মোবাইল অপারেটরদের দৌরাত্ম্য

22

মোবাইল ফোন এখন কারো জন্য আর বিলাসিতা নয়, এ যন্ত্রটি সবার জন্যই প্রয়োজনীয়। দেশ-বিদেশে যোগাযোগের পাশাপাশি টাকা-পয়সার লেনদেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা খুদে বার্তায় তথ্য আদান-প্রদান থেকে শুরু করে ছবি তোলা, ভিডিও ধারণ সব কিছুই এই যন্ত্রটির মাধ্যমে করা সম্ভব। সর্বস্তরের মানুষের কাছেই মোবাইল ফোনের গুরুত্ব বেড়েছে। ২০১৮ সাল শেষে দেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ৭০ লাখে। গত বছর নতুন গ্রাহক যোগ হয়েছে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ। দেশে বর্তমানে চারটি মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠান সেবা দিচ্ছে। এই চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানে বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে। মোবাইল ফোনের সহজপ্রাপ্যতার পাশাপাশি মোবাইল সিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। বিটিআরসির নিয়ম অনুযায়ী একজন গ্রাহক ১৫টির বেশি সিম ব্যবহার করতে পারবে না। কিন্তু এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এই সীমার বাইরেও রয়েছে প্রায় সাড়ে ২২ লাখ ফোন। বিটিআরসি এক বছর আগে এই সীমার কথা মোবাইল ফোন অপারেটরদের জানিয়ে দিলেও তারা তা বাস্তবায়ন করেনি। সীমার বাইরে ব্যবহূত এসব সিম থেকে ভুয়া ফেসবুক আইডি, মোবাইল ব্যাংকিং জালিয়াতিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে ধারণা করা হয়। এর বাইরে মোবাইল অপারেটররাও নানা রকম প্যাকেজের নামে যথেচ্ছাচার করে থাকে। তথ্য-প্রযুক্তি সড়কে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চলেছে মোবাইল ফোন অপারেটররা। নীতিমালা উপেক্ষা করছে অপারেটররা। জরিমানা করেও তাদের বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ করা যাচ্ছে না। মোবাইল অপারেটরদের এই দৌরাত্ম্য ও যথেচ্ছাচার বন্ধ করতে না পারলে এই খাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। বিদেশি বিনিয়োগ আছে কিংবা গ্রাহকদের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় বলে কোনো প্রতিষ্ঠান দেশের আইন অমান্য করতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে যথাবিহিত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে আমরা মনে করি।