পরিবহন শ্রমিক নেতা রিপন খুনের ঘটনা ॥ অটোরিক্সা চালক গ্রেফতার, আদালতে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার পরিকল্পনা ফাঁস

29

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর দক্ষিণ সুরমা বাবনা পয়েন্ট এলাকায় সিলেট বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন রিপন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বরইকান্দি এলাকা থেকে গত মঙ্গলবার রাতে এক সিএনজি অটোরিকশা চালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মো: তারেক আহমদ (২১) মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানার ধলাইপাড়ার মো: আফজল মিয়ার পুত্র। বর্তমানে সে দক্ষিণ সুরমা বরইকান্দি ১নং রোডের সুনামপুর বজলু মিয়ার বাড়ীর বাসিন্দা।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন জানান, গতকাল বুধবার দুপুর ১টার দিকে গ্রেফতারকৃত তারেক আহমদকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমানের আদালতে হাজির করে। এ সময় তারেক ওই আদালতে প্রায় ৩ ঘণ্টা রিপন হত্যার পরিকল্পনারসহ নিজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ফৌজধারী আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দি শেষে পুলিশ আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণ সুরমা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লোকমান আহমদ জানান, অটোরিকশা চালক তারেক গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশের কাছে শ্রমিক নেতা রিপন হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। এরপর তাকে গতকাল বুধবার আদালতে হাজির করলে প্রায় ৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে দায় স্বীকার করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। তিনি জানান, শ্রমিক নেতা রিপনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে হামলাকারীরা। তারেক ছিলো হামলাকারীদের বিশ্বস্ত সহযোগী। রিপনের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেয়ার পাশাপাশি হামলাকারীদেরকে সিএনজি অটোরিক্সা করে আনা নেয়া করতো সে। হত্যা মামলায় পুলিশ তারেকসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। নিহতের স্ত্রী ফারজানা আক্তার তমা বাদী হয়ে গত ১১ জুলাই থানায় যে হত্যা মামলাটি দায়ের করেছিলেন এতে এজহার নামীয় আসামি করা হয় বরইকান্দি এলাকার ১নং রোডের ইজাজুল, রিমু, মুহিবুর রহমান মুন্না, মোস্তফা, মিন্টু, সেবুল, কাইয়ুম, বদরুল ও ইসমাইলকে। এছাড়া অন্যরা হলেন বরাইকান্দিস্থ গাংগু এলাকার নোমান, আইডব্লিউ’র আকবর হোসেন মজুমদার, স্টেশন মাস্টার মতিন ভূইয়া, ওয়ার্কার সুপারভাইজার শহিদুল হক, তিনি বর্তমানে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে কর্মরর।
জবানবন্দীর বরাত দিয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন আরো জানান, অটোরিকশা চালক শ্রমিক নেতার অবস্থান সম্পর্কে হামলাকারীদের তথ্য দেয়। সেই সাথে হত্যাকাণ্ডের পর যাদেরকে সিএনজি অটোরিকশা করে নিয়ে যায় সেসময় কে কিভাবে হামলা করেছে সে বিষয়টিও আদালতকে জানায় তারেক। এসময় তারেক আদালতকে জানিয়েছে সে তার অটোরিকশা করে ৬জনকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। হামলাকারীদেরকে সে বরইকান্দি এলাকা থেকে নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই রাত সোয়া ১০ টার দিতে নগরীর দক্ষিণ সুরমা থানার ভাবনা পয়েন্টে ভাবনা রেষ্টুরেন্টের সামনে পূর্ব শক্রতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দুষ্কৃতিকারীরা ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমন করে সিলেট বিভাগীয় ট্যাংক লরির শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো: ইকবাল হোসেন রিপনের উপর। এ সময় হামলাকারীরা তাকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে সিএনজি অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেল যোগে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত শ্রমিক নেতা মো: ইকবাল হোসেন রিপনকে উদ্ধার করে লোকজন চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়া গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন।