অগ্নিঝরা মার্চ শুরু

11

আর মাত্র কিছুদিন পরই বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি পালন করা হবে। বর্তমান মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বৃহত্তর দল আওয়ামী লীগ দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে দেশ পরিচালনা করছে, সে সুবাদে ৫০ বছরপূর্তি পালনের লক্ষ্যে বিশেষ-বিশেষ অনুষ্ঠান মালার আয়োজন ছাড়াও এবারের মার্চ বিভিন্ন তাৎপর্য নিয়ে দেশবাসী অতি গুরুত্বের সাথে পালন করার উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বাঙালি জাতির জীবনে নানা কারণে অগ্নিঝরা এ মার্চ মাস অন্তর্নিহিত অশেষ শক্তির উৎস হিসাবে কাজ করেছে। এ মার্চ মাস অসংখ্য আন্দোলন-সংগ্রামের উজ্জ্বল সাক্ষী হিসাবে বহে আসছে। এ মার্চ মাসের অনেক ঘটনার প্রতিটি ক্ষণকে স্মরণের মধ্যে দিয়েই নানা আয়োজন করা হয়েছে। তাই স্বাধীনতা প্রেমিক সকল দলমত নির্বিশেষে পালন করবে স্বাধীনতার এবারের সুবর্ণজয়ন্তী।
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা এমনিতে আসেনি, এ স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশ বিভাগের পর পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন করেছে। মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে অনেক রক্তের মধ্যে দিয়ে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সারা বাংলার মানুষ জেগে উঠেছিল, তাই মাতৃভাষাকে তৎকালিন পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষাকে দেশের অন্যতম রাষ্ট্রীয় ভাষা করতে বাধ্য হয়েছিল। ৫২ সালের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ থেকে শুরু হয় নানা অধিকার বাস্তবায়নের লড়াই, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ ‘র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় মহান স্বাধীনতা।
৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ দেন বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এদিন ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে এক জনসমুদ্রে জাতির জনক পাকিস্তানি শাসক-শোষকদেরকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না” “মরতে যখন শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না”। “রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো”। ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম-আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম-স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয়-বাংলা।
৭ মার্চের ভাষণের পর সারা বাংলায় বাঙালিজাতির মধ্যে এক মহা-শক্তির জাগরণ ঘটে। গ্রাম-গঞ্জের মানুষ স্বাধীনতা আদায়ের লক্ষ্যে মিছিল-মিটিং সমাবেশ শুরু করে পাকিস্তানি শাসক-শোষকদের শাসন ব্যবস্থা ভেঙ্গে দেয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ গর্জে উঠে।
তৎকালিন শোষকগোষ্ঠির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত থাকে।