নির্বিঘেœ ও স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কোন যানজট নেই

44

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কোথাও যানজট নেই। সোমবার নারায়ণগঞ্জ অংশের কোথায় যানজট সৃষ্টি হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। নির্বিঘেœ ও স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারছে ঈদ ঘরমুখো মানুষ। সোমবার পর্যন্ত নির্বিঘেœ ই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটমুক্ত পরিবেশে যানবাহন চলাচল করেছে। ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, এবার ঈদ ঘরমুখো মানুষ ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কোথাও যানজটে পড়েনি। অবশ্য সুফল পেয়েছে দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতি সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ায়। যানজটের সেই চিরচেনারূপ এবার আর নারায়ণগঞ্জের কোথাও সৃষ্টি হয়নি।
সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহানগরীর সাইনবোর্ড, শিমরাইল, সানারপাড়, মৌচাক, সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর ও বন্দরের মদনপুরে সরেজমিন গিয়েও কোন যানজট দেখতে পাওয়া যায়নি। মহাসড়কের স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। মহাসড়কের দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশের সদস্যরা অলস সময় কাটিয়েছে। মহাসড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদেরকে অন্য বারের মতো যানজট নিরসনে কাজ করতেও দেখা যায়নি। কাঁচপুর এলাকার বাসিন্দা আবু তৈয়ব জানান, আমরা বিগত বছরগুলোতে দেখেছি ঈদ ঘরমুখো মানুষ কাঁচপুর, শিমরাইল, মেঘনা, মদনপুর এলাকায় আসলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকত। এবার দেখছি ভিন্ন চিত্র। মহাসড়কে কোন যানজট নেই। স্বাভাবিকভাবেই চলছে যানবাহন। ঈদে ঘরমুখো মানুষের মধ্যে একটা স্বস্তিভাব লক্ষ্য করা গেছে। এর কৃতিত্ব সবই বর্তমান সরকারের। শিমরাইল এলাকার দূরপাল্লার টিকেট কাউন্টারের কর্মচারী আকবর আলী জানান, এবার মহাসড়কে যানজট না থাকায় যাত্রীবাহী বাসগুলো নির্ধারিত সময়ে কাউন্টার স্থলে এসেছে। কোন যাত্রীদের নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রীবাহী বাসের চালক আলেক হোসেন বলেন, রাজধানী ঢাকা থেকে বাসটি ছেড়ে যাত্রী নিয়ে একটানে কাঁচপুর, মেঘনা ও মেঘনা-গোমতি সেতু পার হয়ে দাউদকান্দি আসতে সময় লেগেছে মাত্র ৫০ মিনিট। তিনি বলেন, আগে এই তিনটি সেতু পার হতেই সময় লাগত দুই থেকে তিন ঘণ্টা। কিন্তু এবার তিনটি সেতু ও ওভারপাস খুলে দেয়ায় যানবাহন কোন প্রকার যানজট ছাড়াই চলাচল করতে পারছে। কুমিল্লার যাত্রী বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রতি বছর যানজটে আটকা পড়ে থাকতে হতো। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা যানজটে বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে যেত। কিন্তু এবার মাত্র এক ঘণ্টায় ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বের হয়ে দাউদকান্দি টোলপ্লাজা পার হয়েছি। আশা করছি দেড় ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লা পৌঁছাতে পারব। শিমরাইলের বাসিন্দা আজিজ মিয়া জানান, প্রতিবছর কাঁচপুর সেতু ও মেঘনা সেতুতে যানবাহন উঠার সময় সৃষ্টি হতো যানজট। এ যানজট ১৫-২০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ত। এখন দ্বিতীয় কাঁচপুর ও দ্বিতীয় মেঘনা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ায় যানজট যেন বিলীন হয়ে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার ট্রাফিক পুলিশে ইন্সপেক্টর (টিআই, প্রশাসন) মোল্যা তাসলিম হোসেন জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জে অংশ কোন যানজট নেই। এবারে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় জেলাগুলোর ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। যাত্রীদের কোন যানজটে পড়তে হচ্ছে না। কারণ দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা, ও দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতি সেতু এবং কাঁচপুর সেতুর পূর্বপাশের ওভারপাসটি যানবাহন চলাচালের জন্য খুলে দেয়ায় এবার কোন যানজট নেই। তিনি আরও জানান, টিআই হিসেবে ৩ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জে কর্মরত রয়েছি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এরকম ফ্রি (যানজটমুক্ত) আর কখনও দেখিনি। সাইনবোর্ড এলাকায় কর্মরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) জিয়াউল করীম বলেন, আমি সার্জেন্ট পদে থাকার সময়সহ ৬-৭ বছর নারায়ণগঞ্জে কর্মরত রয়েছি। এবারের মতো এ মহাসড়কের এরকম যানজটমুক্ত পরিবেশ আর দেখিনি।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি কাইয়ুম আলী সরদার জানান, মহাসড়কে ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যাও। হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশ জেলা পুলিশের সদস্যরা মহাসড়কে দায়িত্বপালন করছে। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতি সেতু ও ওভারপাস চালু হওয়ায় এবার এ মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের কোন যানজটে পড়তে হয়নি। সোমবারও হাইওয়ে ছিল যানজটমুক্ত।
সোনারগাঁও থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতি সেতু চালু হওয়ার পর এ মহাসড়কে আর কোন যানজট সৃষ্টি হয়নি। সোমবার সোনারগাঁও এলাকায় যানজটমুক্ত ছিল। যাত্রীরা নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরেছে। রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকায় কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের টিআই রাফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশেও কোন যানজট নেই। সিলেটমুখী যানবাহনগুলো একটানে চলে যাচ্ছে। কোথা আটকে থাকতে হচ্ছে না। ঈদে ঘরমুখো মানুষ এবার যানজটমুক্ত পরিবেশেই বাড়ি ফিরছে। সোমবার ভুলতাসহ আশপাশে কোন যানজট ছিল না।