বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী

8

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বিজয়ের গৌরবোজ্জ্বল ৫০ বছর এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ এবারে একই সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে জাঁকজমকের সঙ্গে মহাআড়ম্বরে। করোনা অতিমারীর কারণে গত দু’বছরে যা হতে পারেনি। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সম্মিলিত বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথিবর্গ। প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী দেশ ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডাঃ লোটে শেরিংয়ের বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের গত ৫০ বছরের উন্নয়ন-অগ্রগতির বর্ণিল শোভাযাত্রাও অনুষ্ঠিত হবে এবারের আয়োজনে। এই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে সোনার বাংলা গড়ে তোলার শপথবাক্য পাঠ করাবেন।
১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। ৫০ বছর আগে এই দিনে স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে প্রচারিত হয়েছিল নয় মাসের যুদ্ধ শেষের গান। সমবেত কণ্ঠে শব্দসৈনিকরা গেয়ে উঠেছিলেন, ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই, বাংলার ঘরে ঘরে, মুক্তির আলো ওই জ্বলছে।’ সেই আলোর ঝর্ণাধারায় প্রজ্বলিত হয়ে উঠেছিল বিশ্ব মানচিত্রে এক নতুন দেশÑবাংলাদেশ। গৌরবের, আনন্দের, অহঙ্কারের, আত্মমর্যাদার ও আত্মোপলব্ধির দিন আজ। বিজয়ের গৌরবে গৌরবান্বিত হওয়ার দিন।
দেদীপ্যমান, প্রসন্ন, আলোকিত বিজয় দিবস মানেই বাঙালীর নবজন্ম। বর্বর পাকিস্তানী হানাদার সেনাবাহিনী আর তাদের এ দেশীয় দোসর শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করার দিন। জাতি হিসেবে বাঙালীর সহস্র বছরের সাধনা শেষে অর্জিত চূড়ান্ত বিজয়ের দিন। বিশ্বে স্বাধীন জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার দিন। বিজয়ের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগ ও সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। যে রাষ্ট্রের মর্মবাণী হবে গণতন্ত্র। যে রাষ্ট্রে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মুক্তির আস্বাদ নিয়ে বসবাস করবে। জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ, ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ ও মাদককে প্রতিহত করে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের বুকে। ওইসব অপশক্তিকে সমূলে উৎখাত করে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির স্বর্ণশিখরে আরোহণ করাই বর্তমান বাংলাদেশের লক্ষ্য।