ভারপ্রাপ্তের ভারে ন্যুয়ে পড়ছে দিরাই কলেজ ॥ ছয় মাসের অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে পাঁচ বছর !

75

একে কুদরত পাশা, সুনামগঞ্জ থেকে :
সুনামগঞ্জের দিরাই ডিগ্রি কলেজটি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ভারে ন্যুয়ে পড়ছে। ছয় মাসের জন্য অধ্যক্ষ নিয়োগ দিলেও চলছে পাঁচ বছর। এনিয়ে অন্তোষ দেখা দিয়েছে কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের মাঝে। বিষয়টি এখন রাজনীতিতে রূপনিচ্ছে। যে কোন মুহূর্তে অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবিতে ছাত্রদল আন্দোলন ঘোষণা করতে পারে।
জানা যায়, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান চৌধুরী অবসরে যান ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে। তখন থেকেই উপাধ্যক্ষ মিহির রঞ্জন দাসকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়। ছয় মাসের জন্য দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি স্থানীয় এমপির আশীর্বাদ নিয়ে আজ পর্যন্ত বহাল আছেন। ফলে শিক্ষক-অধ্যক্ষ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নিচ্ছে। তথ্য সূত্রে জানা যায়, মরহুম সুজাত আহমদ চৌধুরীরর অক্লান্ত পরিশ্রমে ১৯৭৯ সালে এ কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে অনেকেই বিরোধীতা করেছিলেন।
এ ব্যাপারে কলেজের একাধিক শিক্ষক কর্মচারীর সাথে আলাপ করলে তারা ক্ষোভের সাথে জানান, মিহির স্যার অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কলেজে শিক্ষক-অধ্যক্ষ দ্বন্দ্ব লেগে আছে। কলেজের শতাধিক গাছ কাটাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে, তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর কলেজ ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বার বার কলেজে পুলিশ আসতে হযেছে। এমন কি তিনি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য থানায় গিয়েছিলেন, স্যার স্থানীয় এমপির আস্থাভাজন হওয়ায় প্রকাশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে কেউ রাজি নন, কলেজের একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, সরকারী বিধি অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছয় মাসের মধ্যে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার বিধান থাকলেও তিনি বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে পাঁচ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন, এখন শুনা যাচ্ছে তিনি আরো দুই বছর মেয়াদ বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছেন।
এ ব্যাপারে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্য আব্দুর রশিদ বলেন, কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হলেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠজন, রাজনৈতিক ভাবে আমরা অন্য মেরুর হওয়ায় তাঁরা আমাদের মতের কোনো মূল্য দেননা। আমরা নামে মাত্র আছি, ছয় মাসের মধ্যে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও পাঁচ বছরেও আমরা তা দিতে ব্যর্থ হয়েছি। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান চৌধুরী বলেন, আমি ত্রিশ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছি কোনো শিক্ষক দ্বন্দ্ব ছিল না। এখন শুনি কলেজে অধ্যক্ষ-শিক্ষক দ্বন্দ্ব লেগেই আছে, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ আসে কলেজে এটা দুঃখের বিষয়।
অধ্যক্ষ মিহির রঞ্জন দাস বিভিন্ন অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য আমি ছয় বার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছি, নানা আইনি জটিলতার কারনে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি।