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, রশিদপুর-লামাকাজি সড়কের কাজের অনিয়ম তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিৎ।
সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান সাংবাদিকদের বলেছেন, সওজের কর্মকর্তারা সংস্কারের নামে যথারীতি ডাকাতি করছেন। ঠিকাদারের নামে আতাত করে সংস্কারের নামে লুটপাট করায় আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রশিদপুর লামাকাজি সড়কে ১লাখ টাকার কাজ না করে ২১লাখ টাকা বিল তুলে ভাগ বাটোয়ারা করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।