বিচারহীনতা সংস্কৃতির অবসান চাই

4

দেশে শিশুসহ নারী ধর্ষণের মাত্রা দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা নারী-শিশু অধিকারের উপর আঘাত হানার সামিল। ফলে প্রতিনিয়ত নারী-শিশু, কিশোরী-যুবতিসহ বিভিন্ন বয়সীদেরকে নিপীড়ন, নির্যাতন, হয়রানির মাত্রা বেড়েই চলেছে। এসব অপকর্ম রোধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কার্যকারি ভাবে বলবৎ না থাকায় এদের অপতৎপরতা রোধ হচ্ছে না।
সম্প্রতি দেশে শিশুর প্রতি নির্মমতার মাত্রা বেড়েছে, যেখানে-সেখানে বিভিন্ন বয়সের নারী ধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে। এসব ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে তড়িৎ বিচার না হওয়ায় এবং ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে বিচারহীনতার কারণে নির্যাতিত হচ্ছে নারী সমাজ। শিশু অধিকার নিয়ে জাতীয় নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের এক পরিসংখ্যানে ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। সংগঠনের পরিসংখ্যান মতে ২০১২ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত মাত্র সাত বছরের শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ১২ গুণ। একেই ভাবে হত্যা বেড়েছে আড়াই গুণ, অপহরণ তিন গুণ, আত্মহত্যা তিন গুণ। নারী-শিশু অধিকার নিয়ে যে সব সংস্থা গুলো কাজ করছে, তাদের মতে; ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ থেকে শুরু করে মামলার তদন্ত প্রক্রিয়ায় পুলিশের অদক্ষতা, আন্তরিকতাহীনতা, দুনীতিপ্রবণতা, ধর্ষকের রাজনৈতিক পরিচয়, প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ, ছাড়াও বিভিন্ন কারণে অধিকাংশ ধর্ষণ মামলায় আদালতে অপরাধ প্রমাণ করা হয় না বলে ধর্ষণ মামলার আসামীরা ছাড়া পেয়ে যায়। বিশেষত; ধর্ষণের শিকার অধিকাংশ নারী-শিশুদের মধ্যে অনেক হত-দরিদ্র, ক্ষমতাহীন, প্রভাব-প্রতিপত্তিহীন, আর যদি ধর্ষণের শিকার হন ধনী ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী তাদের তো কোনো কথা নেই।
আমাদের দেশে শিশু-কিশোরদেরকে হত্যা-অত্যাচার, নির্যাতন-নিপীড়ন ও যৌন হয়রানি-বলৎকার ঠেকাতে “জিরো টলারেন্স” নীতি দেখতে চাই। দেশে যে অবস্থায় দুর্বৃত্তরা লাগাম ছাড়া কর্মকান্ড করছে, তা‘ ক্ষমতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে নির্বিচার অপরাধকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের কারনে অপরাধ ও অপকর্ম মাথাচড়া দিয়ে উঠছে।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে; প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, তা‘ রোধে আইনের কঠোর ব্যবস্থা যথাযথভাবে প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ মামলার বিচার যেন বিলম্বিত না হয়, এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের পদক্ষেপ নেয়ার কোনো বিকল্প নেই।