জগন্নাথপুরে রোপা আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি

12
জগন্নাথপুরে ধান শুকানোর কাজ করছেন কৃষাণীরা।

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে এবার রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জমিতে উৎপাদিত বাম্পার ফলন দেখে কৃষক-কৃষাণীর মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। কৃষি অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ হয়েছেন বেজায় খুশি।
এবার জগন্নাথপুর উপজেলার ছোট ছোট হাওরের ৮ হাজার ১৬০ হেক্টর উঁচু জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ করা হয়। ধান রোপণের শুরুতেই বন্যার পানিতে অনেক জমি তলিয়ে যায়। পরে আবার রোপণ করা হয়। এভাবে ৩ দফা বন্যার কবলে পড়ে আমন ধান। এতে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। তবুও হাল ছাড়েননি কৃষি যোদ্ধারা। ছুটে আসেন কৃষি অফিসে। নেয়া হয় পরামর্শ। কিভাবে বন্যা কবলিত জমিতে আবারো ধান রোপণ করা যায়।
এ সময় জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার কৃষকদের সঠিক পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দিয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। নিরাশ কৃষকদের দেখিয়েছেন আশার আলো। সৎ সাহস দিয়ে আবারো জমি আবাদে উৎসাহিত করেছেন কৃষকদের। অল্প দিনের মধ্যে উৎপাদিত উন্নত জাতের ধানের বীজ সহ সরকারি বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহায়তা করেছেন। বীজতলা তৈরি, বীজ তলায় ধানের চারা রোপণ, জমি পরিচর্যা ও জমিতে ধানের চারা রোপণ সহ সব বিষয়ে কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তা ও মাঠ কর্মীরা হাওরে হাওরে গিয়ে তদারকি করেছেন। অবশেষে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় জমিতে উৎপাদিত হয়েছে সোনার ফসল। হার না মানা কৃষকদের কষ্ট হয়েছে স্বার্থক। এতে হেরেছে বন্যা, জিতেছেন কৃষক। বন্যা দুর্যোগ মোকাবেলায় সফল হয়েছেন কৃষকরা। এরপরও অধিকাংশ হাওরে বাম্পার ফলন হলেও কিছু জমিতে বন্যার কারণে ভাল ফলন হয়নি। এর মধ্যে অনেক হাওরে রয়েছে ইঁদুরের যন্ত্রণা।
৩০ নভেম্বর সোমবার দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন হাওর ও বাড়ির আঙ্গিনায় জমিতে আবাদ হওয়া রোপা আমনের বাম্পার ফলন। জমিতে উৎপাদিত পাকা-আধাপাকা ধান বাতাসের তালে তালে দুলছে। ধানের মৌ মৌ গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। গত কয়েক দিন ধরে ধান কাটার ধূম পড়েছে। কৃষকরা নিজে ও শ্রমিকদের দিয়ে জমিতে উৎপাদিত বাম্পার ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে ধান কাটা, মাড়াই করা, মাঠে শুকানো ও গোলায় তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। এদিকে-এবার জগন্নাথপুরে রোপা আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও আনন্দ উল্লাস বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে কৃষকদের মধ্যে অনেকে জানান, এবার জমিতে বাম্পার ধান হওয়ায় আমরা অনেক খুশি হয়েছি। যদিও কিছু জমিতে ভাল ফলন হয়নি। তবে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, এবার জগন্নাথপুর উপজেলায় ৮ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে বাম্পার রোপা আমন হয়েছে। সরকারি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার মেট্রিকটন ধান। তা ছাড়িয়ে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে অধম্য কৃষক ভাইয়েরা জমি আবাদ করায় এ সফলতা এসেছে। জমি আবাদে আমরা কৃষকদের সব ধরণের সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে উৎসাহিত করেছি। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় জমিতে উৎপাদিত বাম্পার ফলন ঘরে তুলছেন কৃষকরা।