মৌলভীবাজারে বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত

2

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মৌলভীবাজারে মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় শহরের মনু সেতুর কাছে চাঁদনীঘাটে মনু নদের পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার এবং সদর উপজেলার শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
মঙ্গলবার সকালে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের হামরকোনা এলাকায় কুশিয়ারার পানি উপচে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জনপদে প্রবেশ করেছে। এ এলাকায় কুশিয়ারার স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নেই। গ্রামীণ সড়কটিই প্রতিরক্ষা বাঁধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নতুন করে ভাঙনের ফলে আশপাশের গ্রামগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাত থেকে মৌলভীবাজারে মনু, কুশিয়ারাসহ জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। মনু নদের পানি মৌলভীবাজার শহরের মনু সেতুর কাছে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ৯ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। একই জায়গায় আজ সকালে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল।
অন্যদিকে সদর উপজেলার শেরপুরে গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় কুশিয়ারা নদীর পানি ছিল ৮ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটার বা বিপৎসীমার নিচে। মঙ্গলবার সকাল নয়টায় সেখানে বিপৎসীমার সাত সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের শেরপুরের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ উপচে পানি ঢুকছে। এর মধ্যে আজ সকালের দিকে হামরকোনা মসজিদের কাছে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে গ্রামের ভেতর পানি প্রবেশ করছে। ধলাই নদের পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জুড়ী নদীর পানি অনেক দিন ধরেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
মঙ্গলবার সকালে খলিলপুর ইউনিয়নের হামরকোনার ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ১৫ থেকে ২০ ফুট জায়গা ভেঙে গেছে। ওই ভাঙা অংশ দিয়ে গ্রামের দিকে পানি ঢুকছে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, পানিপ্রবাহ বন্ধ করা না গেলে হামরকোনা, ব্রাহ্মণগ্রাম ও শেরপুর বাজারের একাংশ প্লাবিত হবে।
পাউবো মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খলিলপুর ইউনিয়নের যেদিকে বাঁধ ভেঙে কুশিয়ারা নদীর পানি গ্রামে ঢুকছে, সে এলাকায় পাউবোর কোনো বাঁধ নেই। একসময় প্রতিরক্ষা বাঁধ হলেও এটি এখন মূলত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একটি গ্রামীণ সড়ক। কুশিয়ারা নদীতে পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠলে বাঁধটির বিভিন্ন স্থান ভেঙে এলাকায় পানি ঢোকে।
পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, কুশিয়ারার পানি বাড়াটা ভয়ের। কুশিয়ারায় পানি বাড়লে মনুর পানি কমবে না। কুশিয়ারা নদীর খলিলপুর এলাকায় পাউবোর স্থায়ী কোনো বেড়িবাঁধ নেই। হামরকোনায় এলজিইডির রাস্তা ভেঙে খলিলপুর ইউনিয়নে পানি ঢুকছে। ভাঙা মেরামতের জন্য বালুভর্তি এক হাজার সিন্থেটিকের বস্তা পাঠিয়েছি।