চালের পাহাড় অবৈধ মজুদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান বেরিয়ে আসছে লাখ লাখ টন চাল ॥ মজুদকারী আওয়ামী লীগের হলেও ছাড় দেয়া হবে না- খাদ্যমন্ত্রী

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
অবশেষে সারাদেশে প্রশাসনের সাঁড়াশি অভিযানের মুখে বেরিয়ে আসছে অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা হাজার হাজার টন চাল। ধান-চালের সঙ্কট না থাকার পরও শুধু দাম বাড়ানোর কারসাজিতে মুনাফাখোর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নিজস্ব গুদামে লাখ লাখ টন মজুদ করে চালের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। এতে করে অস্থির হয়ে পড়ছে নিত্যপণ্যের বাজার। দেশের প্রধান খাদ্যপণ্য চাল কিনতে হচ্ছে অতিরিক্ত দাম দিয়ে। খুচার বাজারে মোটা চালও ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ কৃষক পর্যায়ে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হয়নি। ফলে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা ঠকলেও চালের অসাধু ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ অবস্থায় ধান-চালের অবৈধ মজুদকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুদদার কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, চালের অবৈধ মজুদকারীদের আর কোন ছাড় নয়! তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবেই। শুধু তাই নয়, মজুদকারী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হলেও কোন ছাড় পাবে না।
জানা গেছে, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ভাল হওয়ার কারণে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চাল আমদানি সীমিত করা হয়েছে। এমননি ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও বাংলাদেশী চাল রফতানির অনুমতি দিচ্ছে না সরকার। ভবিষ্যতে চালের যাতে কোন সঙ্কট তৈরি না হয় সেলক্ষ্যে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে শতাধিক ব্যবসায়ী চাল রফতানির জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও তা বাতিল করে দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীদের কাছে দেশীয় চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ কারণে বছরে কয়েক লাখ টন চাল রফতানি হয়ে থাকে। কিন্তু এবার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে চাল রফতানি বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে চালের দাম বাড়ার পেছনে ছয়টি কর্পোরেট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কারসাজি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াসি অভিযান শুরু করছে প্রশাসন। অনেক মার্কেটে অভিযানের মুখে ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যাচ্ছেন। কোথাও বিপুল অঙ্কের জরিমানা করছে স্থানীয় প্রশাসন। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আটটি টিমের পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর, জেলা প্রশাসকের অধীনে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা নিজস্ব টিম গঠন করে বাজারে অভিযান পরিচালনা করছেন। এতে করে চালের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরবঙ্গ নওগাঁ ও দিনাজপুরে বিপুল পরিমাণ চালের অবৈধ মজুদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া কুষ্টিয়া ও সিলেট চালের অবৈধ মজুদ ধরা পড়ছে। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে চাল কিনে এসব প্রতিষ্ঠান চালের পাহাড় গড়ে তুলেছে। খাদ্যমন্ত্রী সম্প্রতি অভিযোগ করে বলেন, গ্রুপগুলো ধান-চালের ব্যবসায়ী না। ফায়দা লুটতে হঠাৎ মজুদের ব্যবসায় নেমেছে। এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয় লড়াই করছে। এরা চালের প্যাকেট করে বেশি দামে বাজারে বিক্রি করছে। তিনি বলেন, মজুদ পরিস্থিতি বলে দেয় মূল্যবৃদ্ধির কোন কারণ নেই। নির্বাচনের আগে একটা অসাধু মহল এই কাজ করছে। মজুদদারদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। তারা যেই হোক না কোন ছাড় পাবে না।
জানা গেছে, বন্যা ও বৃষ্টির কারণে এবার হাওরে ধানের উৎপাদন কিছুটা কম হলেও সরকারের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তেমন সমস্যা হবে না। সর্বশেষ গত ১৫ মে পর্যন্ত সরকারী মজুদে ১০ লাখ ১৫ হাজার টন চাল ও ১ লাখ ১২ হাজার টন গম ছিল। এছাড়া এবার দেশে ১৮ লাখ টন বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর ৪৯ লাখ ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। আর এ থেকে উৎপাদন হতে পারে ২ কোটি টন। গত বছর বোরো উৎপাদন হয়েছে ১৯৮ লাখ ৮৫ হাজার টন। এছাড়া বছরে দেশে ৩ কোটি ৫৮ লাখ টন খাদ্যশস্যের চাহিদা ছিল, যার মধ্যে ৮০ লাখ টন গমের চাহিদা রয়েছে। অর্থাৎ এবার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বোরো উৎপাদন ও সরকারের সংগ্রহ ও মজুদ সম্ভব বলে আশা করা হচ্ছে। খাদ্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্যশস্যের সরকারী মজুদ ১০ লাখ টনের নিচে গেলে তা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং দাম বাড়তে শুরু করে। এ প্রসঙ্গে খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, স্থানীয় বাজার থেকে বোরো চাল ও ধান সংগ্রহ করায় এই মুহূর্তে চাল আমদানির কথা ভাবা হচ্ছে না। কিন্তু দাম বৃদ্ধির কারণে স্থানীয় বাজার থেকে গম সংগ্রহ করতে না পারায়, আমরা ভারত থেকে ৩ লাখ টন গম আমদানি করছি। নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই ভারতের সঙ্গে এই ৩ লাখ টন গম আমদানির চুক্তি হয়েছিল। এছাড়া ভারত চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশে গম রফতানি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে দেশে খাদ্যশস্যের কোন সঙ্কট নেই।
জানা গেছে, সাধারণত বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এ সময়ে বাজারে চালের দাম সবচেয়ে কম থাকে। কারণ বোরোতে দেশের মোট চালের প্রায় ৫৫ শতাংশই উৎপাদিত হয় এ সময়ে। সরকারী হিসাব বলছে, এবার হাওড়ে ধানের ক্ষতির পরও বোরোতে ভাল উৎপাদন হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, হাওড়ে আগাম পানি এসে যাওয়া ও অতিবৃষ্টির কারণে ৮০ হাজার টন চাল নষ্ট হয়েছে। তার পরও এবার বোরোতে ২ কোটি ৭ লাখ টনের বেশি চাল উৎপাদিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময়ে দাম বাড়ার কথা নয়। ভরা মৌসুমে চালের দাম কেন বাড়ছে, নতুন ধান যাচ্ছে কোথায়-ভোক্তার পাশাপাশি এমন প্রশ্ন তুলেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চালের বাজারে বিশেষ নজর দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন। ভরা মৌসুমে দেশে চালের দাম বেশি কেন, এর পেছনে কারও কারসাজি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে বোরো ধান কাটা হয়। দেশে সারা বছর যে ধান উৎপাদন হয় তার অর্ধেকই বোরো। বৃষ্টিনির্ভর আমন ধানের মৌসুমে ৩৮ শতাংশ ধান উৎপাদন হয় এবং বাকিটা আউশ। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) গবেষক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, বোরো এখন কাটা হচ্ছে বলে আগামী ৩-৪ মাস চালের কোন ঘাটতি থাকবে না। কৃষক যেন আমন চাষে কোন সমস্যায় না পড়ে সেজন্য সরকারের এখন আমন উৎপাদনে মনোযোগ দেয়া উচিত। কৃষক যেন ন্যায্যমূল্যে সার পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
ছয় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর : সারাদেশে সাঁড়াশি অভিযানের মুখে চালের মিলমালিক, আড়তদার, পাইকার এমনকি খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও হাজার হাজার টন মজুদকৃত চাল বেরিয়ে আসছে। মূলত ভোজ্যতেলের মতো এবার চালেও কারসাজি করে কোটি কোটি হাতিয়ে নিতে চায় চক্রটি। দেশের ৬টি কর্পোরেট গ্রুপ সিন্ডিকেট করে ধান-চাল মজুদ করে বেশি দামে বিক্রি করছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এসব প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- এসিআই, আকিজ, বসুন্ধরা, প্রাণ, সিটি ও স্কয়ার গ্রুপ। তারা মিল থেকে বেশি দামে চাল কিনে বেশি দামে বাজারে বিক্রি করছে। এতে দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন খাদ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়ীরা চালের মজুদ করে পাহাড় গড়ে তুলছেন। তবে অভিযানের মুখে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিমের সদস্যরা বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ীদের খুঁজে পাচ্ছে না। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মিনিকেট ও নাজিরশাইলে ২-৪ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। মিনিকেটের কেজি এখন ৬৪-৭০ টাকা এবং নাজিরশাইলের কেজি ৭৪-৭৮ টাকায় ঠেকেছে। বিআর ২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৫৮ টাকা পর্যন্ত। মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণার কেজি ৪৮-৫০ টাকা। কিন্তু বাজারে এ চাল পাওয়া যাচ্ছে কম। কাওরানবাজারের চাটখিল রাইস এজেন্সির এক কর্মকর্তা বলেন, মিলাররা দাম বাড়ানোয় আমাদের বাড়াতে হয়েছে। মিলগেটেই বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের চাল বস্তাপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা দাম বেড়েছে। তবে মিলাররা বলছেন ভিন্ন কথা।
চালকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অটো মেজর এ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম লায়েক আলী জানান, হাওড়ে আগাম পানি এসে যাওয়া ও অতিবৃষ্টির কারণে ধানের ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া এমনিতেও খারাপ ধানের কারণে উৎপাদন কমেছে। অন্যদিকে এ মুহূর্তে সরকারকে চাল দিতে হচ্ছে। বাজারেও নতুন চাল অল্প হলেও ছাড়া হচ্ছে। মিলগেটে দাম ততটা বাড়েনি। কিন্তু পাইকারি ও খুচরায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ধান-চালের অবৈধ মজুদ ঠেকাতে মঙ্গলবার মাঠে নেমেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আটটি দল। সেই সঙ্গে অবৈধ মজুদদারি প্রতিরোধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের আধাসরকারী পত্র দেয়া হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), র‌্যাব ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে মাঠে নামানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর অবৈধ মজুদকারীদের চিহ্নিত করতে মিলগুলোতে তদারকির বিষয়ে ইতোমধ্যেই জেলা পর্যায়ে অনলাইনে বৈঠক হয়েছে। ইতোমধ্যে ভোক্তা অধিকার মাঠে নেমেছে। তিনি বলেন, সয়াবিন তেলের সঙ্কটের সময় আমরা যেভাবে মিল পরিদর্শন করেছি, উৎপাদন-সরবরাহের হিসাব নিয়েছি, সেভাবেই চালের মিলগুলোতেও অভিযান চালানো হবে।
বাজার থেকে চাল কিনে প্যাকেট করে বিক্রি করা যাবে না : দেশের বাজার থেকে চাল কিনে প্যাকেট করে বিক্রি করার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। এজন্য একটি সার্কুলার জারির চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। বুধবার সচিবালয়ে তিনি এ কথা জানান। ওই সময় তিনি বলেন, বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ ও অবৈধভাবে মজুদ ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পর রাজধানীসহ সারাদেশে অভিযান চালাচ্ছে সরকারের বিভিন্ন টিম ও প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাজধানীর কাওরানবাজারসহ বেশকিছু বাজারে চালের আড়তে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ছয়টি প্রতিষ্ঠান ব্যাগিং করে একই চাল যেটা ৬০-৬৫ টাকা পড়ছে, সেটা প্যাকেটজাত করে ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি করছে। একই সঙ্গে আগাম টাকা মিলারদের দিয়ে আসছে, এমনকি প্যাকেটও দিয়ে আসছে নওগাঁ, দিনাজপুর, বগুড়া ইত্যাদি স্থানে। আমরা সেগুলোও বন্ধ করেছি। তিনি বলেন, প্যাকেট করতে লাগে তিন টাকা, বিক্রি করছে ১০-১৫ টাকা বেশি দামে। যারা প্যাকেট করে চাল বিক্রি করবে তারা দেশের বাজার থেকে কিনতে পারবে না। তারা ৬৭ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে আমদানি করে প্যাকেট করবে। এটা আলোচনা চলছে। মিল মালিকরা নিজস্ব প্রডাকশন বিক্রি করতে পারবে। তিনি জানান, নিজস্ব মিল থাকলেও সে তার লাইসেন্সে যে মজুদের বিধান আছে এর বাইরে মজুদ করতে পারবে না। মজুদদারদের মধ্যে দল-নির্দল কোন কিছুই দেখার বিষয় নেই। কারণ মজুদদাররাই একটি ভিন্ন দল। আমি তো নির্দেশ দিয়েছি ১৯৭৪ এর স্পেশাল পাওয়ার এ্যাক্টে মামলা করতে। সেখানে আমাদের ডিসি সাহেবরা একটু ভয় পান। আমি বলেছি এই এ্যাক্টেই মামলা করেন। এদিকে সারাদেশ থেকে জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, নওগাঁ, নাটোর, সিলেট, আদমদীঘি, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, টাঙ্গাইল ও বগুড়ার ধনুটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের চালের মিল ও পাইকারি বাজারগুলোতে অভিযান চালিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ওই সময় অবৈধভাবে চাল মজুদের দায়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া অভিযানের মুখে অনেক ব্যবসায়ী পালিয়ে চলে গেছেন। নাটোরের সিংড়ায় তিন গুদামে অভিযান চালিয়ে প্রায় এক হাজার টন ধান অবৈধভাবে মজুদ অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ অপরাধে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং কুষ্টিয়ার চালের মোকামে ধান-চালের মজুদ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে একাধিক দল মাঠে কাজ করছে। কোন অসঙ্গতি পেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী। এছাড়া বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ ও অবৈধভাবে মজুদ ঠৈকাতে রাজধানীর কাওরানবাজারে অভিযান চালাচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আভিযানিক টিম। অভিযানের খবর পেয়ে চাল ব্যবসায়ীদের অনেকে দোকানপাট ফেলে পালিয়েছেন। অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মর্জিনা আক্তার জানান, কাওরানবাজারে বিভিন্ন চালের আড়তে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সে গরমিল পাওয়া গেছে। গরমিল রয়েছে চালের মজুদেও। এছাড়া রাজধানীর বাবুবাজার এলাকায় চালের আড়তে অভিযান চালিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ সময় চাল মজুদকারী বিভিন্ন গুদামে লাইসেন্স আছে কি নাÑ তা পরীক্ষা করা হয়।