১৮ মাস বেতন না পাওয়ায় সিলেটে পলিটেকনিক শিক্ষকদের মানববন্ধন

7
৭৭৭ জন শিক্ষকের চাকরি রাজস্বখাতে দ্রুত স্থানান্তর ও ১৮ মাসের বকেয়া বেতন ভাতাদির দাবিতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন (বিপিটিএফ) এবং আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, কারিগরি শাখা, বাংলাদেশের উদ্যোগে মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত সার-সংক্ষেপের আলোকে স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট শীর্ষক সমাপ্ত প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে প্রক্রিয়াধীন ৭৭৭ জন শিক্ষকের চাকরি রাজস্বখাতে দ্রুত স্থানান্তর ও ১৮ মাসের বকেয়া বেতন ভাতাদির দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শহীদ মিনার প্রঙ্গনে বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন (বিপিটিএফ) এবং আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, কারিগরি শাখা, বাংলাদেশের উদ্যোগে এই মানবন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধন থেকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রুপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কারিগরি শিক্ষা আজ একটি অন্যতম হাতিয়ার। কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ, মানোন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের কারিগরি মহাপরিকল্পনা অত্যন্ত সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। বিগত ১০ বছরে কারিগরি শিক্ষার হার ১% হতে ১৭% -এ উন্নতি হয়েছে, দেশ-বিদেশের সকল জরিপে দেশের কারিগরি শিক্ষার মানোয়ন্ননের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। ০৯ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষকগণ দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষন গ্রহণ করে আজ দেশের সম্পদে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত অনুশাসনের আলোকে ৩০ জুন ২০১৯ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ প্রকল্পে নিয়োজিত/কর্মরত শিক্ষকদের (৭৮৬ জনকে) সাময়িকভাবে বহাল রেখে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য লিখিত নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রকল্প মেয়াদ শেষে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সরকারের থোক বরাদ্দ খাত হতে ৭৮৬ জন শিক্ষকের বেতন ভাতাদি পরিশোধ করা হয়েছে। ১৮ মে-২০২১ ৭৭৭ জন শিক্ষকের চাকরি দ্রুত রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের লক্ষ্যে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী মহোদয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বরাবর ডিও পত্র প্রেরণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় শিক্ষা মন্ত্রীর নেতৃত্বে সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এবং মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এর একান্ত প্রচেষ্টায় দেশের কারিগরি অঙ্গনে এক বৈপ্লবিক নবদিগন্তের সুচনা হয়েছে। নতুন পদ সৃজন, দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করণ, পদোন্নতি, দেশ-বিদেশে ট্রেনিং এবং বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকান্ডে কারিগরি অঙ্গনে আজ উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব খাতে স্থানান্তর প্রক্রিয়া দীর্ঘসুত্রিতার কারণে শিক্ষকদের মনে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
জুলাই-২০২০ হতে ডিসেম্বর-২০২১ পর্যন্ত ১৮ মাস যাবত ৭৭৭ জন শিক্ষক বেতন ভাতাদি না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অর্থ কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ১৮ মাস যাবত বেতন বন্ধ থাকায়, আমাদের কয়েকজন সহকর্মী টাকার অভাবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করাতে পেরে মারা গেছেন, আরো বহু সহকর্মী মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে। বিগত বেতন ভাতাদি সঠিক সময়ে প্রাপ্ত হলে, হয়ত এই পরিস্থিতিগুলো এড়ানো যেতো। এমতবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ও ৭৭৭ জন শিক্ষকের পরিবারের কথা বিবেচনায় নিয়ে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমাদের দীর্ঘদিনের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের অবসানের জন্য দ্রুত বকেয়া বেতন ভাতাদি প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কারিগরি শাখার সদস্য সৌমিত্র দাসের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতি সিলেট পলিটেকনিক শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুল আলম, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন সিলেট পলিটেকনিক শাখার সভাপতি মো. শরাফত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক কাউছার আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বাস্তবায়ন কমিটি সিলেট পলিটেকনিক শাখার আহ্বায়ক কাজল দেবনাথ, ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ইন্সট্রাকক্টর মরিয়ম মহল মনি, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কারিগরি শাখার সদস্য সৌমিত্র দাস।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এস এম ফারুক হোসেন, মো. হাবিবুর রহমান, সঞ্জীব নারায়ন রায়, মো. আব্দুর রহিম, রাশেদুল হক চৌধুরী, বাবুল মিয়া, রাশেদুল হক চৌধুরী, আরিফুল ইসলাম, বশির আলম, আব্দুল্লাহ ইবনে নাজিম, সঞ্জয় বণিক সহ অন্যান্য শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি