বানের জল ঘরে ঘরে, ভোগান্তিতে তাহিপুরের লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী

9

 

বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর

বানের জল ঘরে ঘরে, ভোগান্তিতে তাহিপুরের লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী। আবহাওয়া পূর্বাবাস বলছে আরো কয়েকদিন বৃষ্টিপাত থাকবে তাই সহসা ভোগান্তি কমছে না হাওড় উপজেলা তাহিরপুরে বন্যাক্রান্ত শতাধিক গ্রামের বন্যাকবলিত লক্ষাধিক লোকজনের। গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জ জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩০০ মিলিমিটার। সেই সাথে যোগ হয়েছে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল। পাহাড়ি নদী যাদুকাটা দু’তীর উপচে পাহাড়ি ঢল নেমেছে গত ২ দিন ধরে। ঢলের পানি নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয় শনি, মাটিয়ান সহ একাধিক হাওড়ে। গতকাল মঙ্গলবারও অনেক গ্রামের উপর দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি নামছে। অনেকের ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ করছে। অনেকের উঠোন কিংবা বাড়ি ঘরের আঙ্গিনা দিয়ে ঢলের পানি নামছে। কেউ কেউ আগে থেকেই পানির বয়ে ইট পাথর দিয়ে আসবাবপত্র উচু করছেন। গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের ঘর বাড়ি কাচা মাটি থাকার কারনে ঢলের পানিতে স্যাতস্যাতে অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে গত ১৫ দিনের ব্যবধানে দু’দফা ভোগান্তিতে পড়েছেন তাহিরপুর উপজেলার শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক জনগগোষ্ঠী। ইতি মধ্যে পাহাড়ি ঢলের পানিতে যে গ্রামগুলো বন্যাকবলিত হয়েছে তার মধ্যে বালিজুরী, পাতারী, তিওরজারাল, দক্ষিনকুল, মাহতাবপুর, বড়খলা, নোয়াহাট, পিরিজপুর, মেঞ্জারগাও, আনোয়ারপুর, পাতারগাও, সোহালা, ইসলামপুর, মল্লিকপুর, তাহিরপুর সদর, চিকসা, জামালগড়, লক্ষীপুর, ধূতমা, সূর্যেরগাও, রতনশ্রী জঙ্গলবাড়ি, শিবরামপুর, তরং, মাটিয়ান, ধরুন্দ, বড়দল, কাউকান্দি, কামারকন্দি, কুকুরকান্দি, ইউনুছপুর নোয়াগাও, সাহেবনগর, দুমাল, লামাগাও, জামালগড়, ঠাকাঠকিয়া, রসুলপুর সহ শতাধিক গ্রাম রয়েছ।
ইতি মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৯ টি বন্যাশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ইতিমধ্যে ৪৫ টি পরিবারের ৩ শতাধিক লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন। উজান তাহিরপুর শনি হাওড়পার কান্দাপাড়া গ্রামের ফান্ডব বেগম (৪৫) জানান, ১৫ দিন আগেও একাবার পানি ঘরে উঠছে, এইবারও পানি ঘরে উঠছে। এই নিয়া ১৫ দিনে দুইবার ভোগান্তিতে পড়ছি।
তাহিরপুর সদর ইউনিযন পরিষদ সদস্য তুজাম্মিল হক নাসরুম বলেন, গত দু’দিন ধরে তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের অনেক গ্রামে পানি উঠছে। আমি আজ মঙ্গলবারও সকালে আমার ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম ঘুরে দেখেছি অনেকের বাড়িঘরে বন্যার পানি উঠেছে।
বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেযারম্যান আল্বহাজ আজাদ হোসেন বলেন, পাহাড়ি নদী জাদুকাটা দিয়ে যখন ঢল নামে তখন আমার ইউনিয়নের সবগুলো (১০/১৫ টি) গ্রামের উপর দিয়ে কমবেশী পানি প্রবাহিত হয়। গত দু’দিন ধরে ঢলের পানি নামছে আজ মঙ্গলবারও তা অব্যাহত আছে। মেঘালয় বারী বৃষ্টি হলে এলকার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে বলে তার ধারনা। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, এর পূর্বে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। একদিকে পাহাড়ি ঢলের পানি অন্যদিকে সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণের প্রভাবে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। মেঘালয়ে আরোও বৃষ্টি হলে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলেও তিনি জানান।