ঘটনাস্থলে না থেকেও আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন চেয়ারম্যান!

11

বিশ^নাথ থেকে সংবাদদাতা :
চলতি বছরের ২৮ মার্চ আমতৈল পিছেরমুখে মারামারির ঘটনাস্থলে না থেকেও মামলার আসামি হতে হয়েছে। অযথা হয়রানির শিকার হওয়ার পাশাপাশি বুড়ো বয়সে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে স্থানীয় একটি কুচক্রি মহল বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়ারানি করাচ্ছে। বাদীর আজন্তে ওই মামলায়ও তাকে শত্রুতা মিটাতে আসামি করা হয়েছে।
এমন অভিযোগ এনে রোববার বিকেলে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ সুপার ও ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আলহাজ¦ আবারক আলী (৬০) নামের এক প্রাক্তন ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের সিঙ্গেরকাছ পশ্চিমগাঁওয়ের মৃত হাজী রাশিদ আলীর ছেলে ও ওই ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়াম্যান। এছাড়াও তিনি সিঙ্গেরকাছ পাবলিক বহুমুখী উচ্চ-বিদ্যালয় ও কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি, সিঙ্গেরকাছ আলিম মাদ্রাসার দাতা সদস্য ও সিঙ্গেরকাছ বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির মোতাওয়াল্লী ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এক সময় তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতিও ছিলেন।
আবারক আলী বলেন, পিছেরমুখে ঘটনারদিন সিঙ্গেরকাছ বাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। কেবল শত্রুতা মিটাতে বাদীর অজান্তেই ওই মামলায় তাকেও আসামি করা হয়। আর এ বিষয়ে ধলিপাড়ার কয়েকজন মুরব্বীর সামনে বাদীর স্বীকারোক্তিমূলক একটি ভিডিও তার নিকট রয়েছে। তাছাড়াও বিষয়টি তদন্ত করা হলে তার আবেদনের সত্যতা পাওয়া যাবে।
তার দাবি, প্রথম জীবনে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এরপর এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি এম. ইলিয়াস আলীর সঙ্গে কাজ করেছেন। পরবর্তিতে ২০১২ সালে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি বিএনপির রাজনীতি থেকে অব্যাহতিও নিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৮ মার্চ হেফাজতের ডাকা হরতাল চলাকালে ট্রাক আটকানো নিয়ে বিশ^নাথ-লামাকাজি সড়কের আমতৈল পিছেরমুখে ‘আমতৈল ও ধলিপাড়া’ গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে দুই গ্রামের ৩০ জনসহ ৫ পুলিশ সদস্যও আহত হন। এ ঘটনার প্রায় একমাস পর গত ২৯ এপ্রিল ৬২জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন ধলিপাড়ার নাজমুল ইসলাম শিপু, (মামলা নং ২৯)। মামলায় আরও ২৫০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলার বাদী নাজমুল ইসলাম শিপু এ প্রতিবেদককে বলেন, আবারক আলী চেয়ারম্যান ওইদিন ঘটনাস্থলে ছিলেন না, তিনি তাকে আসামিও করেননি! এজাহার পাওয়ার পরে তিনি জানতে পারেন তাকেও (আবারক) আসামি করা হয়েছে।
মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে জানিয়ে বিশ^নাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান ও মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আপ্তাব উজ্জামান রিগ্যান এ প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলে কাউকেই অযথা হয়রানি করা হবে না।
ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।