মোবাইল কোর্টে সাজাপ্রাপ্ত শতাধিক শিশুকে মুক্তির নির্দেশ

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
মোবাইল কোর্টে (ভ্রাম্যমান আদালত) সাজা নিয়ে যশোর ও টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ১২ বছরের কমবয়সী শিশুদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আর ১৩ থেকে ১৮ বছরের শিশুদের দেয়া হয়েছে ছয় মাসের জামিন। সংশ্লিষ্ট শিশু আদালতে সন্তুষ্টি সাপেক্ষে তাদেরকেও মুক্তি দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে মোবাইল কোর্ট যেসব মামলায় শিশুদের দন্ড দিয়েছে, তার প্রতিটি নথি আলাদাভাবে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একটি দৈনিক আইনে মানা, তবু ১২১ শিশুর দন্ড শিরোনামের প্রতিবেদনটি দেখে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মোঃ মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বৃহস্পতিবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।
প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এনে শুনানি করেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী আব্দুল হালিম ও ইসরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শিশুদের দেয়া দন্ড ও আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র, আইন, জনপ্রশাসন, সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব, র‌্যাবের মহাপরিচালক, টঙ্গী ও যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক, সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক, র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম, র‌্যাব-৩ টিকাটুলীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আক্তারুজ্জামান, র‌্যাব-৪ মিরপুর-১ এর আইন কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৩ মে থেকে ১০ আগষ্ট পর্যন্ত র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালতে ১২১ শিশুকে দন্ড দেয়া হয়েছে; যাদের রাখা হয়েছে টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে। এদের মধ্যে ১৭ বছর বয়সী আছে ২৮ জন। এছাড়া ২৬ জনের বয়স ১৬ বছর, ২০ জনের বয়স ১৫ বছর, ১৬ জনের বয়স ১৪ বছর, ১১ জনের বয়স ১২ বছর। আর সাতজনের বয়স ১৩। বাকি ১২ জনের বয়স আট থেকে ১১ বছর। একজনের বয়স উল্লেখ নেই। ২০১৩ সালের শিশু আইনে বলা হয়েছে, ‘বিদ্যমান অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, অনুর্ধ ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সকল ব্যক্তি শিশু হিসেবে গণ্য হইবে। আর ১৬ ধারায় বলা হয়েছে, (১) আইনের সহিত সংঘাত জড়িত শিশু কর্তৃক সংঘটিত যে কোন অপরাধের বিচার করিবার জন্য, প্রত্যেক জেলা সদরে শিশু-আদালত নামে এক বা একাধিক আদালত থাকিবে।