সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ শিবগঞ্জে মণিপুরী পরিবারকে সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করতে হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ

65

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মণিপুরী এক পরিবারকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করতে হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মানিক মিয়া ও তার ভাই সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমানের আজাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী মণিপুরী পরিবারটি। গতকাল সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিবগঞ্জ আদিত্যপাড়ার আল্পনা ১৪ নং বাসার বাসিন্দা বাংলাদেশ মণিপুরী মহিলা সমিতির সভানেত্রী এস রীনা দেবী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শিবগঞ্জ বাজারস্থ কিচেন মার্কেট ও মকবুল টাওয়ারের বিপরীতে রায়নগর মৌজার ৪৪ শতক জমি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি হিসেবে তারা কয়েক শতাব্দী থেকে ভোগদখল করে আসছেন। তার স্বামী অমৃত সিংহের মৃত্যুর হিন্দু আইনে তিনি এই সম্পত্তির মালিক হন। এই জায়গায় ওয়ার্কশপ, বসতঘর, মেয়েদের সেলাই প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট নির্মিত করে তারা ভোগ করে আসছেন। ২০১৬ সালের আজিজুর রহমান মানিকের নেতৃত্বে একদল লোক এই সম্পত্তি দখলে হামলা চালায়। এ সময় কোতোয়ালি থানার পুলিশের তৎপরতায় জমিদখলে তারা ব্যর্থ হয়।
রীনা দেবী বলেন, খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের জন্য ১৯৮৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি জাল দলিলের মাধ্যমে বিনিময় দলিল তৈরি করেছে ওই চক্র। যার নং ১৫৮৬৫। ওই জাল দলিলে প্রথম পক্ষ দেখানো হয়েছে টিলাগড় শাপলাবাগের মৃত আব্দুল আউয়ালের পুত্র আব্দুস সালামকে এবং দ্বিতীয় পক্ষ দেখানো হয়েছে তার স্বামী অমৃত সিংহকে। জাল দলিলে প্রথম পক্ষ দ্বিতীয় পক্ষের শিবগঞ্জের ৪৪ শতক জমি নেন এবং বিনিময়ে দ্বিতীয় পক্ষ অমৃত সিংহকে দক্ষিণগাছ মৌজার বিভিন্ন দাগে ৭৮ শতক জমি দেন।
তিনি বলেন, তার স্বামী কোনো বিনিময় দলিল করেননি এবং কোনো জমিও পাননি। ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর পুলিশ কমিশনার বরাবরে দেয়া ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনারের এক তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় প্রথম পক্ষ আব্দুস সালাম যে সকল জমি বিনিময় দেখিয়েছেন তা তার আত্মীয়দের দখলে রয়েছে। পরবর্তীতে তিনি স্বামী ও শ্বশুরের রেখে যাওয়া দখলী সম্পত্তির স্বত্ব পাওয়ার জন্য স্বত্ব মোকদ্দমা (৫২/০৬) দায়ের করেন। যা বিচারাধীন রয়েছে। ওই দলিলমূলে তারা আরো ছয়টি জাল দলিল তৈরি করে। তিনি বলেন, সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের জন্য এ পর্যন্ত তারা ৮/১০ বার সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় বসতবাড়ির তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে গুলি চালিয়ে মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে এবং তার সন্তানদের আহত করেছে।
তিনি আরো বলেন, সম্পত্তি তাদের নামে নামজারি করানোর জন্য ভূমি অফিসে বারবার আবেদন করে ব্যর্থ হয়েছে। এখন বিভিন্ন নম্বর থেকে মোবাইল ফোনে তাকে প্রাণে মারার ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন নিরীহ নারী হিসেবে সন্তানদের নিয়ে উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রাপ্ত সম্পত্তিতে শান্তিতে বসবাস করতে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।