দেশের প্রথম পায়ে হাঁটা রোবট তৈরী হলো শাবিতে

16
শাবিতে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত রোবট।

মাসুদ আল রাজী শাবি থেকে :
শাজলালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (শাবি) একদল শিক্ষার্থী দেশের প্রথম পায়ে হাঁটা রোবট উদ্ভাবন করেছেন। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ^বিদ্যালয়ের ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে ‘লি’ নামে রোবটটি সবার সামনে উন্মুক্ত করা হয়। সামাজিক রোবট ‘রিবো’ উদ্ভাবনের পর এবার ‘লি’ নামে পায়ে হাঁটা রোবট উদ্ভাবন করে শাবিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে একদল শিক্ষার্থী।
শাবির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রভাষক নওশাদ সজীবের নেতৃত্বে ‘ফ্রাইডে ল্যাব’ নামে পাঁচ জনের একটি টিম এই রোবটটি উদ্ভাবন করেন। এটি দেশের প্রথম পায়ে হাটা রোবট বলে দাবি করছেন উদ্ভাবকবৃন্দ।
রোবট ‘লি’ এর বিষয়ে নওশাদ সজীব জানান, ‘বাংলাদেশে তৈরি হিউমেনয়েড রোবটটি দেখতে মানুষের মত এবং এর উচ্চতা ৪ ফুট ১ ইঞ্চি (১২৬ সেমি)। এ রোবট টির প্রধান বৈশিষ্ট্য এটি মানুষের মত হাটতে পারে, বাংলায় কথা বলতে পারে, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এটির ওজন ৩০ কেজি। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশনের ইনভেশন ফান্ডের ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এ রোবট টি তৈরিতে সময় লেগেছে তিন বছর।’
তিনি আরও জানান, ফ্রাইডে ল্যাবের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আছেন জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। গত ২০ এপ্রিল (শনিবার) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপি রোবটটি উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শাবি’র কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, সিএসই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম প্রমুখ। সে সময় রোবট টি প্রতিমন্ত্রীকে ডান হাত উঁচু করে স্যালুট দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করে এবং হেঁটে দেখায়।
টিমের সদস্য মেহেদী হাসান রুপক বলেন, আইসিটি ডিভিশন থেকে দশ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যদি আমাদেরকে সহযোগিতা করা হয় তাহলে আরও ভালো মানের রোবট তৈরি করতে পারবো। ‘আমিসু’ বিশে^র অন্যতম একটি ইন্টিলিজেন্ট রোবট যেটি ভালোভাবে হাটতে পারে। এটি কিনতে গেলে ২৫ কোটি টাকা খরচ হবে। আমাদেরকে যথেষ্ট সহযোগিতা করা হলে আমরা এমন রোবট তৈরি করতে পারবো।’
আরেক সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শাবিতে তৈরি আগের রোবট ‘রিবো’ এর সাথে বর্তমান ‘লি’ এর পার্থক্য হচ্ছে লি হাটতে পারি। রোবটকে হাটানোর জন্য অনেক দামি মোটর প্রয়োজন। কিন্তু আমরা কম বাজেট পেয়েছি। আরও বাজেট পেলে উন্নত মানের রোবট তৈরি করতে পারবো।’
টিমের অপর সদস্য জিনিয়া সুলতানা জ্যোতি বলেন, ‘রোবটটি বাংলায় যাতে কথা বলতে পারে অর্থাৎ কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার বিষয়টি নিয়ে আমি কাজ করেছি। রোবটটিকে গান, কবিতা ইত্যাদিও শিখানো হয়েছে। সাধারণত বাসা, বাড়ি -অফিসে ব্যবহার করা হয় এমন সব ভাষা লি’কে শিখানো হয়েছে।’