সংক্ষিপ্ত কর্মসূচিতে রথযাত্রা উৎসব পালিত, উল্টো রথযাত্রা ১ জুলাই

48
সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্যদিয়ে রথযাত্রা পালিত হয়।

স্টাফ রিপোর্টার :
মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব জনসমাগম না করে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর ইসকন মন্দিরে বিভিন্ন মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় রথযাত্রার মূল অনুষ্ঠান যাত্রা। পরে মন্দির অভ্যন্তরেই আনুষ্ঠানিকভাবে হরিনাম সংকীর্তন সহকারে ভক্তরা রথ টেনে নেয়। আগামী ১ জুলাই বুধবার উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিবছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা উদযাপিত হয়। প্রতিবছর উৎসবমুখর পরিবেশে ও ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় এই উৎসব। কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাসের কারনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হলো এই রথযাত্রা উৎসব।
এ উপলক্ষে ইসকন সিলেট মন্দিরে হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি, মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রার্থনা ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, আরতি কীর্তনসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জানেন, ভগবান জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের বিগ্রহ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জনসমাগম বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছিলো বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। তারই ধারাবাহিকতা বজায় থাকল জগন্নাথের রথযাত্রার ক্ষেত্রে। সিলেটের প্রতিটি মন্দিরেই মানা হয় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কর্তৃক দেয়া নির্দেশনা। বিকেলে নগরীর লালাদিঘিরপাড়স্থ মন্দিরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রাকে রথে চাপিয়ে মন্দিরের এক পাশ থেকে রথ টান শুরু করে অন্য পাশে গিয়ে থামে রথ। আর সেখানেই হয় রথযাত্রার নিয়ম পালন।
এ ব্যাপারে লালাদীঘিরপার মণিপুরী পাড়া মন্দিরের পুরোহিত রাম গোপাল শর্মা বলেন, করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে আগেই রথযাত্রা বন্ধ করার নির্দেশ এসেছিলো। সেই নির্দেশের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে গতকাল মঙ্গলবার মন্দির প্রাঙ্গণেই রথযাত্রার বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর পর রীতি মেনে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রাকে সুদৃশ্য রথের চাপানো হয়। নিয়ম মেনে মন্দির চত্বরেই গড়ানো হয় রথের চাকা। মন্দিরের এক পাশ থেকে শুরু করে অন্য পাশে গিয়ে রথ থেমে যায়। এরপর জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা ভক্তদের কোলে চেপে মূল মন্দিরে ফিরে এসেছেন।