কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপছে দেশ বইছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ

14

কাজিরবাজার ডেস্ক :
শীতে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে অনেক গুণ। তীব্র আকার ধারণ করার পর থেকে তারা ঠিকমতো কাজে যেতে পারছে না। আবার শীত নিবারণে তাদের পর্যাপ্ত গরম কাপড়ও নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেটুকু কম্বল বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা সবার কপালে জুটছে না। আবার শীতের তীব্রতা এতবেড়েছে যে সাধারণ কম্বলে শীত নিবারণও কষ্টসাধ্য এখন। দিনের বেলায় সূর্যের আলো নেই। এ অবস্থায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টাই তাদের একমাত্র ব্যবস্থা। এদিকে আগুন পোহাতে গিয়ে ঠাকুরগাঁও ও রংপুরে চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার খুলনা বরিশাল চট্টগ্রাম গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে শীতের মাত্রা বেড়েছে। উত্তরের জেলা পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জায়গায় তীব্র শৈতপ্রবাহ শুরু হয়েছে। তাপমাত্রা আরও কমে বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন দাঁড়িয়েছে তেঁতুলিয়ায় ৫.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে ওই অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র শৈতপ্রবাহ শুরু হয়েছে। অন্য এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে। বৃষ্টিতে তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সূর্যের দেখা মিললেও তা প্রায় সময় মেঘে ঢাকা ছিল। রাজধানীতে সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। এর ওপর সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শুরু হয় বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ। এ কারণে চাদনের ছায়ায় সূর্য অনেকক্ষণ ঢেকে ছিল। সব মিলিয়ে সূর্যের যে তাপ তা ছিল না বললেই চলে। আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ঢাকা ছাড়াও ফরিদপুর, যশোর খুলনা, সাতক্ষীরা এবং গোপালগঞ্জে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে যশোরে সবচেয়ে বেশি ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, রংপুর বিভাগে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। অন্যান্য এলাকায় যদিও শৈত্যপ্রবাহ নেই। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে দুদিন তাপমাত্রা কম, আগামীকাল থেকে তাপমাত্রা আরও কমে যাবে। শীতের তীব্রতা আর বাড়বে। এই সময়ের মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ আরও অধিক এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে। তিনি জানান এই সময়ে শৈত্যপ্রবাহ মাঝারি রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আজও খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের দু’এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি/গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। ময়মনসিংহ, রাজশাহী, নওগাঁ ও সিরাজগঞ্জ অঞ্চলসহ রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলের রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং অন্যত্র তা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। এদিকে বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় তাপমাত্রা নেমেছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রীতে। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা যে পর্যায়ে নেমেছে, তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে ধরা হয়। শীতের মধ্যে ঘন কুয়াশায় ফেরি পারাপারে সমস্যা দেখা বুধবার মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত। শীতজনিত রোগ নিয়ে দেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ চলছে এক সপ্তাহ ধরেই।