অস্থিরতা রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

17

দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘ছেলেধরা গুজব’ ছড়িয়ে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। রাজধানীর বাড্ডায় রেনু নামের এক নারীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার পর বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। কিন্তু তার পরও আতঙ্ক ছড়িয়ে গণপিটুনির ঘটনা থেমে নেই।
ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার কোনোটির পেছনেই অপহরণ চেষ্টার কোনো আলামত পায়নি পুলিশ। মানসিক ভারসাম্যহীন কয়েকজনও গণপিটুনির শিকার হয়েছেন শুধু সন্দেহের কারণে। ‘পদ্মা সেতুর জন্য মানুষের মাথা লাগবে’—এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশেই সন্দেহের ওপর ভর করে গণপিটুনি চলছে। পুলিশ মহাপরিদর্শক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের কয়েকজনের সঙ্গে ‘সরকারবিরোধী রাজনীতির’ যোগাযোগ পেয়েছেন তাঁরা। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬০টি ফেসবুক আইডি, ২৫টি ইউটিউব চ্যানেল ও ১০টি অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য দেন বাংলাদেশের পুলিশপ্রধান। গুজব রটনা ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৩১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১০৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে গত কয়েক দিনে গণপিটুনিতে কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার ঢাকায় ‘জনপ্রশাসন পদক ২০১৯’ প্রদান অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের পরামর্শ দিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে সুযোগসন্ধানীরা যেন ফায়দা লুটতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
এখন কোনো ঘটনাকেই আর বিচ্ছিন্ন বলে ভাবার সুযোগ আছে বলে মনে করা ঠিক হবে না। সবকিছুর পেছনে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অভিপ্রায় থেকে কোনো কোনো মহল দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে, এমন সন্দেহ বোধ হয় অমূলক নয়। সম্ভাব্য সব দিক বিবেচনায় রেখে অস্থিরতা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে আমরা মনে করি।