দু’দেশের সহযোগিতা জোরদার হোক

17

ভারতের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর ঢাকা সফর করে গেলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তাঁর এই প্রথম ঢাকা সফর নিঃসন্দেহে গুরুত্ব বহন করে। আজকের দিনে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্কের কোনো বিকল্প নেই। তিন দিকে সীমান্ত থাকা ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও প্রধান প্রতিবেশী। স্বাভাবিকভাবেই তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক আরো বেশি জরুরি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ঢাকা সফর তাই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই বিবেচনা করা যায়। গত ৩১ মে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা প্রথম সৌজন্য সফর হলেও সোমবার রাতে ঢাকায় নেমেই জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ককে উচ্চতর পর্যায়ে নিতে’ অমীমাংসিত সব বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, তাঁর সফর অত্যন্ত উষ্ণ। খুব ভালো শুরু এবং অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। কারণ এটি গুরুত্বপূর্ণ এক সম্পর্ক। এই সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই সফরের উদ্দেশ্য হলো, দুই দেশের অত্যন্ত জোরালো সম্পর্কের কথা জানানো এবং একই সঙ্গে এই শরতে আপনাদের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রস্তুতি নেওয়া। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, “প্রতিবেশীরা কী করতে পারে সে বিষয়ে উদাহরণ হয়ে আছে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অংশীদারি। এটি দুই অংশীদারের একসঙ্গে করা কাজ। দক্ষিণ এশিয়া ও বিশ্বের জন্য এই অংশীদারি সত্যিকারের ‘রোল মডেল’ হওয়া নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী মোদির সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।” খুব স্বাভাবিকভাবেই তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে প্রশ্ন আসে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জন্য পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।’ তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর সমস্যা সমাধানে ভারত বদ্ধপরিকর। সীমান্ত লাগোয়া ভারতীয় রাজ্য আসামে নাগরিকপঞ্জি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স-এনআরসি) নিয়েও বাংলাদেশে উদ্বেগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি না হলেও তিনি বলেন, এটা একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বুধবার সকালে ঢাকা সফর শেষে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ফিরে যাওয়ার পরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে কাশ্মীর বিষয়ে প্রথম সরকারের অবস্থান জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত সরকার কর্তৃক সংবিধানের ৩৭০ বাতিল ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে বাংলাদেশ মনে করে।
অভিন্ন ঐতিহ্যের অধিকারী দুটি দেশের মানুষ হিসেবে আমরা চাই, পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে দেশ দুটির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকুক। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক তথা সব ধরনের যোগাযোগ ও সহযোগিতা ক্রমেই জোরদার হোক। বিদ্যমান সমস্যাগুলো দূর করার ক্ষেত্রে উভয় দেশকেই আরো বেশি আন্তরিক হতে হবে।