কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আ’লীগের গলার কাঁটা বিদ্রোহীরা, ফুরফুরে বিএনপি

23

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা, আর ফুরফুরে বিএনপি।
আওয়ামী লীগ থেকে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক বর্তমান মেয়র মো. জুয়েল আহমদ নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেও দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি, তিনবারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর মো. আনোয়ার হোসেন ও উপজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি ঠিকাদার মো. হেলাল মিয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন। তবে সম্প্রতি স্বতন্ত্র প্রার্থী এই দুই নেতাকে দল থেকে বহিস্কার করলেও বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচন করছেন তারা।
আওয়ামী ঘরানার শক্তিশালী দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির একক প্রার্থী মো. আবুল হোসেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও দলের আভ্যন্তরীন কোন্দল থাকায় অবস্থান সুবিধাজনক নেই।
আগামী ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে কমলগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১০টি ভোটকেন্দ্রে ব্যালেটে মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৫০৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৯১১ জন, নারী ৬ হাজার ৯৯৪। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩১ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১১ জন লড়াই করছেন। নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী মো: জুয়েল আহমদ (নৌকা), বিএনপি মনোনিত প্রার্থী মো: আবুল হোসেন (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: আনোয়ার হোসেন (নারিকেল গাছ) ও মো: হেলাল মিয়া(জগ) প্রতীক নিয়ে ৪জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো: জুয়েল আহমদ ২০১৫ সালের নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এ বছর আওয়ামী লীগে দুজন বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় বিপাকে পড়েছেন নৌকার প্রার্থী।
অন্যদিকে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী নির্বাচনের মাঠে অনেকটা নীরব দর্শকের ভূমিকায় আর বিএনপির নেতাকর্মীরা আভ্যন্তরীন কোন্দলে জর্জরিত রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি, তিনবারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর মো: আনোয়ার হোসেন ও উপজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি ঠিকাদার মো: হেলাল মিয়া দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা উভয়ে ভোটের মাঠে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ভেতরে ভেতরে দলের অনেক নেতাকর্মীও তাদের পিছনে রয়েছেন।
বিএনপির প্রার্থী মো: আবুল হোসেন বলেন, পৌরসভায় বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। দলীয় ভেদাভেদ ভুলে সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ কাজ করলে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ বিজয় হবে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করছি। তিনবারের পৌর কাউন্সিলর ছিলাম। গত নির্বাচনেও আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এ বছর আমাকে মনোনয়ন দিবেন বলে আশ্বাস দেওয়ায় গত বছর আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি নি। এ বছর দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা চেয়েছেন বলেই মেয়র পদে নির্বাচন করছি।
আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী ঠিকাদার মো. হেলাল মিয়া বলেন, পৌর এলাকার সর্বস্তরের জনগণের চাপে প্রার্থী হয়েছি। দলমত নির্বিশেষে ভোটাররা আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবেন বলে আমার বিশ্বাস।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাচনের সহকারী রিটার্ণিং কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার জানান, ব্যালেটের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১৬ জানুয়ারি পৌরসভার ভোটগ্রহণ হবে। তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছেন। নির্বাচনের পরিবেশও সুষ্ঠুু রয়েছে।