নিয়মভাঙ্গা মেডিক্যাল কলেজগুলো ছাত্র ভর্তির সুযোগ পাবে না

20

কাজিরবাজার ডেস্ক :
নিয়ম ভঙ্গকারী বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজগুলো আর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর সুযোগ পাবে না । নিয়ম ভঙ্গের কারণে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কলেজকে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে সতর্ক করে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে বেসরকারী মেডিক্যালে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। বিতর্কিত বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সূত্র জানায়, শর্তপূরণ করতে পারেনি এমন মেডিক্যাল কলেজে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির নিয়ম মানছে না অনেক বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ। বিদেশী কোটায় গোপনে উচ্চ হারে ফি নিয়ে দেশী শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর পাশাপাশি নির্ধারিত আসনের অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে অনেক মেডিক্যাল কলেজ। গত বছর ভর্তি নীতিমালা ভঙ্গ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া নির্ধারিত আসনে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করায় ১২ মেডিক্যাল কলেজকে জরিমানা গুনতে হয়েছে।
সূত্র মতে, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজে ৪০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ ছিল। এতে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে বিদেশী কোটা ছিল ২৫ শতাংশ। ওই সময়ও ৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। হাতেগোনা কয়েকটি মেডিক্যালে ১৫-২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল। এরপরও প্রতিবছর বেসরকারী মেডেক্যালে বিদেশী কোটা ৫-১০ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়। গত বছরে আরও ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষেও ৭ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, মোট আসনের ৫০ শতাংশ বিদেশী কোটার জন্য বরাদ্দ দেয়ায় বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজগুলোয় দেশী শিক্ষার্থীদের জন্য আগের তুলনায় কয়েকগুণ আসন কমে যাচ্ছে। তাদের জন্য বরাদ্দ ৫০ শতাংশ আসন থেকে আবার বিভিন্ন কোটায় বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকেঅ কলেজে উচ্চ ভর্তি ফি আদায়ের কারণে হতে পারে না অনেক গরিব মেধাবী শিক্ষার্থী। নানা মারপ্যাঁচে পড়ে ভর্তিযুদ্ধ থেকে ছিটকে পড়ে অনেক দেশী মেধাবী শিক্ষার্থী। এমনিতেই ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর পেয়েও বেসরকারী কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হতে পারেন হাজার হাজার ভর্তিযোগ্য প্রার্থী।
দেশের অধিকাংশ বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ নানা কারণে প্রশ্নবিদ্ধ! অনুমোদনের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া শর্তসমূহ পরবর্তীতে আর মেনে চলে না অনেক কলেজ। অনুমোদন আছে, হাসপাতাল নেই-এমন প্রতিষ্ঠানের সমস্যাও কম নয়। নেই শিক্ষার্থীদের প্র্যাকটিক্যাল কোর্সের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা উপকরণ। চলছে ভাড়াটে ক্যাম্পাস ও শিক্ষকে। শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য পাওয়া যায় না পর্যাপ্তসংখ্যক রোগী। নেয়া হয় উচ্চ ভর্তি ফি। কলেজ কর্তৃপক্ষের ইচ্ছে মতো সব কিছু চলে। সরকারী নিয়ন্ত্রণ নেই। ডাক্তারী ডিগ্রী পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর। বাইরে থেকে হস্তক্ষেপের খুব বেশি সুযোগ নেই। দেশের চলমান কিছুসংখ্যক বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজের এমন চিত্র তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য নতুন মেডিক্যাল কলেজ অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ তদন্ত করে দেখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ। আর বিএমডিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি অভিন্ন মূল্যায়ন কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।