স্টাফ রিপোর্টার :
পুলিশ চাইলে যে অনেক কিছু করতে পারে, অতীতে যেমন বারবার তার প্রমাণ পাওয়া গেছে, শনিবার ৫ ফেব্রুয়ারি আরেকবার তার প্রমাণ পাওয়া গেলো। মাত্র ১৫ ঘন্টায় একটি ছিনতাই মামলার চার্জশিট দিয়েছে জালালাবাদ থানা পুলিশ। আদালতের নির্দেশে সেই ছিনতাইকারীর ঠিকানা এখন কারাগারে।
পুলিশ এবং অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুররের লহরি দশঘর গ্রামের প্রণব দেবনাথের ছেলে পুলক দেবনাথ। তিনি এসেছিলেন জালালাবাদ থানার উমাইরগাঁওয়ে তার আত্মীয় স্বপন দেবনাথের বাড়ি। রাত সাড়ে ১০টায় বাড়ির সামনের কালভার্টে বসে নিজের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন পুলক। এমন সময় সেখানে হাজির হয় একই গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে শামসুল ইসলাম (১৯)। সে হঠাৎ তার মোবাইলটি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে সে প্রায় পালিয়েই যাচ্ছিল। পুলক তখন কেবল চিৎকার করেই যাচ্ছিলেন। বিষয়টি কানে যায় জালালাবাদ থানার শিবেরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের। তারা দ্রুত ধাওয়া করে শামসুলকে গ্রেফতার করেন। তার হাত থেকে পুলকের মোবাইলটিও উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে পরে পুলক নিজে বাদি হয়ে একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করেন (নং ৩/৫/২/২২)। মামলায় শামসুলকে আসামি করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয় এসআই নিরস্ত্র আসাদুজ্জামানকে। মাত্র ১৫ ঘন্টার মধ্যে তিনি আদালতে অভিযোগপত্র (নং ২৬/০৫/০২/২২) দাখিল করেন। যা সচরাচর দেখা যায় না।
মামলায় চার্জশিট দাখিলের পর আদালতের নির্দেশে শনিবার থেকেই কারাগারে ঠিকানা হয়েছে ছিনতাইকারী শামসুলের। আর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন পুলক ও স্বপন দেবনাথ এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান ও থানা পুলিশ এবং তদন্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাদের এমন তৎপরতায় পুলক পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন। পুলিশের এমন ভূমিকায় অনেকই প্রশংসা করছেন।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের অপর একটি সূত্রের দাবি, আসলে পুলিশ সবসময়ই এমন ধরণের কাজ করে নাগরিক সেবা দিয়ে যেতে চায়। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক সময়ে দীর্ঘ সূত্রিতার সৃষ্টি হয়। আমরা আরও ভালো কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ বলেন, আসলে যেকোন মামলার চার্জশিট ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ দেয়ার আইন। তবে তা অনেক সময় হয়ে উঠেনা নানা আইনী জটিলতায়। যেমন সাক্ষি প্রমাণের প্রভাব, মেডিকেল সার্টিফিকেট পেতে দেরি হওয়া ইত্যাদি। তবে আলোচিত ঘটনায় আমরা সবকিছু অনুকুর থাকায় মাত্র ১৫ ঘন্টার মধ্যে চার্জশিট আদালতে জমা দিতে সক্ষম হই। এ ব্যাপারে আমরা কিন্তু সবসময় খুবই আন্তরিক।